কলকাতা, 22 জুন : আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না-দিয়েই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, এমন দাবি করে এবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Avijit Ganguly) নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করলেন চাকরি খোয়ানো শিক্ষিকা ।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় (Primary Recruitment Scam Case) ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় 13 জুন 269 জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন । যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়ে গেল, তাঁরা কি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলার সুযোগ পেয়েছিলেন ? তাঁদের কারও বক্তব্য না শুনেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কীভাবে একতরফা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিলেন ? প্রশ্ন তুলেছেন ওই মামলাকারী ।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, 2014 সালে টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় । 2017-র 1 জুন টেটের ফলাফল প্রকাশিত হয় । জয়িতা তথ্যের অধিকার আইনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে জানতে চান তাঁর প্রাপ্ত নম্বর কত । উত্তরে পর্ষদের পক্ষ থেকে তাঁকে উত্তরপত্র-সহ তথ্য প্রদান করা হয় । সেখানে দেখা যায় জয়িতা সঠিক উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও পর্ষদ এক নম্বর কম দিয়েছে । সেই এক নম্বর পাওয়ার জন্য পর্ষদের কাছে আবেদন করেন তিনি । পর্ষদ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না-করায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন ।
আদালতে মামলা দায়েরের কপি পর্ষদে পৌঁছনোর পরেই জয়িতার আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে এক নম্বর দেওয়া হয় । তিনি নিয়োগপত্র পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন । পর্ষদ 2017-র 5 ডিসেম্বর জয়িতার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয় ।
যাবতীয় বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Board Of Primary Education) আইনজীবীর জানা থাকলেও নিয়োগ বাতিল মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেননি তিনি । মামলাকারী গত 13 জুন মামলার শুনানিতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি । বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ 269 জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়ে দেন ওইদিন । মামলাকারী জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সমস্ত তথ্য প্রমাণ-সহ বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছেন যে তাঁর বক্তব্য না-শুনেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে ।
মামলাকারীর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘এক নম্বর বৃদ্ধির পর প্রার্থীর চাকরি হয়েছিল । কীভাবে তিনি এই নম্বর পেলেন, তা প্রার্থীর থেকে জানতে না চেয়ে, তাঁর বক্তব্য কিছু না শুনেই সিঙ্গেল বেঞ্চ কীভাবে একজন প্রার্থীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করল ? আমরা এই সমস্ত তথ্য ডিভিশন বেঞ্চের কাছে তুলে ধরব ।"
আরও পড়ুন : Primary Recruitment Scam : মানিক ভট্টাচার্যের সম্পত্তির হিসাব চাইল হাইকোর্ট