কলকাতা, 12 অগস্ট: কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিজেপির তল্পিবাহক হিসাবে কাজ করছে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদেই পথে তৃণমূল (TMC Rally)। আজ ও কাল রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে নামছে তৃণমূল । তবে শুক্রবার রাজ্যের শাসক দলের তরফ থেকে স্পষ্টবার্তা দেওয়া হয়েছে, কোনও তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে এই মিছিল নয় । বা অভিযুক্ত নেতার সমর্থনেও মিছিল নয় । এ ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস তদন্ত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চায় না । আইন আইনের পথেই চলবে । তবে তৃণমূলের প্রতিবাদ কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলিকে যেভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেভাবে বিরোধী দলগুলিকে রোখার জন্য এই এজেন্সি গুলি কাজ করছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েই এই কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল (Anubrata Mondal)।
প্রসঙ্গত এ দিন তৃণমূল কংগ্রেসের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দল বাম-কংগ্রেস-বিজেপি । কোনও কোনও রাজনৈতিক দল তো এক ধাপ এগিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, "আপনারা গরু চুরি কয়লা চুরিতে অভিযুক্ত নেতাদের সমর্থনে মিছিলে নামবেন না ।" এ দিন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, "যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী ছিলেন তখন সিবিআই চাই বলে রোজ দিন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতেন । কুকুর বেড়াল মরে গেলেও তিনি সিবিআই-এর দাবি জানাতেন । আজ সেই সিবিআই খারাপ হয়ে গেল । যখন সিবিআই এবং ইডি নিয়ম করে ওদের বাড়ি থেকে টাকা বের করছে তখন সিবিআই খারাপ হয়ে গেল । আমি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আপনারা পথে নামবেন না । পার্থ বাবু জুতো খেয়েছেন । কেষ্ট জুতো খেয়েছেন । এ বার জুতো আপনাদের জন্যও বরাদ্দ হতে পারে । যদি মা-বাবার সম্মান রাখতে চান চোরদের জন্য রাস্তায় বের হবেন না ।"
আরও পড়ুন: অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে বীরভূমের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক
এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী জানিয়েছেন, "কী কারণে রাস্তায় নামছে তা তো আমার জানা নেই । তবে এটা নির্লজ্জতার একটা জ্বলন্ত উদাহরণ । যদি তৃণমূল কংগ্রেস রাস্তায় নেমে বলে দুর্নীতিমুক্ত বাংলা চাই, চোরমুক্ত বাংলা চাই, তাহলে ভালো লাগবে ৷ কিন্তু কাকে বাঁচাতে রাস্তায় নামা হচ্ছে ! যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ৷ আমি সাধারণ মানুষকে বলব আপনারা রাস্তায় নামার আগে আরও একবার ভাবুন ।"
এ দিন অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেসের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন । তিনি বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বকে বলছি, "আপনারা দ্বিচারিতা থেকে সরে আসুন । আপনাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যখন ইডি-সিবিআই লাগছে তখন অবস্থান ও ধরনা করছেন । সেই ইডি সিবিআই যখন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের বিব্রত করছেন, তখন আপনারা আনন্দ করছেন । আমি একটা কথা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই । আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আমাদের দলের নেতা তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপোষ নয় । কেউ দুর্নীতি করলে তার পাশে দল দাঁড়াবে না । আমরা কারও দুর্নীতিকে আড়াল করতে পথে নামছি না । কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে বিজেপি । তৃণমূল কংগ্রেস সে জন্য পথে নামছে ৷ আমরা তদন্তের হস্তক্ষেপ করতে না চাইলেও তদন্তের কার্যপদ্ধতি নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন রয়েছে । তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সি যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে সেই জন্যই এই কর্মসূচি । কাউকে বাঁচাতে কাউকে আড়াল করতে এই কর্মসূচি নয় ।"