কলকাতা, 20 অগাস্ট : COVID-19-এর চিকিৎসার খরচ হিসাবে বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের বিল করার অভিযোগ উঠছে । COVID-19-এর চিকিৎসার খরচ বেসরকারি হাসপাতালে কীভাবে কমানো যেতে পারে, সে বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে বলে জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC)। যার জেরে এবার বেসরকারি হাসপাতালে কোরোনা চিকিৎসার খরচ কমতে পারে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল ।
বুধবার কমিশন জানিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য যে খরচ হচ্ছে তা কীভাবে কমানো যায় তারজন্য চিন্তা-ভাবনা রয়েছে কমিশনের ৷ অন্য রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে । সেই পদক্ষেপ অনুসরণ করে এ রাজ্যেও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কোরোনা চিকিৎসার খরচ বেঁধে দেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়টিও কমিশনের চিন্তা-ভাবনায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । এর ফলে বিভিন্ন মহল মনে করছে, বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য খরচ বেঁধে দিতে অ্যাডভাইসরি ইশু করতে পারে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।
বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য খরচ হিসাবে যে বিল করা হচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেই বিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে । COVID-19 টেস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও মাত্রাতিরিক্ত বিলের অভিযোগ উঠছে । এই ধরনের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে WBCERC । COVID-19-এর চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে যাতে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে না হয়, তারজন্য ইতিমধ্যেই বেসরকারি হাসপাতালগুলির জন্য বিভিন্ন অ্যাডভাইসরি দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন । বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19-এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের খরচ হচ্ছে বলে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফেও অভিযোগ তোলা হয়েছে । COVID-19-এর চিকিৎসার খরচ কমানোর জন্য চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও জানানো হয়েছিল । এর পরে বেসরকারি হাসপাতালে COVID-19 টেস্টিং, চিকিৎসকের ফি এবং COVID-19-এর সংক্রমণ প্রতিরোধে PPE (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) সহ প্রয়োজনীয় অন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য খরচ বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার ।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে খরচ কমানোর লক্ষ্যে স্বাস্থ্য কমিশন-ও বিভিন্ন অ্যাডভাইসরি ইশু করেছে । কোনও অ্যাডভাইসরিতে যেমন জানানো হয়েছে, কোনও টেস্টের জন্য খরচ দুই হাজার টাকার বেশি হলে, রোগীর পরিজনদের জানিয়ে ওই টেস্ট করতে হবে । তেমনই কোনও অ্যাডভাইসরিতে জানানো হয়েছে, কোনও রোগীকে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানোর জন্য চিকিৎসার খরচ হিসাবে অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে হবে । অ্যাডভান্স পেমেন্ট হিসাবে সর্বাধিক 50 হাজার টাকা অথবা চিকিৎসার সম্ভাব্য খরচের সর্বাধিক 20 শতাংশ টাকার মধ্যে যেটা কম হবে, সেটা দিতে হবে । তবে এক্ষেত্রে কমিশন জানিয়েছে, ভরতির সময় এই অ্যাডভান্স পেমেন্ট যদি দিতে না পারেন কোনও রোগীর পরিজনরা, তা হলে ওই রোগীকে প্রভিশনাল অ্যাডমিশন হিসাবে ভরতি নেবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল । এক্ষেত্রে ভরতির পর থেকে পরবর্তী 12 ঘণ্টার মধ্যে ওই অ্যাডভান্স পেমেন্ট দিতে হবে । যদি দেখা যায় ওই 12 ঘণ্টার মধ্যেও অ্যাডভান্স পেমেন্ট দিতে পারলেন না পরিজনরা, তা হলে ওই রোগীর প্রভিশনাল অ্যাডমিশন তখন বাতিল করে দেবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । পরবর্তী 1 ঘণ্টার মধ্যে ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিজনদের বলতে পারবে ওই হাসপাতাল । তবে ইমারজেন্সির ক্ষেত্রে কোনও রোগীকে নিয়ে এমন করতে পারবে না কোনও বেসরকারি হাসপাতাল ।
বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে COVID-19-এর চিকিৎসা এবং COVID-19 টেস্টিংয়ের ক্ষেত্রে খরচে রাশ টানতে অন্য আরও কয়েক'টি অ্যাডভাইসরি ইশু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন । যার মধ্যে রয়েছে, প্রসবের জন্য বেসরকারি হাসপাতাল থেকে COVID-19-এ আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বাকে না ফেরানোর বিষয়টিও ।