ETV Bharat / city

Kolkata Tram Service: ট্রাম বাঁচাতে সমীক্ষা, আশার আলো দেখছেন গবেষকরা

author img

By

Published : Jun 9, 2022, 5:22 PM IST

কলকাতায় ট্রামের (Kolkata Tram Service) ভবিষ্যৎ কী ? তা জানতেই সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর ৷ বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের আশা, এর ফলে ট্রামের চলার পথ সুগম হবে ৷

1
1

কলকাতা, 9 জুন: উষ্ণায়ন মোকাবিলায় গোটা বিশ্বে পরিবেশবান্ধব যান চলচলের উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ পেট্রল, ডিজেলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে এঁটে উঠতে নিত্যনতুন মডেলের ইলেকট্রিক কার, স্কুটার ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে ৷ অথচ, এমন একটা প্রেক্ষাপটেই আমাদের প্রিয় শহর কলকাতার বুক থেকে কার্যত হারিয়ে যেতে বসেছে শতাব্দীপ্রাচীন ট্রাম পরিষেবা (Kolkata Tram Service) ৷ ট্রামের সফর সস্তা, আরামদায়ক ও নিরাপদ ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও কলকাতার ট্রাম সংস্থা (Calcutta Tramways Company) লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না ৷ ফলে ক্রমশ আরও গুটিয়ে যাচ্ছে ট্রাম চলাচলের পরিসর ৷ এই অবস্থায় কলকাতার ট্রামকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসন ৷ রাজ্য পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি সমীক্ষা করানো হচ্ছে ৷ যার নেতৃত্বে রয়েছেন আইআইটি খড়গপুরের (Indian Institute of Technology Kharagpur) অধ্যাপক ড, ভার্গব মৈত্র ৷

রাজ্যের এই উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন ট্রামপ্রেমীরা ৷ তাঁদের মতে, বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব মাফিক চললে হয়তো বেঁচে যাবে কলকাতার এই প্রাচীন ঐতিহ্য ৷ যদিও এই বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ ৷ তেমনই একজন হলেন ট্রাম গবেষক ড. দেবাশিস ভট্টাচার্য ৷ তাঁর অভিযোগ, কলকাতার ট্রাম পরিষেবার এই দুরবস্থার জন্য রাজ্য পরিবহণ দফতর, কলকাতা পৌর কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা পুলিশই দায়ী ৷ তবে, সরকার যদি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে ভুল সংশোধন করে, তাহলে এখনও ট্রামকে বাঁচানো সম্ভব বলেই মনে করেন দেবাশিস ৷

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল গবেষকের ৷

রাজ্য পরিবহণ দফতর যে সমীক্ষা করাচ্ছে, সেটি ঠিক কেমন হবে ? এই বিষয় ডক্টর ভার্গব মৈত্র জানান, বর্তমান যে দুটি রুটে ট্রাম চলছে, সেই দুটি রুটের পাশাপাশি একাধিক বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রাম রুট (অন্তত দুটি বন্ধ ট্রাম রুট) নিয়েও সমীক্ষা করা হবে। তবে, এক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোন দুটি ট্রাম রুটকে সমীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি ৷ চলতি জুন মাস থেকেই শুরু হবে এই সমীক্ষা ৷ ড. ভার্গব মৈত্র জানান, "পুরো সমীক্ষাটি বেশ কয়েকটি ধাপে ভাগ করে করা হবে। ট্রামের প্রতি যাত্রীদের মনোভাব থেকে শুরু করে কোন রুটে বর্তমানে কত যাত্রী হয়, সেই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে ৷ সংখ্যাতত্ত্বের নিয়মে সেগুলি বিশ্লেষণও করা হবে ৷ যাত্রীরা কোন ধরনের পরিবহণের মাধ্যমে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পছন্দ করেন, কতক্ষণ অন্তর বিভিন্ন রুটে ট্রাম পাওয়া যায়, এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে ৷ সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা শেষ করতে সময় লাগবে চার থেকে পাঁচমাস ৷"

state transport department orders survey for kolkata tram service
সফর শুরুর অপেক্ষায় ৷

সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নে করা হলে ট্রাম গবেষক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "এই ধরনের সমীক্ষা ট্রামের হাল ফেরানোর জন্য অবশ্যই ইতিবাচক ৷ তবে, শুধুমাত্র সমীক্ষা করালেই তো হবে না ৷ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো পদক্ষেপও করতে হবে ৷" একমাত্র তবেই বেহাল ট্রামের হাল ফেরানো সম্ভব হলে মনে করেন দেবাশিস ৷ তিনি বলেন, "গত কয়েক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে ট্রামের যাত্রী কমেছে ৷ এর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে ৷ আমরা যারা বহুদিন ধরে ট্রাম নিয়ে চর্চা করছি, তারা সেই বিষয়গুলি বহুবার তুলেছি ৷ কিন্তু, আমাদের কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ৷ এখন যদি বিশেষজ্ঞদের কথা শোনা হয় তো ভালো ৷ ওঁদের সমীক্ষা অনেক বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও তথ্যনির্ভর। তাই আমাদের আশা, সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়লে এবার হয়তো পরিবহণ দফতর তার যথাযথ মূল্য দেবে।"

কলকাতা, 9 জুন: উষ্ণায়ন মোকাবিলায় গোটা বিশ্বে পরিবেশবান্ধব যান চলচলের উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ পেট্রল, ডিজেলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে এঁটে উঠতে নিত্যনতুন মডেলের ইলেকট্রিক কার, স্কুটার ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে ৷ অথচ, এমন একটা প্রেক্ষাপটেই আমাদের প্রিয় শহর কলকাতার বুক থেকে কার্যত হারিয়ে যেতে বসেছে শতাব্দীপ্রাচীন ট্রাম পরিষেবা (Kolkata Tram Service) ৷ ট্রামের সফর সস্তা, আরামদায়ক ও নিরাপদ ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও কলকাতার ট্রাম সংস্থা (Calcutta Tramways Company) লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না ৷ ফলে ক্রমশ আরও গুটিয়ে যাচ্ছে ট্রাম চলাচলের পরিসর ৷ এই অবস্থায় কলকাতার ট্রামকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসন ৷ রাজ্য পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি সমীক্ষা করানো হচ্ছে ৷ যার নেতৃত্বে রয়েছেন আইআইটি খড়গপুরের (Indian Institute of Technology Kharagpur) অধ্যাপক ড, ভার্গব মৈত্র ৷

রাজ্যের এই উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন ট্রামপ্রেমীরা ৷ তাঁদের মতে, বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব মাফিক চললে হয়তো বেঁচে যাবে কলকাতার এই প্রাচীন ঐতিহ্য ৷ যদিও এই বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ ৷ তেমনই একজন হলেন ট্রাম গবেষক ড. দেবাশিস ভট্টাচার্য ৷ তাঁর অভিযোগ, কলকাতার ট্রাম পরিষেবার এই দুরবস্থার জন্য রাজ্য পরিবহণ দফতর, কলকাতা পৌর কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা পুলিশই দায়ী ৷ তবে, সরকার যদি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে ভুল সংশোধন করে, তাহলে এখনও ট্রামকে বাঁচানো সম্ভব বলেই মনে করেন দেবাশিস ৷

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল গবেষকের ৷

রাজ্য পরিবহণ দফতর যে সমীক্ষা করাচ্ছে, সেটি ঠিক কেমন হবে ? এই বিষয় ডক্টর ভার্গব মৈত্র জানান, বর্তমান যে দুটি রুটে ট্রাম চলছে, সেই দুটি রুটের পাশাপাশি একাধিক বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রাম রুট (অন্তত দুটি বন্ধ ট্রাম রুট) নিয়েও সমীক্ষা করা হবে। তবে, এক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোন দুটি ট্রাম রুটকে সমীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি ৷ চলতি জুন মাস থেকেই শুরু হবে এই সমীক্ষা ৷ ড. ভার্গব মৈত্র জানান, "পুরো সমীক্ষাটি বেশ কয়েকটি ধাপে ভাগ করে করা হবে। ট্রামের প্রতি যাত্রীদের মনোভাব থেকে শুরু করে কোন রুটে বর্তমানে কত যাত্রী হয়, সেই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে ৷ সংখ্যাতত্ত্বের নিয়মে সেগুলি বিশ্লেষণও করা হবে ৷ যাত্রীরা কোন ধরনের পরিবহণের মাধ্যমে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পছন্দ করেন, কতক্ষণ অন্তর বিভিন্ন রুটে ট্রাম পাওয়া যায়, এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে ৷ সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা শেষ করতে সময় লাগবে চার থেকে পাঁচমাস ৷"

state transport department orders survey for kolkata tram service
সফর শুরুর অপেক্ষায় ৷

সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নে করা হলে ট্রাম গবেষক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "এই ধরনের সমীক্ষা ট্রামের হাল ফেরানোর জন্য অবশ্যই ইতিবাচক ৷ তবে, শুধুমাত্র সমীক্ষা করালেই তো হবে না ৷ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো পদক্ষেপও করতে হবে ৷" একমাত্র তবেই বেহাল ট্রামের হাল ফেরানো সম্ভব হলে মনে করেন দেবাশিস ৷ তিনি বলেন, "গত কয়েক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে ট্রামের যাত্রী কমেছে ৷ এর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে ৷ আমরা যারা বহুদিন ধরে ট্রাম নিয়ে চর্চা করছি, তারা সেই বিষয়গুলি বহুবার তুলেছি ৷ কিন্তু, আমাদের কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ৷ এখন যদি বিশেষজ্ঞদের কথা শোনা হয় তো ভালো ৷ ওঁদের সমীক্ষা অনেক বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও তথ্যনির্ভর। তাই আমাদের আশা, সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়লে এবার হয়তো পরিবহণ দফতর তার যথাযথ মূল্য দেবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.