কলকাতা, 21 জুলাই : ‘‘বাংলা থেকে উপড়ে ফেলতে যা করার, শুভেন্দু সব করবে...!’’ 21 জুলাই বিজেপির ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস’ কর্মসূচির মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে সমূলে উপড়ে ফেলার ডাক দিলেন তিনি ৷ সেই সঙ্গে এ দিনের ভাষণে প্রতিনিয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘নন এমএলএ’ মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে কটাক্ষ করে গেলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক ৷
আজ 21 জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবস ৷ সেই দিনটিতে এবার পাল্টা ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস’ হিসেবে পালন করল বিজেপি ৷ যেখানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের সঙ্গে মিলিয়ে, একই সময়ে নিজের বক্তব্য রাখলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ যেখানে রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে প্রতিপদে তৃণমূল তথা রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীকে বিঁধলেন শুভেন্দু ৷ অভিযোগ করলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্রয়ে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতীরা বাংলায় বিজেপি তথা শান্তি প্রিয় বাঙালির অস্তিত্ব বিপন্ন করতে সচেষ্ট হয়েছে ৷
এদিন বিজেপির ভার্চুয়াল এই সভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূল সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়া এবং আতঙ্কে থাকা বিজেপি কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে, শুভেন্দু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গাল সে ইসকো উখাড় ফেক নে কে লিয়ে জো করনা হ্যায়, শুভেন্দু সব করেগা..!’’ তাঁর এই হিন্দি ভাষণে হেস্টিংস এর কার্যালয়ের সভাঘর করতালিতে ভরে ওঠে ৷ এখানেই থামেননি শুভেন্দু ৷ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে বাংলার ঐতিহ্যের পক্ষে লজ্জার বলে উল্লেখ করেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের 5 বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চের নির্দেশে রাজ্য ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৷ সেই রিপোর্ট পেশ করে আদালতে কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল, ‘‘বাংলায় শাসকের আইন চলে, আইনের শাসন চলে না ৷’’ এ দিনের সভায় সেই বক্তব্যকে উল্লেখ করে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে বিঁধছেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তাঁর কথায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই মন্তব্য বাংলার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ৷
আরও পড়ুন : Supreme Court : সুয়োমোটো করে দেশকে 'বাঁচাতে' সুপ্রিম কোর্টকে আবেদন মমতার
তবে, এদিন ভাষণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দুর নিশানায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ নন্দীগ্রাম ভোটে মমতার হার এবং বিধায়ক না হয়েও তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় মমতাকে কার্যত কটাক্ষ করেন শুভেন্দু ৷ চাঁচাছোলা ভাষায় মমতাকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যার এক কান কাটা হয়, সে রাস্তার একপাশ দিয়ে চলে ৷ আর যার দু’কান কাটা হয়, সে রাস্তার মাঝখান দিয়ে যায় ৷ আর এই হেরো নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রী সরকার চালাচ্ছে ৷ যে কোভিডের মধ্যে লকডাউন তুলে দিয়েছে ৷ বন্ধ কী? শুধু রেল বন্ধ রয়েছে ৷ রেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে মাননীয়া খুশি হন ৷ স্কুল-কলেজ বাদে সব খোলা ৷ ভ্যাকসিন-কাণ্ড বলা যাবে না ৷’’
আরও পড়ুন : নিজেদের স্বার্থ ভুলে এক হতে হবে, বিজেপি বিরোধীদের বৈঠক ডাকার প্রস্তাব মমতার
পাশাপাশি বিধানসভার উপনির্বাচন করানো নিয়ে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের তরফে নির্বাচন কমিশনকে প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হচ্ছে ৷ যা নিয়ে এদিন তৃণমূলকে ল্যাম্পপোস্ট বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু ৷ তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে 110টা পৌরসভা ও পৌরনিগমে ভোট করাচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এমনকি গত 4 বছর ধরে রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র ভোট হয়নি ৷ কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুরে উপনির্বাচন করাতে উঠে পড়ে লেগেছেন ৷ কারণ তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যা ছাড়া বাকি সবাই ল্যাম্পপোস্ট বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু ৷