কলকাতা, 10 ডিসেম্বর : তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই এখন ৷ বরং এই মুহূর্তে রাজ্যের পয়লা নম্বর প্রতিপক্ষ তিনি ৷ অথচ মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করতে গিয়ে অতীতকে টেনে আনছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari criticizing Mamata Banerjee) ৷ ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার ৷ নদিয়ার কৃষ্ণনগরের সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা (Mamata Banerjee warns Mahua Moitra) ৷ যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চলছে নানা জল্পনা ৷ আর এই সুযোগেই রাজনীতির ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের অপমান করে নিজের ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেন ৷ আমার তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার পিছনে এটিও একটি অন্যতম কারণ ছিল ৷ মানুষের আত্মসম্মান রয়েছে ৷ লাইভ হচ্ছে, তাঁর পিতা-মাতা দেখছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীর কোনও বোধবুদ্ধি নেই ৷’’
আরও পড়ুন : Mamata to Mahua on TMC inner conflict : তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে মহুয়াকে কড়া বার্তা মমতার
আপাতত বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শাসক-বিরোধী তরজা চলছে ৷ এই প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের কে ? ওঁর কথায় কী যায় আসে ! তৃণমূল ছেড়ে গেলেও দলটাকে ভুলতে পারছেন না শুভেন্দু ৷ তাই পুরনো দলের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন ৷ কিন্তু তিনি যা বলছে তা আদৌ সত্যি নয় ৷ তাঁকে দল সবরকম সম্মান দিয়েছিল, অধিকার দিয়েছিল, উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল ৷ তিনি তাঁর বিরুদ্ধেই ছুরিকাঘাত করেছেন ৷ কাজেই তাঁর মুখে এসব বক্তব্য মানায় না ৷’’
এদিকে, এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘যথার্থই বলেছেন শুভেন্দু ৷ রাজ্যের পুলিশ ও আমলাদের, জনপ্রতিনিধিদের যেভাবে মাননীয়া প্রকাশ্যে ধমক দেন, তা কখনওই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এক্ষেত্রে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন মাত্র ৷ এরমধ্যে রাজনীতির তো কিছু দেখছি না ৷’’
আরও পড়ুন : Mahua Moitra Tweet Controversy : আদানিদের নিয়ে করা পুরনো টুইট মোছেননি, দাবি মহুয়ার
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে প্রকাশ্যে ধমক দিয়ে কাজে গতি আনার চেষ্টা করছেন ৷ তবে যেহেতু এক্ষেত্রে তিনি তাঁর দলের নেতাদের সমালোচনা করছেন, তাই তা নিয়ে কারও কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না ৷ তবে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষক অমল মুখোপাধ্যায় মনে করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এমনটি না করলেই ভাল করতেন ৷ কিন্তু ওঁর দলের নেতাকর্মীরা জানেন, তিনি এমনই করেন ৷ তাই তাঁদের খারাপ লাগার কথা নয় ৷ শুভেন্দু যে কথাগুলি বলেছেন, তার যথার্থতা থাকলেও তৃণমূলে থাকাকালীনই তিনি এই কথাগুলি বলতে পারতেন ৷ তাহলে তাঁকে আর শুনতে হত না যে তিনি ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন ৷’’
