কলকাতা, 19 জানুয়ারি : স্টেট এডেড কলেজ টিচার (এসএসিটি) নিয়োগের প্রতিবাদে বহুদিন ধরেই সরব হয়েছে কলেজে সহকারি অধ্যাপক পদে চাকরিপ্রার্থীরা । এবার এসএসিটি বাতিলের দাবিতে রাজ্যপালের দারস্থ হল ইউনাইটেড স্টুডেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ স্কলারস অ্যাসোসিয়েশন । এদিন রাজভবনে গিয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন তাঁদের প্রতিনিধি দল।
তাঁদের বক্তব্য, "পশ্চিমবঙ্গ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের 2019 সালের 23 ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং রাজ্যের কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাজ্যের কলেজগুলিতে প্রায় 15 হাজার এসএসিটি নিয়োগ করেছে । এই সমস্ত এসএসিটি-দের অধিকাংশের কলেজে পড়ানোর ন্যূনতম যোগ্যতা নেট, সেট, পিএইচডি কিছুই নেই । এমনকি অনেকের মাস্টার্স ডিগ্রিতে 50-55 শতাংশ নম্বরও নেই । অথচ পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে প্রায় 30 হাজার প্রার্থী রয়েছেন যাদের ইউজিসির নিয়ম মতে কলেজে পড়ানোর যাবতীয় যোগ্যতা অর্থাৎনেট, সেট, পিএইচডি রয়েছে । যাঁরা বেকারত্ব, হতাশার অন্ধকারে ডুবে আছে । মেধাবি, যোগ্য প্রার্থীরা রাজ্য ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন ।"
পাশাপাশি, 2020 সালের 18 ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষা দপ্তর কলেজে সহকারি অধ্যাপক নিয়োগের যে সংশোধিত বিধি জারি করেছে তাতে বহু প্রার্থী বঞ্চিত হবেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে । তাঁদের তরফে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, "এসএসিটি প্রত্যাহার, সিবিসিএল-এর নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত শূন্যপদে অধ্যাপক নিয়োগ, গবেষকদের চাকরির বয়স বৃদ্ধি ইত্যাদি দাবি নিয়ে 5 জানুয়ারি বিকাশ ভবনে ডেপুটেশন দেওয়া নিয়ে সরকারের মদতে পুলিশ গবেষক, কলেজে চাকরিপ্রার্থীদের উপর অত্যাচার চালায়, গ্রেপ্তার করে । ফলে আজ আমরা দাবি সম্বলিত আবেদনপত্র রাজ্যপালের কাছে প্রদান করলাম ।"
আরও পড়ুন : কলেজের মাঠে বসেই 'অনলাইন পরীক্ষা' পড়ুয়াদের !
তাঁদের দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে, ইউজিসি-র নিয়মকে অমান্য করে, কোনও রকম যোগ্যতার পরীক্ষা না নিয়ে, অস্বচ্ছ ও অসাংবিধানিকভাবে রাজ্যের কলেজগুলিতে যে এসএসিটি নিয়োগ করা হয়েছে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে । অতি দ্রুত সিবিসিএস-এর নিয়ম অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের কলেজগুলিতে এই মুহূর্তে যে প্রায় 30 হাজার স্থায়ী অধ্যাপকের শূন্যপদ রয়েছে তাতে ইউজিসি-র নিয়মকে যথাযথভাবে মেনে দ্রুত স্বচ্ছভাবে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে । পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের কলেজ সার্ভিস কমিশনে আবেদনের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা 50 বছর করতে হবে। পরীক্ষার ফি কমাতে হবে। 2018 সালে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন পরিচালিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে বিষয়ের এখনও ভাইভা হয়নি এবং যে সকল বিষয়ের এখনও মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়নি কিংবা যে সকল বিষয়ের মেধাতালিকার মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি তাঁদের নিয়োগের প্রক্রিয়া অবিলম্বে সম্পূর্ণ করে নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে । এই দাবিগুলি নিয়েই আজ রাজ্যপালের দারস্থ হন কলেজে চাকরিপ্রার্থীরা ।