কলকাতা, 19 এপ্রিল : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজনৈতিক হিংসায় বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা ৷ এই নিয়ে মামলাকারী আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল এরকম 303 জনের একটি তালিকা কলকাতা হাইকোর্টে আগেই দিয়েছিলেন ।
সেই বিষয় খতিয়ে দেখতে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ও কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের দুই প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের কথা জানায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । কিন্তু রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে আজ আদালতে জানানো হল এই বিষয়ে তদন্ত করা বা এই বিষয় খতিয়ে দেখার দায়িত্ব তাঁদের নয় (State Human Rights Commission not ready to take responsibility of eviction in post poll violence cases) ।
এনিয়ে তাঁদের আইনত এক্তিয়ার কতটা আছে, সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফের আইনজীবী । তবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এখনও তাঁদের সিদ্ধান্ত আদালতকে জানায়নি । আগামিকাল ফের এই ব্যাপারে মামলার শুনানি হবে তারপর প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ কী নির্দেশ দেয় সেটাই দেখার ।
আজ মামলাকারী আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় এখনও 303 জন ঘরছাড়া রয়েছেন বলে দাবি করেন । তিনি বলেন, "বেশ কয়েকটি থানার ওসি, আইসি এবং এসডিপিওরা বিজেপি সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছেন ৷ ব্যারাকপুর, ফলতা-সহ আশপাশের এলাকাগুলোয় মূলত এই ঘটনা ঘটছে । রাজ্য খাতায়-কলমে দেখাচ্ছে সেই অর্থে কেউ আর ঘরছাড়া নেই ।"
অন্যদিকে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল যে 303 জনের তালিকা দিয়েছিলেন, তার মধ্যে 70 জন ইতিমধ্যেই ঘরে ফিরেছেন ৷ 43 জন ঘরে ফিরতে চায় না ৷ 155 জন কাজের তাগিদে বাইরে থাকেন ৷ 18 জন ফৌজদারি মামলায় পলাতক ।" প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই বক্তব্যের স্বপক্ষে হলফনামা দিয়ে আদালতকে তাঁর বক্তব্য জানাতে বলেছেন । আগামিকাল ফের শুনানি এই মামলার (Post-Poll Violence Cases) ।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলা বিচার করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে গঠিত হয়েছিল পাঁচ বিচারপতির এক বিশেষ বেঞ্চ । জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় যে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছিল তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত । পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশক্রমে সেই বেঞ্চের নির্দেশে ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় ধর্ষণ ও খুনের মতো গুরুতর ঘটনা তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সিবিআইকে ।
ফের মামলাকারীরা আজ নতুন করে যে অভিযোগ আদালতের সামনে তুলে ধরেছেন, সেই বিষয় খতিয়ে দেখার দায়িত্ব জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপর যেতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে । কারণ, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ইতিমধ্যেই আইনি প্রসঙ্গ তুলে এই ব্যাপারে তাঁরা তদন্ত করতে আদৌ পারে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন এদিন ।
আরও পড়ুন : Justice Avijit Ganguly : সরকারি আইনজীবীদের আদালত কক্ষে আসার অনুরোধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের