কলকাতা, 20 অক্টোবর : গাঁজা নয় । উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর থেকে শহরে ঢুকেছে ইয়াবা ৷ হাতেনাতে তার প্রমাণ পেয়েছিল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF) । অবশেষে পরদা ফাঁস হল চক্রের । গ্রেপ্তার করা হল দু'জনকে ৷
মণিপুর থেকে এই রাজ্যে ইয়াবা পাচারচক্র । 13 অক্টোবর চিংড়িঘাটা এলাকা থেকে পাকড়াও করা হয়েছিল তিনজনকে । তারা ইয়াবা তুলে দিচ্ছিল উত্তর 24 পরগনার বাসিন্দা দুই যুবকের হাতে । গোয়েন্দাদের তখনই তৈরি হয়েছিল সন্দেহ । চক্রের জাল আরও বড় । ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবার আরও দু'জনকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ।
STF সূত্রে খবর, আগের ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, একটি বিশেষ গাড়িতে করেই পাচার করা হত ইয়াবা । গতকাল দুপুরে ডাফরিন রোডে আটক করা হয় পিছনে নম্বর প্লেটহীন গাড়িটি । সেই গাড়িতে ছিল মণিপুরের আব্বাস খান এবং জিয়াউর রহমান । আব্বাস খান গাড়ি চালাচ্ছিল । গাড়িতে তল্লাশি চালাতে উদ্ধার হয় 50 হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট । ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
সাধারণভাবে থাইল্যান্ড এবং মায়ানমার থেকে আসে পার্টি ড্রাগ ইয়াবা । সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বলছে মায়ানমার থেকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি দিয়ে কলকাতায় আসছে পার্টি ড্রাগ । কখনও তা ব্যবহার করা হচ্ছে এই শহরেই । কখনও আবার তা চলে যাচ্ছে পড়শি দেশ বাংলাদেশে ।
13 অক্টোবর দুপুরে চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ের কাছে সাউথ ক্যানাল রোডে হাত বদল হচ্ছিল মাদক । গোপন সূত্রে খবর পান কলকাতা পুলিশের টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা । হাত বদলের সময়েই হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে । তাদের একজন মণিপুরের বাসিন্দা । নাম মহম্মদ আলি আহমেদ । আলি 60 হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট তুলে দিচ্ছিল বসিরহাটের বাসিন্দা বাকি বিল্লা গাজি এবং স্বরূপনগরের বাসিন্দা আকরামুল গাজির হাতে । যার বাজারমূল্য প্রায় 50 লাখ টাকা । এ রাজ্যের দু'জনই সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন, ওই মাদক চলে যেত বাংলাদেশে । উল্লেখ্য শেষ কয়েক দিনে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ইয়াবা ট্যাবলেট । গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে ইয়াবা পাচার বন্ধে পড়া পদক্ষেপ করেছে বাংলাদেশ প্রশাসন । সেই সূত্রেই উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকছে মাদক । তারপর ঘুরপথে তা যাচ্ছে বাংলাদেশে ।
ইয়াবার উৎপত্তিস্থান থাইল্যান্ড । বাংলাদেশের বহু যুবক এই ট্যাবলেটের নেশায় পড়ে প্রায় সর্বস্বান্ত । কলকাতাতেও ব্যবহার হচ্ছে পার্টি ড্রাগ হিসেবে । পুলিশ জানাচ্ছে, এই ট্যাবলেট মূলত তৈরি করা হয় মেথঅ্যাম্ফিটামিন এবং ক্যাফেইনের মিশ্রণে । ইদানিং নাকি আবার এর সঙ্গে মেশানো হচ্ছে হেরোইন । মূলত এটি ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহার করা হয় । কখনও আবার এটি ব্রাউন সুগার কিংবা হেরোইনে ইনহেল করা হয় । থাইল্যান্ডের পাশাপাশি ইয়াবা ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে মায়ানমারে ।