ETV Bharat / city

State of Environment Report 2021 : পাঁচ বছরে বন্ধ 21 হাজার শিল্পকেন্দ্র, বাংলায় শিল্পের বেহাল দশা রাজ্যের রিপোর্টে - স্টেট অফ এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট, 2021

পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের বেহাল দশা ৷ খোদ রাজ্য সরকারি রিপোর্টেই সামনে এসেছে এমন তথ্য ৷ সম্প্রতি ‘স্টেট অফ এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট, 2021’ প্রকাশ করে রাজ্য সরকার ৷ তাতে জানানো হয়েছে, 2016 থেকে 2021, এই পাঁচ বছরে রাজ্যে বড়, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র মিলিয়ে মোট 21 হাজার 521টি শিল্পকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ যার মধ্যে বৃহৎ শিল্পকেন্দ্র 271টি ৷

west bengal government released State of Environment Report 2021
State of Environment Report 2021 : বাংলায় বেহাল শিল্প, তথ্য প্রকাশ রাজ্য সরকারি রিপোর্টে
author img

By

Published : Nov 1, 2021, 7:19 PM IST

কলকাতা, 1 নভেম্বর : এতদিন কেন্দ্রীয় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যানেই উঠে আসত শিল্পক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের করুণ ছবি ৷ কিন্তু এবার রাজ্যের পরিসংখ্যানই তুলে ধরল বাংলায় শিল্পের বেহাল দশার খতিয়ান ৷ সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পরিবেশ দফতরের তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় ৷ যার পোশাকি নাম ‘স্টেট অফ এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট, 2021’ ৷ সেই রিপোর্টের প্রথম খণ্ডেই রয়েছে এমন বেশ কিছু তথ্য, যা চিন্তা বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট ৷ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, 2016 থেকে 2021, এই পাঁচ বছরে রাজ্যে বড়, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র মিলিয়ে মোট 21 হাজার 521টি শিল্পকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ যার মধ্যে বৃহৎ শিল্পকেন্দ্রের সংখ্যা 271 ৷

আরও পড়ুন : Bengal Industry: রাজ্যের শিল্প করিডরে ₹43,000 কোটি বিনিয়োগের আশা

রাজ্য সরকারের এই রিপোর্ট অনুযায়ী, 2016 সালে পরিবেশ দফতর অনুমোদিত চালু শিল্পের সংখ্যা ছিল 60 হাজার 980 ৷ 2021 সালে সেই সংখ্যাটাই কমে হয় 39 হাজার 359 ৷ সেই একই রিপোর্ট অনুযায়ী, 2016 সালে পরিবেশ দফতরের অনুমোদিত চালু বৃহৎ শিল্পের সংখ্যা 1 হাজার 337 ৷ 2021 সালে সেই সংখ্যাটাই কমে হয়েছে 1 হাজার 66 ৷ রাজ্যের যে জেলাগুলিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পের সংখ্যা সব থেকে বেশি, সেগুলি হল দক্ষিণ 24 পরগনা, উত্তর 24 পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ এবং জলপাইগুড়ি ৷

প্রসঙ্গত, 2016 থেকে 2021, এই পাঁচ বছরের বেশিরভাগ সময়টাই রাজ্যের অর্থ দফতরের পাশাপাশি শিল্প দফতরও সামলেছেন মন্ত্রী অমিত মিত্র ৷ তবে স্বাস্থ্যের কারণে একুশের নির্বাচন লড়েননি তিনি ৷ বর্তমানে শিল্প দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ৷ এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা দলের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘কর্মসংস্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক লক্ষ্য ৷ এই লক্ষ্য পূরণে লাগাতার কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার ৷ তবে করোনা আবহে টানা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের অর্থনীতিই কমবেশি ধাক্কা খেয়েছে ৷ কিন্তু, এই রাজ্যের অর্থনীতি স্থিতিশীল ৷ এখানে যে সরকারি তথ্য প্রকাশের কথা বলা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত যেকোনও প্রশ্নের জবাব সরকারের তরফেই দেওয়া হবে ৷ তবে দলের তরফ থেকে বলতে পারি, রাজ্য সরকার কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে লাগাতার কাজ করে চলেছে ৷ আর সেই লক্ষ্য পূরণে অনেকটাই সফল মা মাটি মানুষের সরকার ৷’’

অন্যদিকে, বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই কথাটাই তো এত দিন ধরে আমরা বলেছি ৷ এই সরকারের আমলে শিল্প থেকে কর্মসংস্থান, সবকিছুই তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ এরা মুখে জনকল্যাণের কথা বলে ৷ কিন্তু এই সরকারের কথা এবং কাজের মধ্য়ে কোনও মিল নেই ৷ সেই কারণেই শিল্প থেকে কর্মসংস্থান, সবকিছুরই এমন দৈন্যদশা ৷’’

সিপিএম যুবনেতা সায়নদীপ মিত্রের মতে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এবং বাস্তবের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, তা রাজ্য সরকারের এই রিপোর্টেই প্রমাণিত ৷ এই সরকার যে বেকারদের সঙ্গে ধাপ্পাবাজি করে চলছে, গত 10 বছর ধরে যে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, সেই সত্যকেই সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য সরকারের এই রিপোর্ট ৷ যত দিন যাবে, এমন অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে চলে আসবে ৷’’

আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : শিল্প সম্মেলনে বিনিয়োগ নিয়ে ফের সরব রাজ্যপাল, টুইট খোঁচা মহুয়ার

প্রাক্তন সাংবাদিক এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ শান্তনু সান্যালের মতে, এই পরিসংখ্যানে অবাক হবার কিছু নেই ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাম জমানা হোক বা তৃণমূলের শাসন, দু’টি ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশ শিল্পবান্ধব ছিল না ৷ এখন তো আইনশৃঙ্খলার হাল আরও খারাপ হয়েছে ৷ এছাড়া, আরও একটি বিষয় রয়েছে ৷ বড় শিল্প স্থাপিত হলে তবেই তার হাত ধরে একের পর ছোট ও অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে ৷ কিন্তু, ইদানীংকালে পশ্চিমবঙ্গে কোনও বড় শিল্প স্থাপিত হয়নি ৷ ফলে ছোট শিল্পগুলিরও উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷’’

কলকাতা, 1 নভেম্বর : এতদিন কেন্দ্রীয় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যানেই উঠে আসত শিল্পক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের করুণ ছবি ৷ কিন্তু এবার রাজ্যের পরিসংখ্যানই তুলে ধরল বাংলায় শিল্পের বেহাল দশার খতিয়ান ৷ সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পরিবেশ দফতরের তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় ৷ যার পোশাকি নাম ‘স্টেট অফ এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট, 2021’ ৷ সেই রিপোর্টের প্রথম খণ্ডেই রয়েছে এমন বেশ কিছু তথ্য, যা চিন্তা বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট ৷ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, 2016 থেকে 2021, এই পাঁচ বছরে রাজ্যে বড়, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র মিলিয়ে মোট 21 হাজার 521টি শিল্পকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ যার মধ্যে বৃহৎ শিল্পকেন্দ্রের সংখ্যা 271 ৷

আরও পড়ুন : Bengal Industry: রাজ্যের শিল্প করিডরে ₹43,000 কোটি বিনিয়োগের আশা

রাজ্য সরকারের এই রিপোর্ট অনুযায়ী, 2016 সালে পরিবেশ দফতর অনুমোদিত চালু শিল্পের সংখ্যা ছিল 60 হাজার 980 ৷ 2021 সালে সেই সংখ্যাটাই কমে হয় 39 হাজার 359 ৷ সেই একই রিপোর্ট অনুযায়ী, 2016 সালে পরিবেশ দফতরের অনুমোদিত চালু বৃহৎ শিল্পের সংখ্যা 1 হাজার 337 ৷ 2021 সালে সেই সংখ্যাটাই কমে হয়েছে 1 হাজার 66 ৷ রাজ্যের যে জেলাগুলিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পের সংখ্যা সব থেকে বেশি, সেগুলি হল দক্ষিণ 24 পরগনা, উত্তর 24 পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ এবং জলপাইগুড়ি ৷

প্রসঙ্গত, 2016 থেকে 2021, এই পাঁচ বছরের বেশিরভাগ সময়টাই রাজ্যের অর্থ দফতরের পাশাপাশি শিল্প দফতরও সামলেছেন মন্ত্রী অমিত মিত্র ৷ তবে স্বাস্থ্যের কারণে একুশের নির্বাচন লড়েননি তিনি ৷ বর্তমানে শিল্প দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ৷ এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা দলের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘কর্মসংস্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক লক্ষ্য ৷ এই লক্ষ্য পূরণে লাগাতার কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার ৷ তবে করোনা আবহে টানা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের অর্থনীতিই কমবেশি ধাক্কা খেয়েছে ৷ কিন্তু, এই রাজ্যের অর্থনীতি স্থিতিশীল ৷ এখানে যে সরকারি তথ্য প্রকাশের কথা বলা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত যেকোনও প্রশ্নের জবাব সরকারের তরফেই দেওয়া হবে ৷ তবে দলের তরফ থেকে বলতে পারি, রাজ্য সরকার কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে লাগাতার কাজ করে চলেছে ৷ আর সেই লক্ষ্য পূরণে অনেকটাই সফল মা মাটি মানুষের সরকার ৷’’

অন্যদিকে, বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই কথাটাই তো এত দিন ধরে আমরা বলেছি ৷ এই সরকারের আমলে শিল্প থেকে কর্মসংস্থান, সবকিছুই তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ এরা মুখে জনকল্যাণের কথা বলে ৷ কিন্তু এই সরকারের কথা এবং কাজের মধ্য়ে কোনও মিল নেই ৷ সেই কারণেই শিল্প থেকে কর্মসংস্থান, সবকিছুরই এমন দৈন্যদশা ৷’’

সিপিএম যুবনেতা সায়নদীপ মিত্রের মতে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এবং বাস্তবের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, তা রাজ্য সরকারের এই রিপোর্টেই প্রমাণিত ৷ এই সরকার যে বেকারদের সঙ্গে ধাপ্পাবাজি করে চলছে, গত 10 বছর ধরে যে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, সেই সত্যকেই সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য সরকারের এই রিপোর্ট ৷ যত দিন যাবে, এমন অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে চলে আসবে ৷’’

আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : শিল্প সম্মেলনে বিনিয়োগ নিয়ে ফের সরব রাজ্যপাল, টুইট খোঁচা মহুয়ার

প্রাক্তন সাংবাদিক এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ শান্তনু সান্যালের মতে, এই পরিসংখ্যানে অবাক হবার কিছু নেই ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাম জমানা হোক বা তৃণমূলের শাসন, দু’টি ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশ শিল্পবান্ধব ছিল না ৷ এখন তো আইনশৃঙ্খলার হাল আরও খারাপ হয়েছে ৷ এছাড়া, আরও একটি বিষয় রয়েছে ৷ বড় শিল্প স্থাপিত হলে তবেই তার হাত ধরে একের পর ছোট ও অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে ৷ কিন্তু, ইদানীংকালে পশ্চিমবঙ্গে কোনও বড় শিল্প স্থাপিত হয়নি ৷ ফলে ছোট শিল্পগুলিরও উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.