ETV Bharat / city

সৌন্দর্য চর্চায় কসমেটিক্স? লুকিয়ে রয়েছে বিপদ - cosmetics may causes cancer

রূপচর্চায় কসমেটিক্সের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে ৷ কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এর মধ্যে বেশিরভাগ কসমেটিক্সের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বিপদ ৷ হতে পারে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ পর্যন্ত ৷

প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Oct 14, 2019, 12:18 PM IST

Updated : Oct 14, 2019, 12:41 PM IST

কলকাতা, 14 অক্টোবর : রানি ক্লিওপেট্রার যুগ কবেই শেষ হয়ে গেছে । কালের নিয়মে সৌন্দর্য চর্চার জন্য বাজারে রয়েছে হরেক রকমের আয়োজন । তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বিপদ লুকিয়ে রয়েছে এ সব কসমেটিক্সে । যার জেরে ক্যানসারের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে প্রাণসংশয়ের সম্ভাবনা পর্যন্ত রয়েছে । একই সঙ্গে তাঁদের আশ্বাস, মুখ আপনার, মুখের সৌন্দর্যও আপনার । আর এই সৌন্দর্য এনে দিতে পারে না কোনও কসমেটিক্স ।

কসমেটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও বিপদ রয়েছে?

কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "নিশ্চয় । কসমেটিক্স সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা প্রত্যেক মানুষের কাম্য ।" কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "কসমেটিক্স সব সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে ।"

সুন্দর হওয়ার স্বপ্ন বোধহয় প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু হয়েছে । দুধের সর থেকে শুরু করে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে এমন বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে নিজেকে সুন্দর রাখতেন রানি ক্লিওপেট্রা । সেই যুগ থেকে শুরু হয়েছে রূপচর্চা । এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, " দুঃখের কথা এই সুন্দরের জন্য আমাদের যে প্রচেষ্টা, তা করতে গিয়ে বিশাল ইন্ডাস্ট্রি জড়িয়ে গেছে । এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় 20 হাজার কোটি টাকার মার্কেট । এর ফলে সবাই চায় তাড়াতাড়ি এর রেজ়াল্ট দিতে । তাড়াতাড়ি সুন্দর করতে । এর ফলে যেসব ক্রিম চালু রয়েছে, সে সব পরীক্ষা করে দেখা গেছে তার মধ্যে রয়েছে স্টেরয়েডস । এই টপিকাল স্টেরয়েডস বা এই ওষুধ যদি ত্বকে লাগানো হয় তাহলে ত্বক পাতলা হয়ে যায়, ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় ৷ ফলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে থাকে । এগুলো সাইড এফেক্টস ।"

দেখুন ভিডিয়ো...

মুখের ত্বকের যে বিন্যাস, কারও খুব তৈলাক্ত, কারও খুব শুকনো ৷ কারও আবার মুখে হয়ত ব্রণ রয়েছে ৷ কারও মুখে হয়ত মেচেতার ছোটো ছোটো দাগ হয়ে রয়েছে । নিজেকে সাজিয়ে তোলার জন্য প্রেরণা মানুষের মন থেকে আসে । উৎসব অনুষ্ঠানে এই প্রেরণা আরও বেশি করে আসে । শিক্ষার যে পদ্ধতি, তাতে কসমেটোলজি ঠিক ঠিক পড়ানো হয় না । কেমন ভাবে মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে, সুন্দর রাখতে হবে, এগুলি কখনও পড়ানো হয় না । বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয়, সংশ্লিষ্ট প্রসাধনী সামগ্রীটি ব্যবহার করলে মডেলের মতো সুন্দর হয়ে ওঠা যাবে । এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "মুখ শুধুমাত্র কোনও কসমেটিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর হয়ে ওঠে না । মুখ আসলে মন এবং শরীরের বহিঃপ্রকাশ । একটি অসুস্থ মানুষের উপর যদি প্রলেপ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে কি খুব সুন্দর দেখতে লাগবে? হবে না, উলটে যেটা হবে, যে জিনিসগুলো দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে, সে সবের যে কম্পোজিশন, সেগুলির অনেকগুলিতে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে । অনেকগুলিতে অ্যাবজ়র্পশন হয়ে ক্যানসার হতে পারে । " তিনি বলেন, "ধরুন, মাথার চুলে রং করা হল, তাতে PPDA থাকে । এটা অ্যাবজ়র্ভ হয়ে কিডনির ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে । কিডনির কাজ কমিয়ে দিতে পারে ।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, " চুলে বিভিন্ন ধরনের কলপ আমরা ব্যবহার করি । এর মধ্যে রয়েছে PPD ৷ এই PPD অনেক সময় শুধুমাত্র মুখে অ্যালার্জি নয়, অনেক সময় এটা জীবনকে বিপজ্জনক অবস্থার সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে । ট্যাটু করাতে গিয়ে মৃত্যু বা শ্বাসকষ্ট, এটাও হয়েছে । ট্যাটু করাতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও হতে পারে । যতদূর সম্ভব মেডিকেলি অ্যাপ্রুভড এমন জিনিস ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করতে হবে । তাতে কোনও সমস্যা হবে না । কিন্তু হঠাৎ যদি আমরা বাজার চলতি কসমেটিকসের বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে পড়ি, তাহলে বিপদ ডেকে আনছি । এই সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে বহু রোগী আসছেন । সৌন্দর্যের পিছনে দৌড়ানো খুবই ভালো । যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত । কিন্তু যুক্তির সঙ্গে জিনিসটি যতটা বিজ্ঞানসম্মতভাবে হবে, ততটাই ভালো ।"

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "ধোঁয়ার বিষয় যেখানে ছোটোবেলা থেকে ভালোভাবে আমাদের শেখা হয়নি, সেখানে আমরা বিজ্ঞাপন দেখে প্রলেপ লাগিয়ে যাচ্ছি । মুখে কতটা সানস্ক্রিন লাগানো হলে তা প্রোটেকশন দেয়, তা জানি না । যদিও সব কিছু ক্যালকুলেটেড । তেমনই শারীরিক সুস্থতা বাদ দিয়ে মুখের যে সৌন্দর্য, সেটা সম্ভবপর নয় । সেটা মানুষ ভুলে গিয়ে কোনও কোনও ক্রিমের পিছনে দৌড়ায় । এই ক্রিম যারা তৈরি করে, তারা মার্কেট খোঁজে বেশি বিক্রির জন্য । সেই জন্য যে বয়সে ময়শ্চারাইজ়ার দরকার নেই, যেমন 15 বছরের কোনও কিশোরী, তার জন্যেই যেমন ময়শ্চারাইজ়ার । তেমনই, 50 বছর বয়সি কোনও মহিলার রুক্ষ-সুক্ষ্ম ত্বকের জন্যও ময়শ্চারাইজ়ার । 20 বছর বয়সি কোনও মহিলা বা পুরুষ, যার টোন আপের দরকার নেই, তার জন্য টোনার । আবার, 50 বছরেও টোনার ।" তিনি আরও বলেন, " বয়সের ভেদ অনুযায়ী শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, সেই অনুযায়ী হিসাব করা নেই । সবকিছু আন্দাজে চলছে । যেমন কোনও কোনও ক্রিম লাগালে, খুব টানটান হয়ে ওঠে মুখ । বেশ সুন্দর লাগে । এই ধরনের ক্রিম ব্যবহারের ফলে কিছুদিন পরে রোম তৈরি হয় ৷ ছোটো ছোটো ব্রণ হয় । এভাবে প্রকারান্তরে বলে দেওয়া হচ্ছে এই ক্রিমের মধ্যে পুরুষ-হরমোনের মতো কিছু দেওয়া আছে । তেমনই অনেক ব্রণ তৈরি হচ্ছে, মুখের চামড়া পাতলা হয়ে যাচ্ছে, দাগ হয়ে যাচ্ছে । প্রকারান্তরে এটা বলছে এই ক্রিমের মধ্যে স্টেরয়েড জাতীয় কিছু দেওয়া রয়েছে । সব সময় হিউম্যান স্টেরয়েড হতে হবে এমন কোনও কথা নেই । প্রকৃতিতে অনেক ধরনের স্টেরয়েড রয়েছে । এই ধরনের স্টেরয়েডকে ফাইটো স্টেরয়েড বলে ৷ এই স্টেরয়েডেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে । শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস মুখে মাখার জেরে সমস্যা দেখা দিতে পারে । শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস খাওয়া বা মুখে লাগানো ক্ষতিকর ।"

মানুষ কী ভাবে সচেতন হবেন? মানুষ কী ভাবে বুঝবেন?

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "সচেতন হওয়ার জন্য পড়াশোনা করতে হবে । মুখে কোনও কিছু ব্যবহার করার আগে ভাবতে হবে । মুখে ব্যবহারের আগে শরীরের অন্য কোথাও লাগিয়ে দেখতে হবে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না । সাধারণত হাতে লাগিয়ে দেখা হয় । মুখে বা মাথার চুলে কোনও কসমেটিকস ব্যবহারের আগে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে হবে । না হলে সৌন্দর্য বৃদ্ধির বদলে সৌন্দর্যহানি হতে পারে । কোনও কসমেটিক্সে দাবি করা হতে পারে ব্যবহার করলে ফর্সা হওয়া যায় । তার মানে এর মধ্যে হাইড্রোকুইনিন জাতীয় কিছু ওষুধ দেওয়া রয়েছে । এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক ।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "চোখ-কান খোলা রাখতে হবে । যেমন, ময়শ্চারাইজ়িংয়ের ক্রিমে খুব একটা ক্ষতি হয় না । বিভিন্ন ধরনের ময়শ্চারাইজ়িং ক্রিম রয়েছে । কোনও কোনও ক্রিমের জন্য ইনস্টা গ্লো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় । ইনস্টা গ্লো মানে এমন কিছু ব্যবহার করছে, যেটা ত্বকের ক্ষতি করতে চলেছে । উৎসব হোক বা অন্য যে কোনও সময়, সব সময় সতর্ক থাকতে হবে । অ্যাজ়মা, অ্যালার্জির প্রবণতা আছে কি না । বা কোনও অ্যালার্জির বিষয়টি জানা আছে কি না যেমন, চোখ-নাক দিয়ে জল পড়ে কি না, এগুলির মূল্যায়ন করা খুবই দরকার ।" চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাজার চলতি বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয় বলে তিনি জানিয়েছেন ।

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "মুখ আমার, মুখের সৌন্দর্য আমার । না জেনে বুঝে মুখে কসমেটিক্স ব্যবহার করবেন না । কোনও কসমেটিক্স ব্যবহার করে সৌন্দর্য আনা যায় না । সময় মতো সুষম খাবার, সময় মতো ঘুম, সময় মতো শরীরচর্চা এবং মুখ সাধারণভাবে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখলে সৌন্দর্য বজায় থাকে ।" দীর্ঘ বছর ধরে যে সব ক্রিম বাজারে রয়েছে, সেগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন ।

কলকাতা, 14 অক্টোবর : রানি ক্লিওপেট্রার যুগ কবেই শেষ হয়ে গেছে । কালের নিয়মে সৌন্দর্য চর্চার জন্য বাজারে রয়েছে হরেক রকমের আয়োজন । তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বিপদ লুকিয়ে রয়েছে এ সব কসমেটিক্সে । যার জেরে ক্যানসারের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে প্রাণসংশয়ের সম্ভাবনা পর্যন্ত রয়েছে । একই সঙ্গে তাঁদের আশ্বাস, মুখ আপনার, মুখের সৌন্দর্যও আপনার । আর এই সৌন্দর্য এনে দিতে পারে না কোনও কসমেটিক্স ।

কসমেটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও বিপদ রয়েছে?

কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "নিশ্চয় । কসমেটিক্স সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা প্রত্যেক মানুষের কাম্য ।" কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "কসমেটিক্স সব সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে ।"

সুন্দর হওয়ার স্বপ্ন বোধহয় প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু হয়েছে । দুধের সর থেকে শুরু করে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে এমন বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে নিজেকে সুন্দর রাখতেন রানি ক্লিওপেট্রা । সেই যুগ থেকে শুরু হয়েছে রূপচর্চা । এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, " দুঃখের কথা এই সুন্দরের জন্য আমাদের যে প্রচেষ্টা, তা করতে গিয়ে বিশাল ইন্ডাস্ট্রি জড়িয়ে গেছে । এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় 20 হাজার কোটি টাকার মার্কেট । এর ফলে সবাই চায় তাড়াতাড়ি এর রেজ়াল্ট দিতে । তাড়াতাড়ি সুন্দর করতে । এর ফলে যেসব ক্রিম চালু রয়েছে, সে সব পরীক্ষা করে দেখা গেছে তার মধ্যে রয়েছে স্টেরয়েডস । এই টপিকাল স্টেরয়েডস বা এই ওষুধ যদি ত্বকে লাগানো হয় তাহলে ত্বক পাতলা হয়ে যায়, ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় ৷ ফলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে থাকে । এগুলো সাইড এফেক্টস ।"

দেখুন ভিডিয়ো...

মুখের ত্বকের যে বিন্যাস, কারও খুব তৈলাক্ত, কারও খুব শুকনো ৷ কারও আবার মুখে হয়ত ব্রণ রয়েছে ৷ কারও মুখে হয়ত মেচেতার ছোটো ছোটো দাগ হয়ে রয়েছে । নিজেকে সাজিয়ে তোলার জন্য প্রেরণা মানুষের মন থেকে আসে । উৎসব অনুষ্ঠানে এই প্রেরণা আরও বেশি করে আসে । শিক্ষার যে পদ্ধতি, তাতে কসমেটোলজি ঠিক ঠিক পড়ানো হয় না । কেমন ভাবে মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে, সুন্দর রাখতে হবে, এগুলি কখনও পড়ানো হয় না । বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয়, সংশ্লিষ্ট প্রসাধনী সামগ্রীটি ব্যবহার করলে মডেলের মতো সুন্দর হয়ে ওঠা যাবে । এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "মুখ শুধুমাত্র কোনও কসমেটিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর হয়ে ওঠে না । মুখ আসলে মন এবং শরীরের বহিঃপ্রকাশ । একটি অসুস্থ মানুষের উপর যদি প্রলেপ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে কি খুব সুন্দর দেখতে লাগবে? হবে না, উলটে যেটা হবে, যে জিনিসগুলো দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে, সে সবের যে কম্পোজিশন, সেগুলির অনেকগুলিতে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে । অনেকগুলিতে অ্যাবজ়র্পশন হয়ে ক্যানসার হতে পারে । " তিনি বলেন, "ধরুন, মাথার চুলে রং করা হল, তাতে PPDA থাকে । এটা অ্যাবজ়র্ভ হয়ে কিডনির ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে । কিডনির কাজ কমিয়ে দিতে পারে ।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, " চুলে বিভিন্ন ধরনের কলপ আমরা ব্যবহার করি । এর মধ্যে রয়েছে PPD ৷ এই PPD অনেক সময় শুধুমাত্র মুখে অ্যালার্জি নয়, অনেক সময় এটা জীবনকে বিপজ্জনক অবস্থার সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে । ট্যাটু করাতে গিয়ে মৃত্যু বা শ্বাসকষ্ট, এটাও হয়েছে । ট্যাটু করাতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও হতে পারে । যতদূর সম্ভব মেডিকেলি অ্যাপ্রুভড এমন জিনিস ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করতে হবে । তাতে কোনও সমস্যা হবে না । কিন্তু হঠাৎ যদি আমরা বাজার চলতি কসমেটিকসের বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে পড়ি, তাহলে বিপদ ডেকে আনছি । এই সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে বহু রোগী আসছেন । সৌন্দর্যের পিছনে দৌড়ানো খুবই ভালো । যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত । কিন্তু যুক্তির সঙ্গে জিনিসটি যতটা বিজ্ঞানসম্মতভাবে হবে, ততটাই ভালো ।"

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "ধোঁয়ার বিষয় যেখানে ছোটোবেলা থেকে ভালোভাবে আমাদের শেখা হয়নি, সেখানে আমরা বিজ্ঞাপন দেখে প্রলেপ লাগিয়ে যাচ্ছি । মুখে কতটা সানস্ক্রিন লাগানো হলে তা প্রোটেকশন দেয়, তা জানি না । যদিও সব কিছু ক্যালকুলেটেড । তেমনই শারীরিক সুস্থতা বাদ দিয়ে মুখের যে সৌন্দর্য, সেটা সম্ভবপর নয় । সেটা মানুষ ভুলে গিয়ে কোনও কোনও ক্রিমের পিছনে দৌড়ায় । এই ক্রিম যারা তৈরি করে, তারা মার্কেট খোঁজে বেশি বিক্রির জন্য । সেই জন্য যে বয়সে ময়শ্চারাইজ়ার দরকার নেই, যেমন 15 বছরের কোনও কিশোরী, তার জন্যেই যেমন ময়শ্চারাইজ়ার । তেমনই, 50 বছর বয়সি কোনও মহিলার রুক্ষ-সুক্ষ্ম ত্বকের জন্যও ময়শ্চারাইজ়ার । 20 বছর বয়সি কোনও মহিলা বা পুরুষ, যার টোন আপের দরকার নেই, তার জন্য টোনার । আবার, 50 বছরেও টোনার ।" তিনি আরও বলেন, " বয়সের ভেদ অনুযায়ী শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, সেই অনুযায়ী হিসাব করা নেই । সবকিছু আন্দাজে চলছে । যেমন কোনও কোনও ক্রিম লাগালে, খুব টানটান হয়ে ওঠে মুখ । বেশ সুন্দর লাগে । এই ধরনের ক্রিম ব্যবহারের ফলে কিছুদিন পরে রোম তৈরি হয় ৷ ছোটো ছোটো ব্রণ হয় । এভাবে প্রকারান্তরে বলে দেওয়া হচ্ছে এই ক্রিমের মধ্যে পুরুষ-হরমোনের মতো কিছু দেওয়া আছে । তেমনই অনেক ব্রণ তৈরি হচ্ছে, মুখের চামড়া পাতলা হয়ে যাচ্ছে, দাগ হয়ে যাচ্ছে । প্রকারান্তরে এটা বলছে এই ক্রিমের মধ্যে স্টেরয়েড জাতীয় কিছু দেওয়া রয়েছে । সব সময় হিউম্যান স্টেরয়েড হতে হবে এমন কোনও কথা নেই । প্রকৃতিতে অনেক ধরনের স্টেরয়েড রয়েছে । এই ধরনের স্টেরয়েডকে ফাইটো স্টেরয়েড বলে ৷ এই স্টেরয়েডেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে । শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস মুখে মাখার জেরে সমস্যা দেখা দিতে পারে । শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস খাওয়া বা মুখে লাগানো ক্ষতিকর ।"

মানুষ কী ভাবে সচেতন হবেন? মানুষ কী ভাবে বুঝবেন?

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "সচেতন হওয়ার জন্য পড়াশোনা করতে হবে । মুখে কোনও কিছু ব্যবহার করার আগে ভাবতে হবে । মুখে ব্যবহারের আগে শরীরের অন্য কোথাও লাগিয়ে দেখতে হবে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না । সাধারণত হাতে লাগিয়ে দেখা হয় । মুখে বা মাথার চুলে কোনও কসমেটিকস ব্যবহারের আগে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে হবে । না হলে সৌন্দর্য বৃদ্ধির বদলে সৌন্দর্যহানি হতে পারে । কোনও কসমেটিক্সে দাবি করা হতে পারে ব্যবহার করলে ফর্সা হওয়া যায় । তার মানে এর মধ্যে হাইড্রোকুইনিন জাতীয় কিছু ওষুধ দেওয়া রয়েছে । এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক ।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "চোখ-কান খোলা রাখতে হবে । যেমন, ময়শ্চারাইজ়িংয়ের ক্রিমে খুব একটা ক্ষতি হয় না । বিভিন্ন ধরনের ময়শ্চারাইজ়িং ক্রিম রয়েছে । কোনও কোনও ক্রিমের জন্য ইনস্টা গ্লো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় । ইনস্টা গ্লো মানে এমন কিছু ব্যবহার করছে, যেটা ত্বকের ক্ষতি করতে চলেছে । উৎসব হোক বা অন্য যে কোনও সময়, সব সময় সতর্ক থাকতে হবে । অ্যাজ়মা, অ্যালার্জির প্রবণতা আছে কি না । বা কোনও অ্যালার্জির বিষয়টি জানা আছে কি না যেমন, চোখ-নাক দিয়ে জল পড়ে কি না, এগুলির মূল্যায়ন করা খুবই দরকার ।" চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাজার চলতি বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয় বলে তিনি জানিয়েছেন ।

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরি বলেন, "মুখ আমার, মুখের সৌন্দর্য আমার । না জেনে বুঝে মুখে কসমেটিক্স ব্যবহার করবেন না । কোনও কসমেটিক্স ব্যবহার করে সৌন্দর্য আনা যায় না । সময় মতো সুষম খাবার, সময় মতো ঘুম, সময় মতো শরীরচর্চা এবং মুখ সাধারণভাবে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখলে সৌন্দর্য বজায় থাকে ।" দীর্ঘ বছর ধরে যে সব ক্রিম বাজারে রয়েছে, সেগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন ।

Intro:কলকাতা, ১৩ অক্টোবর: রানি ক্লিওপেট্রার যুগ কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কালের নিয়মে, সৌন্দর্যের চর্চায় বাজারে রয়েছে এখন হরেক কিসিমের আয়োজন। তবে, চিকিৎসকরা বলছেন, বিপদ লুকিয়ে রয়েছে এ সব কসমেটিক্সে। যার জেরে ক‍্যানসারের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে প্রাণসংশয়ও রয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের আশ্বাস, মুখ আপনার, মুখের সৌন্দর্যও আপনার। আর, এই সৌন্দর্য এনে দিতে পারে না কসমেটিক্স।


Body:কসমেটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও বিপদ রয়েছে? কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "নিশ্চয়ই। কসমেটিক্স সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা প্রত্যেক মানুষের কাম্য।" কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "কসমেটিক্স সব সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে।"

সুন্দর হওয়ার স্বপ্ন বোধ হয় প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু হয়েছে। দুধের সর থেকে শুরু করে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে এমন বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে নিজেকে সুন্দর রাখতেন রানি ক্লিওপেট্রা। সেই যুগ থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরের রূপচর্চা। এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "দুঃখের কথা, এই সুন্দরের জন্য আমাদের যে প্রচেষ্টা, তা করতে গিয়ে বিশাল ইন্ডাস্ট্রি জড়িয়ে গিয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার মার্কেট। এর ফলে সবাই চায় তাড়াতাড়ি এর রেজাল্ট দিতে। তাড়াতাড়ি অতীব সুন্দর করতে। এর ফলে, যেসব ক্রিম চালু রয়েছে, সেসব পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে স্টেরয়েডস। এই টপিক্যাল স্টেরয়েডস বা এই ওষুধ যদি যদি ত্বকে লাগানো হয়। এর ফলে, ত্বক পাতলা হয়ে যায়, ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়। এর ফলে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে থাকে। এগুলো সাইড এফেক্টস।"

মুখের ত্বকের যে বিন্যাস, কারও খুব তেলতেলে কারও খুব শুকনো, কারও মুখে হয়তো ব্রণ হয়ে রয়েছে, কারও মুখে হয়তো মেচেতার ছোট ছোট দাগ হয়ে রয়েছে।
নিজেকে সাজিয়ে তোলার জন্য প্রেরণা মানুষের মন থেকে আসে। উৎসব অনুষ্ঠানে এই প্রেরণা আরও বেশি করে আসে। শিক্ষার যে পদ্ধতি, তাতে কসমেটোলজি ঠিক ঠিক পড়ানো হয় না। কেমন ভাবে মুখ পরিষ্কার রাখা হবে, সুন্দর রাখা হবে, এগুলি কখনোই পড়ানো হয় না। বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয়, বিজ্ঞাপনে দিয়েছে এই জিনিসটি ব্যবহার করে মডেলের মতো সুন্দর হয়ে ওঠা যাবে। এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "মুখ শুধুমাত্র কোনও কসমেটিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর হয়ে ওঠে না। মুখ আসলে মন এবং শরীরের বহিঃপ্রকাশ। একটি অসুস্থ মানুষের উপর যদি প্রলেপ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে কি খুব সুন্দর দেখতে লাগবে? হবে না, উল্টে যেটা হবে, যে জিনিসগুলো দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে, সে সবের যে কম্পোজিশন, সেগুলির অনেকগুলিতে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। অনেকগুলিতে অ্যাবজরশন হয়ে ক্যান্সার হতে পারে।" তিনি বলেন, "ধরুন, মাথার চুলে রং করা হল, তাতে পিপিডিএ থাকে। এটা অ্যাবজরভ হয়ে কিডনির ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। কিডনির কাজ কমিয়ে দিতে পারে।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "চুলে বিভিন্ন ধরনের কলপ আমরা ব্যবহার করি। এর মধ্যে রয়েছে পিপিডি। এই পিপিডি অনেক সময় শুধুমাত্র মুখে অ্যালার্জি নয়, অনেক সময় এটা জীবনকে বিপজ্জনক অবস্থার সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। ট্যাটু করাতে গিয়ে মৃত্যু বা শ্বাসকষ্ট, এটাও হয়েছে। ট্যাটু করাতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও হতে পারে।" তিনি বলেন, "যতদূর সম্ভব মেডিকেল অ্যাপ্রুভড এমন জিনিস ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করতে হবে। তাতে কোনও প্রবলেম হবে না। কিন্তু, হঠাৎ যদি আমরা বাজার চলতি কসমেটিকসের বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে পড়ি, তাহলে বিপদ ডেকে আনছি। এই সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে বহু রোগী আসছেন। সৌন্দর্যের পিছনে দৌড়ানো খুবই ভালো। যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। কিন্তু যুক্তির সঙ্গে জিনিসটি যতটা বিজ্ঞানসম্মতভাবে হবে, ততটাই ভালো।"

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "ধোঁয়ার বিষয় যেখানে ছোটবেলা থেকে ভালোভাবে আমাদের শেখা হয়নি, সেখানে আমরা বিজ্ঞাপন দেখে প্রলেপ লাগিয়ে যাচ্ছি। মুখে কতটা সানস্ক্রিন লাগানো হলে তা প্রটেকশন দেয়, তা জানি না। যদিও সব কিছু ক্যালকুলেটেড। তেমনই শারীরিক সুস্থতা বাদ দিয়ে মুখের যে সৌন্দর্য, সেটা সম্ভবপর নয়। সেটা মানুষ ভুলে গিয়ে কোনও কোনও ক্রিমের পিছনে দৌড়য়। এই ক্রিম যারা তৈরি করে, তারা মার্কেট খোঁজে বেশি বিক্রির জন্য। সেই জন্য যে বয়সে ময়শ্চারাইজার দরকার নেই, যেমন ১৫ বছরের কোনও কিশোরী, তার জন্যেই যেমন ময়শ্চারাইজার। তেমনই, ৫০ বছর বয়সি কোনও মহিলার রুক্ষ-সুক্ষ্ম ত্বকের জন্যেও ময়শ্চারাইজার। ২০ বছর বয়সি কোনও মহিলা বা পুরুষ, যার টোন আপের দরকার নেই, তার জন‍্য টোনার। আবার, ৫০ বছরেও টোনার।"

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "বয়সের ভেদ অনুযায়ী শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, সেই অনুযায়ী হিসাব করা নেই। সবকিছু আন্দাজে চলছে। যেমন কোনও কোনও ক্রিম লাগালে, খুব টানটান হয়ে ওঠে মুখ। বেশ সুন্দর লাগে। এই ধরনের ক্রিম ব্যবহারের ফলে কিছুদিন পরে রোম তৈরি হয়, ছোট ছোট ব্রণ হয়। এভাবে প্রকারান্তরে বলে দেওয়া হচ্ছে এই ক্রিমের মধ্যে পুরুষ-হরমোনের মতো কিছু দেওয়া আছে। তেমনই অনেক ব্রণ তৈরি হচ্ছে, মুখের চামড়া পাতলা হয়ে যাচ্ছে, দাগ হয়ে যাচ্ছে। প্রকারান্তরে এটা বলছে এই ক্রিমের মধ্যে স্টেরয়েড জাতীয় কিছু দেওয়া রয়েছে। সব সময় হিউম্যান স্টেরয়েড হতে হবে এমন কোনও কথা নেই। প্রকৃতিতে অনেক ধরনের স্টেরয়েড রয়েছে। এই ধরনের স্টেরয়েড ফাইটো স্টেরয়েড বলে। এই স্টেরয়েডেরও পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস মুখে মাখার জেরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুদ্ধিকরণ ছাড়া অ্যালোভেরার নির্যাস খাওয়া বা মুখে লাগানো ক্ষতিকর।"



Conclusion:মানুষ কীভাবে সচেতন হবেন? মানুষ কীভাবে বুঝবেন? চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "সচেতন হওয়ার জন্য পড়াশোনা করতে হবে। মুখে কোনও কিছু ব্যবহার করার আগে ভাবতে হবে। মুখে ব্যবহারের আগে শরীরের অন্য কোথাও লাগিয়ে দেখতে হবে কোনও পার্শপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না। সাধারণত হাতে লাগিয়ে দেখা হয়। মুখে বা মাথার চুলে কোনও কসমেটিকস ব্যবহারের আগে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে হবে। না হলে সৌন্দর্য বৃদ্ধির বদলে সৌন্দর্যহানি হতে পারে।" এই চিকিৎসক বলেন, "কোনও কসমেটিক্সে দাবি করা হতে পারে ব্যবহার করলে ফর্সা হওয়া যায়। তার মানে এর মধ্যে হাইড্রোকুইনিন জাতীয় কিছু ওষুধ দেওয়া রয়েছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক।"

চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, "চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। যেমন, ময়শ্চারাইজিংয়ের ক্রিমে খুব একটা ক্ষতি হয় না। বিভিন্ন ধরনের ময়শ্চারাইজিং ক্রিম রয়েছে। কোনও কোনও ক্রিমের জন্য ইনস্টা গ্লো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ইনস্টা গ্লো মানে এমন কিছু ব্যবহার করছে, যেটা ত্বকের ক্ষতি করতে চলেছে।" তিনি বলেন, "উৎসব হোক বা অন্য যে কোনও সময়, সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। অ্যাজমা, অ্যালার্জির প্রবণতা আছে কি না। বা, কোনও অ্যালার্জির বিষয়টি জানা আছে কি না যেমন, চোখ-নাক দিয়ে জল পড়ে কি না, এগুলির মূল্যায়ন করা খুবই দরকার।" চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাজার চলতি বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, "মুখ আমার, মুখের সৌন্দর্য আমার। না জেনে বুঝে মুখে কসমেটিকস ব্যবহার করব না।" তিনি বলেন, "কোনও কসমেটিকস ব্যবহার করে সৌন্দর্য আনা যায় না। সময়মতো সুষম খাবার, সময় মতো ঘুম, সময় মতো শরীরচর্চা এবং মুখ সাধারণভাবে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখলে সৌন্দর্য বজায় থাকে।" দীর্ঘ বছর ধরে যে সব ক্রিম বাজারে রয়েছে, সেগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
_______


বাইট:
wb_kol_01a_skin_cosmetics_bite_7203421
কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক সুদীপ দাস।


wb_kol_01b_skin_cosmetics_bite_7203421
কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক সত্যেন্দ্রনাথ চৌধুরী।

_______






Last Updated : Oct 14, 2019, 12:41 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.