কলকাতা, 17 সেপ্টেম্বর : রাজ্য সরকারের দেওয়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (Student Credit Card) বা কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের (Kisan Credit Card) প্রেক্ষিতে আবেদনকারীকে ঋণ না দিলে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ শুক্রবার নবান্ন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে ৷ এদিন এই মর্মে রাজ্যের সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Hari Krishna Dwivedi) ৷ সূত্রের খবর, এই চিঠিতে রাজ্যের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যসচিব ৷
আরও পড়ুন : Student Credit Card : জনসংযোগে ঘাটতি, দক্ষিণ দিনাজপুরে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেতে নামমাত্র আবেদন জমা
মুখ্যসচিবের অভিযোগ, রাজ্যের সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও কৃষকরা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এবং কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের প্রেক্ষিতে ঋণের আবেদন করছেন ৷ কিন্তু, ব্যাঙ্কগুলি তাঁদের ফিরিয়ে দিচ্ছে ৷ এমনকী, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ব্যাঙ্কগুলির জন্য যে নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে, তাও তারা মানছে না ৷ এর ফলে বহু দুঃস্থ পড়ুয়া ও অভাবী কৃষক সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ বছরের এই সময়টায় নতুন পাঠক্রমে ভর্তি হওয়ার সময় ৷ কিন্তু ঋণ না পাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারছে না ৷ ব্যাঙ্ক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে রাজ্য সরকারের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁরা ৷ এমন বেশ কিছু অভিযোগ ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাছে জমা পড়েছে ৷ আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, যে সমস্ত ব্যাঙ্ক সরকারি প্রকল্পে সহযোগিতা করবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
এই ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই বিষয়েও এদিনের নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন ৷ উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিতে রাজ্য সরকারের একাধিক অ্য়াকাউন্ট রয়েছে ৷ যার মাধ্যমে মোটা টাকার লেনদেন চলে ৷ সারা বছর এই অ্যাকাউন্টগুলিতে বিশাল অঙ্কের টাকা জমা থাকে ৷ আগামী দিনে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বা কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের প্রেক্ষিতে আবেদনকারীকে ঋণ না দিলে ওই ব্যাঙ্কগুলি থেকে সরকারি সমস্ত অ্য়াকাউন্ট সরিয়ে নেওয়া হবে ৷ অর্থাৎ, নবান্নের বার্তা স্পষ্ট এবং কড়া ৷ ব্যাঙ্ক সাধারণ মানুষকে সরকারি সুবিধা পেতে যদি সহযোগিতা না করে, তাহলে ভবিষ্যতে ওই ব্যাঙ্কগুলিকেই সমস্যায় পড়তে হবে ৷
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : মমতার প্রকল্প নিয়ে আগ্রহ অন্য রাজ্যে
যদিও এই বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে ব্যাঙ্কের কর্মী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ৷ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (SBI) কর্মী সংগঠনের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অশোক মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ঋণ দিতে অস্বীকার করা ব্যাঙ্কের অধিকারের মধ্যে পড়ে ৷ তিনি বলেন, ‘‘অনেক কারণেই ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে অস্বীকার করতে পারে ৷ ব্যাঙ্ক যদি মনে করে, গ্রাহককে দেওয়া ঋণ তামাদি (ঋণের টাকা ফেরত না পাওয়া) হয়ে যেতে পারে, কিংবা ঋণগ্রহিতার কাগজপত্র যদি সঠিক না থাকে, তাহলে ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে অস্বীকার করতে পারে ৷ এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ করা যায় না ৷’’