কলকাতা, 7 জানুয়ারি: কোনও পড়ুয়াকে বাংলার শিক্ষা পোর্টালে স্টুডেন্ট আইডি-র অভাবে স্কুলে ভরতি নিতে অস্বীকার করা যাবে না । শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) থেকে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের পঞ্চম শ্রেণিতে এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র (এমএসকে) থেকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের নবম শ্রেণিতে ভরতি নিচ্ছে না অনেক স্কুল । এমন একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এই কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে ।
গতকাল স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনার অনিন্দ্য নারায়ণ বিশ্বাস এসএসকে, এমএসকে-র পড়ুয়াদের ভরতি নিয়ে রাজ্যের সব জেলার প্রাথমিক ও সেকেন্ডারি জেলা পরিদর্শকদের উদ্দেশে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন । সেখানে তিনি প্রথমেই জানিয়েছেন, রাজ্যের এসএসকে ও এমএসকে-গুলি প্রশাসনিকভাবে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনে চলে এসেছে । তাই স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ প্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক স্কুলগুলির নিয়ম অনুযায়ী ওই কেন্দ্রগুলির পড়ুয়াদের ভরতির প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে । তারপরেই বলা হয়েছে, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে অভিযোগ এসেছে যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ অনেকগুলি স্কুলে এসএসকে থেকে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ ও এমএসকে থেকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের পঞ্চম ও নবম শ্রেণিতে ভরতি নিতে অস্বীকার করা হচ্ছে । কারণ, ওই পড়ুয়াদের বাংলার শিক্ষা পোর্টালে কোনও আইডি নেই । শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে এমন যে কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ুয়ারা উত্তীর্ণ হলে তারা যে কোনও উপযুক্ত স্কুলে ভরতির যোগ্য বলে বিবেচিত হয় । তাই এই সকল পড়ুয়ারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ যে কোনও স্কুলে উপযুক্ত স্তরে ভরতি হওয়ার যোগ্য । তাই রাজ্যের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জেলা পরিদর্শকদের বলা হয়েছে তাঁদের অধীনস্থ স্কুলগুলিকে নির্দেশ দিতে, যাতে যে সকল পড়ুয়ার পোর্টালে আইডি নেই, বর্তমান নিয়ম মেনে তাঁদেরকে নতুন করে ভরতি নেওয়া যায় । এক্ষেত্রে এসএসকে, এমএসকে, প্রাইভেট স্কুল এবং অন্য ম্যানেজমেন্ট দ্বারা পরিচালিত স্কুলের পড়ুয়াদের কথাও বলা হয়েছে । স্টুডেন্ট এন্ট্রি মডিউলের মাধ্যমে ওই পড়ুয়াদের 2021 সালে বাংলার শিক্ষা পোর্টালের অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে ।
নির্দেশিকায় স্পষ্টভাষায় বলা হয়েছে, বাংলার শিক্ষা পোর্টালে স্টুডেন্ট আইডি না থাকার জন্য কোনও পড়ুয়াকে ভরতি নিতে অস্বীকার করা যাবে না । যদিও, প্রধান শিক্ষক মহলের বক্তব্য, এসএসকে, এমএসকে বা মাদ্রাসাগুলি যেহেতু সরকারি তাই ওই প্রতিষ্ঠানগুলির পড়ুয়াদের তথ্যও বাংলার শিক্ষায় আপলোড করার ব্যবস্থা করলে বছর বছর আর এভাবে নির্দেশিকা জারি করতে হয় না স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে ।
স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি বলেন, "অন্য কোনও স্কুল থেকে পড়ুয়া এলে যেহেতু তাদের তথ্য আগে থেকেই আপলোড করা থাকে, তাই একটা ক্লিকেই তাদের পরবর্তী ক্লাসে ভরতি নিয়ে নেওয়া যায় । আর এসএসকে, এমএসকে বা মাদ্রাসা পড়ুয়াদের নতুন করে তথ্য আপলোড করতে হয় । সেটা স্কুলের জন্য অতিরিক্ত চাপ । বাংলার শিক্ষা পোর্টালও বেশিরভাগ সময় কাজ করে না । আর সময়ে তথ্য আপলোড না করলে ওরা বিভিন্ন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় । সেক্ষেত্রে দোষ এসে পড়ে প্রধান শিক্ষকদের উপর । ওদেরকে বাংলার শিক্ষা পোর্টালে অ্যালাউ করলেই আর এই সমস্যাটা থাকে না । এটা আমরা বারবার বলেছি ।"