কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি : ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে কংগ্রেস সম্পর্কে বার্তা দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফন্টের নেতা আব্বাস সিদ্দিকী। সেই বার্তাই যে আক্রমণের সুর ছিল বলছেন ওয়াকিবহাল মহল। আব্বাসের এই বার্তা ভালোভাবে নিতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাই সভা শেষের আগেই ব্রিগেডের মঞ্চ ছাড়লেন অধীর। সংবাদমাধ্যম তার সঙ্গে কথা বলতে গেলেও তা এক প্রকার এড়িয়েই গেলেন তিনি। এর থেকেই নতুন করে জল্পনার পারদ চড়ছে। আদৌও বাম-কংগ্রেস-সংযুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ মোর্চার এই মঞ্চের একতার ছবি দীর্ঘস্থায়ী হবে তো ?
এদিন রবিবাসরীয় ব্রিগেডের সিংহ ভাগই ছিল আব্বাস সিদ্দিকীর সমর্থকদের ভিড়। কাজেই সভার অধিকাংশ শ্রোতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা তথা বাংলার মুসলমান সমাজের ভাইজান বলে পরিচিত এই যুবনেতা। জোট আলোচনায় শুরু থেকেই বাম কংগ্রেসের কাছে 70 টি আসন চাইছিল আব্বাস সিদ্দিকীর দল। বামফ্রন্ট প্রথমদিকে আই এস এফ কে 70 টি আসন ছাড়তে রাজি না থাকলেও পরে আলোচনার মাধ্যমে 30 টি আসন ছাড়তে রাজি হয়।
কিন্তু বেঁকে বসে কংগ্রেস। তারা নিজেদের হাতে থাকা আসন থেকে কোনওভাবেই একটি আসনও আব্বাস সিদ্দিকীর দলকে ছাড়তে রাজি নয়। এই অবস্থায় এদিন ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই কংগ্রেসকে একহাত নেন ভাইজান। অধীর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, এতে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, এদিন ব্রিগেড সভা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেননি তিনি। কেন্দ্রীয় নেতা তথা ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে নিয়ে সভা শেষের আগেই মঞ্চ ছাড়েন তিনি।
এদিন অধীর চৌধুরীর বক্তব্য রাখার মাঝেই সমাবেশে এসে পৌঁছান আব্বাস। মাঠে উচ্ছ্বাসের জেরে বক্তব্যের মাঝপথেই থামতে হয় তাঁকে। সেই সময় একটা সময় বক্তব্য রাখা ছেড়ে পোডিয়াম থেকে সরে যেতে ও দেখা যায় তাঁকে।
আরও পড়ুন : আব্বাস-অধীরের স্নায়ুযুদ্ধ, জোটের আকাশে কালো মেঘ নিয়ে শেষ হল বামেদের ব্রিগেড
পরে অবশ্য বক্তব্য রাখার সময় তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, এদিনের ভিড় দেখে অভিভূত তিনি। তিনি এত মানুষের জমায়েতে আগে কখনোই বক্তব্য রাখেননি। এদিন ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই বিজেপি এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। অধীর চৌধুরীর কথায়, বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে মৌলিক কোনও পার্থক্য নেই। বিজেপি দেশ থেকে কংগ্রেস শূন্য করতে চায়। আর তৃণমূল নেত্রী চান বিরোধীশূন্য করতে। উভয়ের লক্ষ্য এক। উভয় দলই চাইছে, বিজেপি এবং তৃণমূল ছাড়া বাকি রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব ভুলিয়ে দিতে। এদিনের ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে জমায়েত মূলত এরই বিরুদ্ধে মানুষের উত্তর। এদিন এই মঞ্চ থেকে এই বাম-কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ সংযুক্ত মোর্চাকে জয়ী করার ডাক দেন তিনি। তার দাবি, সরকার পরিবর্তন শুধু সময়ের অপেক্ষা।