ETV Bharat / city

চলতি বছর বেকার ছাড়াবে 50 লাখ, আশঙ্কা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর - asim dasgupta interview

অসীমবাবুর মতে, কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক উলটো বুঝছেন ৷ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকলেই মনে করছেন এটা সাময়িক ব্যাপার ৷ তাঁরা কেউ চাহিদার ঘাটতির বিষয়টি দেখতে পারছেন না ৷

অসীম দাশগুপ্ত
author img

By

Published : Sep 14, 2019, 8:28 PM IST

Updated : Sep 14, 2019, 8:43 PM IST

কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর : চলতি বছরে বেকারের সংখ্যা 50 লাখ ছাড়াবে ৷ খুব বেশিদিন অর্থনীতির এই বেহাল অবস্থা চললে দেশ ও রাজ্য সাময়িক সংকট থেকে মেয়াদি মন্দার দিকে চলে যাবে ৷ দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে একথাই বললেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত ৷

আজ ETV ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, "চাহিদার ঘাটতি বেহাল অর্থনীতির মূল কারণ ৷ এর ফলে উৎপাদনের পাশাপাশি কমে যায় কর্মসংস্থান ৷ ফলে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ কাজ হারান বা সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেন ৷ এই তথ্য প্রমাণিত ৷ পাঁচ বছর আগে মাসিক আয় বৃদ্ধি ছিল সাত শতাংশ হারে ৷ এখন তা নেমে এসেছে মাত্র তিন শতাংশে ৷ " কৃষি, শিল্প ও ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক ঘাটতি দেখা গেছে ৷ এই পরিস্থিতি ঠিক কি করা উচিত, সেটা কেন্দ্র সরকার বুঝতে পারছেন না ৷ অসীমবাবুর মতে, কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক উলটো বুঝছেন ৷ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকলেই মনে করছেন এটা সাময়িক ব্যাপার ৷ তাঁরা কেউ চাহিদার ঘাটতির বিষয়টি দেখতে পারছেন না ৷ সেচ ব্যবস্থার উন্নতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করলে দেশের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : রাজীবের হদিশ পেল না CBI

শুনুন অসীম দাশগুপ্তর বক্তব্য

অসীমবাবু জানান, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে, গ্রামাঞ্চলের জাতীয় কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি টাকা দেওয়া উচিত গরিব মানুষের জন্য ৷ শহরেও কর্ম নিশ্চয় প্রকল্প গড়ে তোলা উচিত ৷ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ দানের পরিমাণ বাড়ানো উচিত ৷ তাহলে বহনশীল স্বনির্ভর উৎপাদন আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে ৷ সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের রাজনীতি, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বেশি ব্যস্ত ৷ রাজ্যে শিল্পায়ন নেই, কর্মসংস্থান নেই, বেকারত্ব বেড়ে চলেছে, সেদিকে নজর নেই ৷ দেশের সরকার ভুল পথে হাঁটছে ৷"

কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর : চলতি বছরে বেকারের সংখ্যা 50 লাখ ছাড়াবে ৷ খুব বেশিদিন অর্থনীতির এই বেহাল অবস্থা চললে দেশ ও রাজ্য সাময়িক সংকট থেকে মেয়াদি মন্দার দিকে চলে যাবে ৷ দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে একথাই বললেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত ৷

আজ ETV ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, "চাহিদার ঘাটতি বেহাল অর্থনীতির মূল কারণ ৷ এর ফলে উৎপাদনের পাশাপাশি কমে যায় কর্মসংস্থান ৷ ফলে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ কাজ হারান বা সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেন ৷ এই তথ্য প্রমাণিত ৷ পাঁচ বছর আগে মাসিক আয় বৃদ্ধি ছিল সাত শতাংশ হারে ৷ এখন তা নেমে এসেছে মাত্র তিন শতাংশে ৷ " কৃষি, শিল্প ও ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক ঘাটতি দেখা গেছে ৷ এই পরিস্থিতি ঠিক কি করা উচিত, সেটা কেন্দ্র সরকার বুঝতে পারছেন না ৷ অসীমবাবুর মতে, কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক উলটো বুঝছেন ৷ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকলেই মনে করছেন এটা সাময়িক ব্যাপার ৷ তাঁরা কেউ চাহিদার ঘাটতির বিষয়টি দেখতে পারছেন না ৷ সেচ ব্যবস্থার উন্নতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করলে দেশের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : রাজীবের হদিশ পেল না CBI

শুনুন অসীম দাশগুপ্তর বক্তব্য

অসীমবাবু জানান, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে, গ্রামাঞ্চলের জাতীয় কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি টাকা দেওয়া উচিত গরিব মানুষের জন্য ৷ শহরেও কর্ম নিশ্চয় প্রকল্প গড়ে তোলা উচিত ৷ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ দানের পরিমাণ বাড়ানো উচিত ৷ তাহলে বহনশীল স্বনির্ভর উৎপাদন আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে ৷ সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের রাজনীতি, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বেশি ব্যস্ত ৷ রাজ্যে শিল্পায়ন নেই, কর্মসংস্থান নেই, বেকারত্ব বেড়ে চলেছে, সেদিকে নজর নেই ৷ দেশের সরকার ভুল পথে হাঁটছে ৷"

Intro:চলতি বছরে নতুন করে দেশে ৫০ লক্ষ বেকারত্বের সৃষ্টি হবে। আজ উদ্বিগ্ন হয়ে দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ডঃ অসীম দাশগুপ্ত।
খুব বেশিদিন অর্থনীতির এই বেহাল অবস্থা চললে, দেশ এবং রাজ্য সাময়িক সংকট থেকে মেয়াদী মন্দার দিকে চলে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁর।


Body:প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের রাজনীতি, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বড় বেশি ব্যস্ত। রাজ্য শিল্পায়ন নেই, কর্মসংস্থান নেই, বেকারত্ব বেড়ে চলেছে নজর নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। দেশের সরকার ভুল পথে হাঁটছে বলে আজ মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ সহজ নয়। দেশে এবং রাজ্যে অর্থনীতির যে অধো গতি লক্ষ করা যাচ্ছে, তা প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করছে। সারা দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির হার নজিরবিহীনভাবে কমেছে। বছরের প্রথম তিন মাসে এই অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ১০ বছরে সর্বনিম্ন বৃদ্ধির হার এটি। গত বছরের যা ছিল ৮ শতাংশ এবছর নেমে হয়েছে তা ৫ শতাংশ। ধারাবাহিকভাবে কমেছে বৃদ্ধির হার। অসীম দাশগুপ্তের আশঙ্কা বৃদ্ধির হার আরও কমলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। মোটরগাড়ি, ধাতু, শিল্প, রাসায়নিক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প এমনকি বিস্কুট উৎপাদন শিল্পেও বেহাল অর্থনীতির প্রভাব পড়েছে।
কেবলমাত্র উৎপাদন শিল্পে নয়। কৃষিতেও দুই শতাংশের নীচে বৃদ্ধির হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বেকারত্ব বাড়বে আরও। চলতি বছরে দেশে ৫০ লক্ষ মানুষ বেকার হবে বলে অনুমান অসীম দাশগুপ্তের। কেবলমাত্র মোটরযান শিল্পে ১০ লক্ষ নতুন বেকার সৃষ্টি হবে।
চাহিদার ঘাটতি বেহাল অর্থনীতির মূল কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন অসীম দাশগুপ্ত। এর ফলে উৎপাদন কমে যায়। কর্মসংস্থান কমে যায়। যার ফলে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ কাজ হারায় বা সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেয়। মাসিক আয় বৃদ্ধি ছিল যেখানে ৭ শতাংশ হারে, ত্রৈমাসিক বৃদ্ধি। এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ৩ শতাংশে। মানুষের কেনার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। চাহিদার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার উল্টো বুঝেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ড‍‌ঃ অসীম দাশগুপ্ত। ঋণের ক্ষেত্রে ঘাটতির সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী ভুল যুক্তি দিচ্ছেন মোটরগাড়ি শিল্পের উৎপাদন কমে যাওয়ায় যা চূড়ান্ত হাস্যকর। বিদেশে এরাজ্যের উৎপাদন রপ্তানি করতে পারলে অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হত। মানুষের সঞ্চয়, ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়া যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তাহলে এই সাময়িক সংকট মেয়াদী মন্দার দিকে চলে যাবে। ভয়াবহ হবে দেশ এবং রাজ্যের অবস্থা। গ্রামের মানুষের আয়, নজিরবিহীনভাবে কমে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। পাঁচ বছর আগে গ্রামের মানুষের হাতে উৎপাদিত অর্থের পরিমাণ যা আসতো এখন তা কমে ৩ শতাংশতে পৌঁছেছে। ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে থাকেন। তাদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে নিদান দেন তিনি। গরিব কৃষককে জমি দিতে হবে। সেচ ব্যবস্থার উন্নতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করলে দেশের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বামপন্থীদের মত বড় ভূমি সংস্কার করতে না পারলেও, যে জমিতে কৃষক আছে তাকে সেই জমির মালিকানা দিতে হবে। সেই জমিতে কৃষক তার উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। সেচের ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি হবে। কারণ এখনও সেচের জল পায় না ৫০ শতাংশ।
সেচে জল বৃদ্ধি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নজর দেওয়া উচিত। গ্রাম অঞ্চলের জাতীয় কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে কেন্দ্র সরকারের সরাসরি টাকা দেওয়া উচিত গরীব মানুষের জন্য। শহরেও কর্ম নিশ্চয় প্রকল্প গড়ে তোলা উচিত। বামফ্রন্ট সরকার শেষ বছরে যা করেছিল। পরিতাপের বিষয় এখন সেটা আবার বন্ধ হয়ে গেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অসীম দাশগুপ্ত।
মাঝারি ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ দানের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে বহনশীল স্বনির্ভর উৎপাদন আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
এইভাবে যদি দেশের অর্থনীতি ক্রমশ নিম্নগামী হয় তাহলে বড় মন্দার দিকে চলে যাবে সমগ্র দেশ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। দিল্লির সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, অনেক হলো বিভাজনের রাজনীতি। নাগরিকপঞ্জির বিষয়টি এখন দূরে সরিয়ে রাখুন কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ না ঘটিয়ে, দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।


Conclusion:
Last Updated : Sep 14, 2019, 8:43 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.