ETV Bharat / city

আপার প্রাইমারি: ইন্টারভিউ শিটে পেনসিলে নম্বর ! উঠছে অস্বচ্ছতার অভিযোগ

আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে ফের অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠল । অভিযোগ, ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা চাকরিপ্রার্থীদের পার্সোনাল শিটে নম্বর পেনে দিলেও ফাইনাল শিটে পেনসিলে নম্বর দিতে বাধ্য হচ্ছেন । যদিও এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি করেছেন SSC-র চেয়ারম্যান ।

SSC ভবন
author img

By

Published : Jul 14, 2019, 10:31 AM IST

কলকাতা, 14 জুলাই: বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না SSC-র । আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠল । অভিযোগ, ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা চাকরিপ্রার্থীদের পার্সোনাল শিটে নম্বর পেনে দিলেও ফাইনাল শিটে পেনসিলে নম্বর দিতে বাধ্য হচ্ছেন । গোটা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে ।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরি কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজকুমার বিশ্বাস বলেন, "আমার কলেজের কয়েকজন অধ্যাপক ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন । তাঁরা নৈতিক সংকটে পড়েছেন । তাঁরা জানিয়েছেন, চাকরিপ্রার্থীদের ফাইনাল শিটে পেনসিল দিয়ে নম্বর দিতে হচ্ছে । তাঁদের এটা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । কিন্তু পেনসিল ব্যবহার করে নম্বর দিলেও তাঁদের শিটে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে পেনে । " এরপরই পঙ্কজবাবু আপার প্রাইমারি বোর্ডের সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে ফোনে জানিয়ে দেন, পেনসিলে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ মানতে পারছেন না, তাই তিনি আগামীতে তাঁর কলেজ থেকে আরও কোনও অধ্যাপককে ইন্টারভিউ বোর্ডে পাঠাবেন না ।

আরও পড়ুন: প্রার্থীর নম্বর জানালে প্রভাবিত হতে পারে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া, হাইকোর্টে জানাল SSC

পঙ্কজবাবু আরও বলেন, "আমার নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে । এটা চলতে দেওয়া যায় না। এভাবে একটা প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা হচ্ছে । এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ।" শিটগুলোর ফরেন্সিক টেস্ট ও ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকা প্রত‍্যেকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর দাবি করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : স্কুল সার্ভিসের সাপ্লিমেন্টেড ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ হবে : কমিশন

যদিও গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন SSC-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার । তাঁর দাবি এমন কোনও ঘটনাই নাকি ঘটেনি । সৌমিত্রবাবু বলেন, "এরকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যাঁরা আসছেন তাঁরা তো অভিজ্ঞ লোক। তাঁরা নিশ্চয় সব বোঝেন। এরকম কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই।"

কলকাতা, 14 জুলাই: বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না SSC-র । আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠল । অভিযোগ, ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা চাকরিপ্রার্থীদের পার্সোনাল শিটে নম্বর পেনে দিলেও ফাইনাল শিটে পেনসিলে নম্বর দিতে বাধ্য হচ্ছেন । গোটা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে ।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরি কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজকুমার বিশ্বাস বলেন, "আমার কলেজের কয়েকজন অধ্যাপক ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন । তাঁরা নৈতিক সংকটে পড়েছেন । তাঁরা জানিয়েছেন, চাকরিপ্রার্থীদের ফাইনাল শিটে পেনসিল দিয়ে নম্বর দিতে হচ্ছে । তাঁদের এটা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । কিন্তু পেনসিল ব্যবহার করে নম্বর দিলেও তাঁদের শিটে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে পেনে । " এরপরই পঙ্কজবাবু আপার প্রাইমারি বোর্ডের সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে ফোনে জানিয়ে দেন, পেনসিলে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ মানতে পারছেন না, তাই তিনি আগামীতে তাঁর কলেজ থেকে আরও কোনও অধ্যাপককে ইন্টারভিউ বোর্ডে পাঠাবেন না ।

আরও পড়ুন: প্রার্থীর নম্বর জানালে প্রভাবিত হতে পারে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া, হাইকোর্টে জানাল SSC

পঙ্কজবাবু আরও বলেন, "আমার নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে । এটা চলতে দেওয়া যায় না। এভাবে একটা প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা হচ্ছে । এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ।" শিটগুলোর ফরেন্সিক টেস্ট ও ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকা প্রত‍্যেকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর দাবি করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : স্কুল সার্ভিসের সাপ্লিমেন্টেড ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ হবে : কমিশন

যদিও গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন SSC-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার । তাঁর দাবি এমন কোনও ঘটনাই নাকি ঘটেনি । সৌমিত্রবাবু বলেন, "এরকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যাঁরা আসছেন তাঁরা তো অভিজ্ঞ লোক। তাঁরা নিশ্চয় সব বোঝেন। এরকম কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই।"

Intro:কলকাতা, 13 জুলাই: বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না স্কুল সার্ভিস কমিশনের। এবার মারত্মক অভিযোগ আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে। অভিযোগ, ইন্টারভিউতে প্রার্থীদের পার্সোনাল শিটে সাক্ষর ও নম্বর পেনে করা হলেও, গ্রুপ বা ফাইনাল শিটে সাক্ষর পেন দিয়ে করলেও, নম্বর পেনসিল দিয়ে দিতে হচ্ছে। ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকা একাধিক অধ‍্যক্ষ ও অধ‍্যাপক-অধ‍্যাপিকা ইন্টারভিউ নিয়ে বেরিয়ে এসে তাঁকে এমনই জানিয়েছেন বলে দাবি করছেন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ‍্যক্ষ পঙ্কজ কুমার বিশ্বাস। তাঁর মতে, গোটা বিষয়টিই অনৈতিক। আর এই অনৈতিকতার প্রতিবাদে তিনি আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াতে তাঁর কলেজের অধ‍্যাপক-অধ‍্যাপিকাদের পাঠাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


Body:বিষয়টি নিয়ে যোগেশচন্দ্র চোধুরী কলেজের অধ‍্যক্ষ পঙ্কজ কুমার বিশ্বাস বলেন, " বিষয়টা হচ্ছে যে আমার পরিচিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অধ্যাপক যাঁরা ইন্টারভিউ বোর্ডে যাচ্ছিলেন, তাঁরা কিন্তু বারবার আমাকে বলছিলেন, স্যার খুব নৈতিকতার সংকটে পড়েছি। আমাদের পেন্সিল মার্কিং করানোর পরে সই করানো হচ্ছে। বিষয়টা অ্যাস আ স্পেক্টেটর আমি দেখেছিলাম। কিন্তু, আপার প্রাইমারি বোর্ডের এক আধিকারিক আমাকে ফোন করে বলেন আমরা কিছু টিচারকে রিকুইজিশন দিচ্ছি, আপনি তাঁদের একটু ইন্টারভিউ বোর্ডে পাঠানোর সময় দিন। আমি বললাম বাই অ্যাডজাস্টমেন্ট তাঁরা যাক, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু, তারপরে তাঁরা যখন ডিউটি লিভের জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে আসেন, তখন তারাও এসে প্রায় ভেঙে পড়লেন। কারণ যে, অনৈতিক কাজটা করে এলাম। কী অনৈতিক কাজ? প্রথম যে শিটটায় মার্কিং করলাম সেটা পেনে, সিগনেচার করলাম পেনে। কিন্তু ফাইনাল শিটটায় পেন্সিল মার্কিংয়ের উপরে সিগনেচার করে আসতে হল। আমি তুরন্ত মনে করেছি সত্যি এটা ইথিক্যালি ইনকারেক্ট। মোরালি এটা আমার কাছে দুর্ভাগ্যজনক মনে হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আমি মনে করি কৃষিতে আর কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, শিল্পেও আর সেই জায়গাটা নেই। কিন্তু, শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের। তাঁরা এভাবে দাঁড়িয়ে যে ডিপ্রাইভ হচ্ছে, সেটা আমাকে প্রচন্ড হার্ট করে।"

সঙ্গে সঙ্গে এই অনৈতিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন পঙ্কজবাবু। তিনি বলেন, "আমি তক্ষুনি সেই আধিকারিককে ফোন করে বলি যে, পেন্সিল মার্কিং করার জন্য আমি কোনো টিচারকে প্রোভাইড করব না এবং ডিউটি লিভ দেব না। এখন থেকে যে কটা ইন্টারভিউ বাকি আছে তাতে আমি আমার আর কোনও টিচারকে প্রোভাইড করছি না। তিনি কিছু বাক্য বিনিময় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, বিষয়টা নিয়ে পরোক্ষভাবে তিনি কিন্তু অসম্মত হননি। তাতে আরও আমার ধারণা দৃঢ় হয়েছে যে প্রজন্মের গণহত্যা চলছে। এটা আমার একজন শিক্ষক হিসাবে 30 বছরের বেশি এই ডোমেনে বিচরণ করার মানুষ হিসাবে আমার মনে হয়, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।" এই সত‍্যতা সকলের সামনে আনার জন্য পঙ্কজ কুমার বিশ্বাস শিটগুলির ফরেন্সিক টেস্ট ও ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকা প্রত‍্যেকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর দাবি তোলেন। তিনি বলেন, "ওই শিটের ফরেনসিক টেস্ট হোক। যাঁরা যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছেন সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তাদের পলিগ্রাফ টেস্ট হোক। তাহলে আসল সত্যটা আসবে।"

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ‍্যক্ষ আরও বলেন, "আমার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। শুধু সিস্টেমটার বিরুদ্ধে অভিযোগ। এটা চলতে পারে না, এটা চলতে দেওয়া যায় না। এটা বাঙালির ভবিষ্যৎ অন্ধকার হওয়ার একটা জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে। আমাকে রীতিমত এটা নাড়া দিয়ে গেছে। এটা ভাবতে পারিনি। আমাকে একজন টিচার বলেছেন, যাকে আমি দশ দিয়ে এলাম সে হয়তো চাকরি পাবে না, যাকে এক দিয়েছি সে মনে হয় চাকরি পাবে। তার মধ্যে এই দ্বন্দ্বটা মাথাচাড়া দিচ্ছে। এটাতে একটা স্বচ্ছতার অভাব আমার মনে হয়েছে। আমাকে আজকে আরও একজন অধ্যক্ষ ফোন করে আমাকে বলেন, পরে সাহসটা আরো বেড়ে যায়। ইন্ডিভিজুয়াল শিটও পেন্সিলে করা হয়েছে, ফাইনাল শিটও পেন্সিলে করা হয়েছে। সিগনেচার পেনে করা হয়েছে।"

গত 2 জুলাই থেকে শুরু হয়েছে আপার প্রাইমারির সহকারি শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া। চলবে 15 জুলাই পর্যন্ত। ভেরিফিকেশন থেকে শুরু করে ইন্টারভিউ প্রতিটি স্তরেই একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। হাইকোর্টে বেশ কয়েকটি মামলাও চলছে এই নিয়ে। তারমধ্যেই পেনে সাক্ষর ও পেনসিলে নম্বর দেওয়ার অভিযোগে আবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও, গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার। তিনি বলেন, " এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। যাঁরা আসছেন তাঁরা তো অভিজ্ঞ লোক। তাঁরা নিশ্চয়ই বোঝেন। এসব যদি কেউ বলে তার উত্তর তো আমি দিতে পারব না। আমাদের এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমার জানা নেই।"


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.