ETV Bharat / city

ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম, ক্রেশ, গ্যাসের দাম - ভোট নিয়ে কী ভাবছেন মহিলারা ? - পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোট 2021

ভোটের বাজারে প্রতিশ্রুতির ঝুলি খুলে বসেছে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ নিরাপত্তা, ক্ষমতায়ন নিয়ে বেশ কিছু প্রত্যাশা রাখেন মহিলারাও ৷ ক্ষমতায়নের পাশাপাশি তাঁরা নিশ্চিত করতে চান নিজেদের নিরাপত্তা ৷

TT
TT
author img

By

Published : Mar 15, 2021, 10:31 AM IST

Updated : Mar 15, 2021, 11:00 AM IST

কলকাতা, 15 মার্চ: সংসারের হাল ধরে রাখেন মহিলারা ৷ তাঁরাই নিজের ঘরে হোম মিনিস্টার ৷ বাড়ির বাজেট করা হোক বা মেনু ঠিক করা, পরিপাটি হিসেব নিকেশ, তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রমণীর গুনেই সুন্দর হয়ে ওঠে সংসার ৷ অনেককে আবার সামাল দিতে হয় বাইরেটাও ৷ প্রতিবার নির্বাচনের সময় বাড়ির মহিলাদের কিছু প্রত্যাশা থাকে ৷ নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার মতো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোম মিনিস্টারদের মন জিততে চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ কিন্তু সরকার আসার পর মহিলাদের সেই প্রত্যাশাগুলি পূরণ হয় কি ?

ঘরে বাইরে নারীরা আজ অনেক স্বাধীন । নারী নিরাপত্তাও আগের তুলনায় বেড়েছে । তবে শহর ও গ্রাম বাংলায় এখনও অনেক অঞ্চলে মহিলারা পুরোপুরি নিরাপদ মনে করেন না নিজেদের । আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ঘরে ও বাইরে নারীদের চলাচল নিরাপদ করতে না-পারলে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন হওয়া সম্ভব নয় । এই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও গজল গায়িকা অনিন্দিতা মৈত্র দাস ও এডুকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুচিস্মিতা বাগচী সেনের মত অনেকটাই এক ।

অনিন্দিতাদেবী মনে করেন যে, "কর্মরতা মহিলা একজন মা-ও বটে ৷ তাঁর সন্তানকে রাখার জন্য কর্মক্ষেত্রে ক্রেশ থাকলে অফিসের কাজে অনেক বেশি ভালোভাবে মনোনিবেশ করা সম্ভব ।" আবার সুচিস্মিতা দেবীর কথায়, "যে সরকারই আসুক না কেন, তারা নারীদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রকল্প ঘোষণা করেন, আদতে এগুলি শুধু অলঙ্কার । তবে এখনও সমাজের অনেক তৃণমূল স্তরের পরিবার রয়েছে, যাঁদের কাছে এই সুযোগগুলো ঠিকঠাক গিয়ে পৌঁছচ্ছে না বা তাঁরা সুযোগ সন্ধানী অর্থাৎ তাঁরা সুযোগ নিচ্ছেন তবে তার অপব্যবহার করছেন । এর কারণ অবশ্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থা । নারী ও পুরুষের মধ্যে আদি অনন্তকাল ধরে হয়ে আসা বৈষম্য ।"

তিনি আরও বলেন যে, "নারী-পুরুষের বৈষম্য আমাদের সমাজে এখনও ভীষণভাবে প্রকট । এই বৈষম্য অনেক সময় বিজ্ঞাপনের কন্টেন্টেও দেখা যায় । গণমাধ্যমে মহিলাদের স্টিরিওটাইপ চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে । আশা রাখি একদিন এই বৈষম্য ঘুঁচবে । যে-ই সরকার গঠন করুক না কেন, এই বিষয়ে অনেক বেশি জোর দেবে ।"

আরও পড়ুন: বাবুল, নিশীথ, লকেট... বিজেপির প্রার্থীতালিকায় একাধিক হেভিওয়েট

অন্যদিকে অনিন্দিতাদেবী মনে করেন যে, "মহিলাদের আলাদা করে কোনও সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার দরকার নেই । আমাদের কেউ কিছু দিতে পারে না, আমাদের তাই বুঝে নিতে হয় । অর্থাৎ মহিলাদের অনেক বেশি সচেষ্ট হতে হবে। সব সরকারই মহিলাদের জন্য বহু প্রকল্প এনেছে । মহিলাদের আলাদা করে কোনও সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই বা প্রকল্পের প্রয়োজন নেই, একটি পুরুষ ও একটি ছেলে যে রকম স্বাভাবিকভাবে নিজের অধিকারগুলি পেয়ে থাকে, সেরকমভাবেই একটি মেয়ে সন্তান যেন সেটা পেয়ে বেড়ে ওঠে ।"

অন্যদিকে গৃহবধূ দোলন সেনগুপ্ত বলেন যে, "আমি একজন গৃহবধূ, তাই মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে আমার বৃদ্ধ শ্বশুর মশাইকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া - এই সব কিছুই আমার জীবনকে প্রভাবিত করে । গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বা ওষুধের দাম সবই আমাকে ভাবায় । আমার মনে হয় যে মহিলাদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্যাপারটা যদি আরও বেশি করে করা যায়, তাহলে তাদের যেমন সংসার সামলাতে অনেকটা সুবিধা হবে, তেমনই বাইরের অফিসের কাজ করতেও সুবিধে হবে ৷ তাঁরা অফিসের কাজে অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারবেন।"

ভোট আসে ভোট যায় ৷ মহিলারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থেকে যান সেই তিমিরেই ৷ তাই এ বারের সরকারের থেকে আরও নিরাপত্তা, আরও ক্ষমতায়ন, আরও সাম্য, আরও অধিকার পাওয়ারই প্রত্যাশা রাখেন পরিবারের চালিকাশক্তিরা ৷

কলকাতা, 15 মার্চ: সংসারের হাল ধরে রাখেন মহিলারা ৷ তাঁরাই নিজের ঘরে হোম মিনিস্টার ৷ বাড়ির বাজেট করা হোক বা মেনু ঠিক করা, পরিপাটি হিসেব নিকেশ, তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রমণীর গুনেই সুন্দর হয়ে ওঠে সংসার ৷ অনেককে আবার সামাল দিতে হয় বাইরেটাও ৷ প্রতিবার নির্বাচনের সময় বাড়ির মহিলাদের কিছু প্রত্যাশা থাকে ৷ নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার মতো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোম মিনিস্টারদের মন জিততে চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ কিন্তু সরকার আসার পর মহিলাদের সেই প্রত্যাশাগুলি পূরণ হয় কি ?

ঘরে বাইরে নারীরা আজ অনেক স্বাধীন । নারী নিরাপত্তাও আগের তুলনায় বেড়েছে । তবে শহর ও গ্রাম বাংলায় এখনও অনেক অঞ্চলে মহিলারা পুরোপুরি নিরাপদ মনে করেন না নিজেদের । আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ঘরে ও বাইরে নারীদের চলাচল নিরাপদ করতে না-পারলে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন হওয়া সম্ভব নয় । এই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও গজল গায়িকা অনিন্দিতা মৈত্র দাস ও এডুকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুচিস্মিতা বাগচী সেনের মত অনেকটাই এক ।

অনিন্দিতাদেবী মনে করেন যে, "কর্মরতা মহিলা একজন মা-ও বটে ৷ তাঁর সন্তানকে রাখার জন্য কর্মক্ষেত্রে ক্রেশ থাকলে অফিসের কাজে অনেক বেশি ভালোভাবে মনোনিবেশ করা সম্ভব ।" আবার সুচিস্মিতা দেবীর কথায়, "যে সরকারই আসুক না কেন, তারা নারীদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রকল্প ঘোষণা করেন, আদতে এগুলি শুধু অলঙ্কার । তবে এখনও সমাজের অনেক তৃণমূল স্তরের পরিবার রয়েছে, যাঁদের কাছে এই সুযোগগুলো ঠিকঠাক গিয়ে পৌঁছচ্ছে না বা তাঁরা সুযোগ সন্ধানী অর্থাৎ তাঁরা সুযোগ নিচ্ছেন তবে তার অপব্যবহার করছেন । এর কারণ অবশ্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থা । নারী ও পুরুষের মধ্যে আদি অনন্তকাল ধরে হয়ে আসা বৈষম্য ।"

তিনি আরও বলেন যে, "নারী-পুরুষের বৈষম্য আমাদের সমাজে এখনও ভীষণভাবে প্রকট । এই বৈষম্য অনেক সময় বিজ্ঞাপনের কন্টেন্টেও দেখা যায় । গণমাধ্যমে মহিলাদের স্টিরিওটাইপ চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে । আশা রাখি একদিন এই বৈষম্য ঘুঁচবে । যে-ই সরকার গঠন করুক না কেন, এই বিষয়ে অনেক বেশি জোর দেবে ।"

আরও পড়ুন: বাবুল, নিশীথ, লকেট... বিজেপির প্রার্থীতালিকায় একাধিক হেভিওয়েট

অন্যদিকে অনিন্দিতাদেবী মনে করেন যে, "মহিলাদের আলাদা করে কোনও সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার দরকার নেই । আমাদের কেউ কিছু দিতে পারে না, আমাদের তাই বুঝে নিতে হয় । অর্থাৎ মহিলাদের অনেক বেশি সচেষ্ট হতে হবে। সব সরকারই মহিলাদের জন্য বহু প্রকল্প এনেছে । মহিলাদের আলাদা করে কোনও সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই বা প্রকল্পের প্রয়োজন নেই, একটি পুরুষ ও একটি ছেলে যে রকম স্বাভাবিকভাবে নিজের অধিকারগুলি পেয়ে থাকে, সেরকমভাবেই একটি মেয়ে সন্তান যেন সেটা পেয়ে বেড়ে ওঠে ।"

অন্যদিকে গৃহবধূ দোলন সেনগুপ্ত বলেন যে, "আমি একজন গৃহবধূ, তাই মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে আমার বৃদ্ধ শ্বশুর মশাইকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া - এই সব কিছুই আমার জীবনকে প্রভাবিত করে । গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বা ওষুধের দাম সবই আমাকে ভাবায় । আমার মনে হয় যে মহিলাদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্যাপারটা যদি আরও বেশি করে করা যায়, তাহলে তাদের যেমন সংসার সামলাতে অনেকটা সুবিধা হবে, তেমনই বাইরের অফিসের কাজ করতেও সুবিধে হবে ৷ তাঁরা অফিসের কাজে অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারবেন।"

ভোট আসে ভোট যায় ৷ মহিলারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থেকে যান সেই তিমিরেই ৷ তাই এ বারের সরকারের থেকে আরও নিরাপত্তা, আরও ক্ষমতায়ন, আরও সাম্য, আরও অধিকার পাওয়ারই প্রত্যাশা রাখেন পরিবারের চালিকাশক্তিরা ৷

Last Updated : Mar 15, 2021, 11:00 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.