কলকাতা, 24 সেপ্টেম্বর : রবীন্দ্র সরোবরের জলের মান পরীক্ষায় আরও গতি আনতে এবার নতুন পরিকাঠামো গড়ে তুলছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা কেএমডিএ । এর জন্য কেনা হবে এক বিশেষ যন্ত্র ৷ লেকের জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যাবে বলে জানিয়েছে কেএমডিএ ।
বিগত কয়েক দিনে এই লেকের জলে বেশ কয়েকটি মরা মাছ ভেসে উঠেছে । এই ঘটনার পরপরই এই পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিল কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ । ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলেছেন কেএমডিএর আধিকারিকরা । কেএমডিএর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়েকটি বিশেষ ধরনের যন্ত্র কেনা হবে । এই যন্ত্র 12 থেকে 15টি জায়গায় বসিয়ে প্রতি সপ্তাহে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা হবে । রাখা হবে একটি রেজিস্টার এবং যখনই দেখা যাবে জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমেছে, তখনই পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এবং ক্যালসিয়াম অক্সাইড জলে দিয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ানো হবে । এই প্রক্রিয়ার দ্বারা রবীন্দ্র সরোবরের জলে মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি আটকানো যাবে বলেই মনে করছে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ ।
আরও পড়ুন : Madan Mitra: আঙুর ফল টক, লাইভে এসে ট্রোলের জবাব ‘কালারফুল’ মদনের
এতদিন রবীন্দ্র সরোবরের জলে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষার দায়িত্ব ছিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হাতে। প্রতিমাসে একবার করে এই কাজ করা হত । তবে এবারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ-এর উপর নির্ভরশীল না থেকে অক্সিজেনের মাত্রা মাপার কাজ নিজেরাই করতে উদ্যোগী হল কেএমডিএ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। তবে এই পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে আগামী সপ্তাহ হয়ে যাবে । কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ কিভাবে এই বিষয়টি আটকানো যায়, সে বিষয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে পরামর্শ চেয়েছে। জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলেই এই পরামর্শ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কল্যাণবাবু।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, পরপর চার-পাঁচ দিন মেঘলা আকাশ থাকায় জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়েছে ৷ যার দরুন রবীন্দ্র সরোবরে মাছের মৃত্যু হয়েছে ৷ অন্তত প্রাথমিকভাবে এমনই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। শুধুমাত্র রবীন্দ্র সরোবর নয়, রাজ্যের যে কোনও পুকুরেই মাছেদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য বলে অভিমত কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের । তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে রবীন্দ্র সরোবরের শুদ্ধ জলের সঙ্গে বাইরের রাস্তার জল মিশে গিয়ে লেকের জলের মান খারাপ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ । যদিও তাদের অভিমত, সুবিশাল এই সরোবরের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হিসেবে লেকের জলে এরেটর মেশিন বসিয়ে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানো যায় কিনা সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। লেকের ধারে নজরুল মঞ্চের পাশে যে ফোয়ারাটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে, সেটিও সারানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে কেএমডিএ সূত্রে খবর ৷