কলকাতা, 2 জুলাই: বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপরিচিতদের বন্ধু বানানো খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, তা কতটা নিরাপদ ? সেকথা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর সময় বা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাক্সেপ্ট করার সময় কেউই প্রায় ভাবেন না ৷ আর সাধারণ মানুষের এই সরলতাকে হাতিয়ার করে, সোশ্যাল মিডিয়ার ওপারে ফাঁদ পেতে বসে রয়েছে নারীপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্তরা (Traffickers Use Social Media as Trap for Women) ৷ কলকাতায় একটি ঘটনা তার অন্যতম উদাহরণ ৷ ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব করার আগে ভালো করে সেই ব্যক্তিকে বিচার করে নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় ৷ তবে, তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷
লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে খবর, সম্প্রতি কলকাতা শহরের ট্যাংরা থানা এবং বেলেঘাটা থানায় এই ধরনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ অভিযুক্তদের ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্য থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের ছবি ব্যবহার করে মূলত গ্রামীণ এলাকার গৃহবধূ এবং কিশোরীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করে এরা ৷ পরে সুযোগ বুঝে কাউকে ভিনরাজ্যে কাজ পাইয়ে দেওয়া বা প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ আর একবার ভিনরাজ্যে নিয়ে যেতে পারলেই তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া সময়ের অপেক্ষা ৷
সম্প্রতি ট্যাংরা থানা এলাকার এক কিশোরীকে অপহরণের পর উত্তরপ্রদেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রির চেষ্টা করা হয় (Women Trafficking)। এই ঘটনায় এক অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে এসেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ৷ তাঁর নাম রোশন সিং ৷ দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার এক কিশোরীর সঙ্গে ফেসবুকে প্রথমে বন্ধুত্ব করে অভিযুক্ত ৷ এর পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং বাড়ি থেকে পালিয়ে হাওড়া স্টেশনে আসতে বলে অভিযুক্ত ৷ সেখান থেকে রোশন তাকে প্রথমে খড়গপুর এবং সেখান থেকে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ৷
আরও পড়ুন: Lookout Notice against Nupur Sharma : নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি কলকাতা পুলিশের
পুলিশ ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে অভিযুক্তকে প্রথমে গ্রেফতার করে । পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উত্তরপ্রদেশের একটি পরিত্যক্ত গোয়াল ঘর থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয় ৷ ইতিমধ্যেই, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে গোয়েন্দারা জানতে পারে সে নারী পাচার চক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে। এই চক্রে আর কারা যুক্ত রয়েছে, তার সন্ধান পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা ৷
এছাড়াও, গতমাসে বেলেঘাটা থানায় এলাকায় এক যুবতীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করেছিল এক অভিযুক্ত ৷ কিন্তু সে বারেও পুলিশি প্রচেষ্টায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে ওই যুবতীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল ৷ ফলে ইতিমধ্যেই লালবাজারে তরফে গোয়েন্দারা সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে ৷ যেখানে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও অপরিচিত ব্যক্তিকে বন্ধু করার আগে, ভালো করে সেই প্রোফাইল যাচাই করে নিতে অনুরোধ করেছে লালবাজার ৷