কলকাতা, 21 ফেব্রুয়ারি : আগামী 27 ফেব্রুয়ারি রাজ্যের 108 পৌরসভার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) নিজেদের অবস্থান জানাল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে আসন্ন পৌরভোটে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের তরফে হাইকোর্টে জানানো হয়েছে ৷ রাজ্যে পৌরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে, বিজেপি, সিপিএমের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷ কিন্তু এদিন রাজ্য ও কমিশনের তরফে আদালতে বলা হয়, রাজ্যে এখন পর্যন্ত যতগুলি পৌরনিগমের ভোট হয়েছে তা শান্তিপূর্ণ হয়েছে । ফলে আগামী নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি অযৌক্তিক । তাই এই মামলা খারিজ করে দেওয়া উচিত আদালতের ।
এদিন মামলার শুনানিতে রাজ্য বিজেপির তরফে আইনজীবী এসএস পাটওয়ালিয়া জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী না দিয়ে কোনভাবেই শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট করানো এই রাজ্যে সম্ভব নয় । তিনি গত 12 ফেব্রুয়ারির ভোটে ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন । বলেন, "আদালত প্রথম থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখলেও কমিশন এ ব্যাপারে ব্যর্থ । 12 ফেব্রুয়ারি সাধারণ মানুষ ভোট দিতে যেতে পারেননি । এনেক কেন্দ্রো ভোটও হচ্ছে না ৷ গণতন্ত্রে এই পরম্পরা কখনোই কাম্য নয় ।" তিনি আরও বলেন, "রাজ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে বারবার বলা হচ্ছে 72 শতাংশ ভোট পড়েছে গত নির্বাচনে । কিন্তু বহু প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি । সেই বিষয়টি তারা ধামাচাপা দিতে চাইছে । নির্বাচনের দিনে যেভাবে শাসক দলের তরফে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে, কমিশন অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মত তা দেখতে চাইছে না ।"
আরও পড়ুন : সকাল 9টার মধ্যে ভোট দিলে বামফ্রন্টই জিতবে, প্রত্যয়ী সেলিম
এর পাল্টা নির্বাচন কমিশনের তরফ আইনজীবীর জয়ন্ত মিত্র এই যুক্তি খন্ডন করে বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর একটা তো যুক্তি থাকতে হবে? অভিযোগ তোলা হচ্ছে যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি । কিন্তু গত 9 ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটার মধ্যে যারাই গিয়েছে তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছিল ৷ যারা তার পরে গিয়েছে তাদের মনোনয়নপত্র দিতে দেওয়া হয়নি । পঞ্জাব হরিয়ানাতে 65-69 শতাংশ ভোট পড়েছে সেখানে এই রাজ্যে 72 শতাংশ ভোট পড়েছে । প্রশাসনিক আধিকারিকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয় যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন হবে ।" এদিন হাইকোর্টে তিনি আরও বলেন, "ভোটের জন্য কোনও পর্যবেক্ষক এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই । কমিশন যে ভোট করছে তাতে নজর রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ রয়েছে । প্রথমত নির্বাচন কমিশন ,তারপরে রাজ্য প্রশাসন, তারপরে পুলিশ কর্তৃপক্ষ । এই পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা মানে এই ব্যবস্থাতেই সমস্যার সৃষ্টি হবে ।"
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলও এদিন আদালতে জানান, আবেদনকারীরা যে ধরনের অভিযোগ তুলছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ৷ আসলে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে । তিনি জানিয়েছেন, দুয়ারে সরকার এবং পাড়ায় সমাধান নির্বাচনের জন্য করা হয়নি, এটা সরকারের পুরনো ঘোষিত কর্মসূচি । মামলাকারীদের দরফে গত 12 ফেব্রুয়ারি 4 পৌরনিগমের ভোট বাতিলের দাবিও করা হয়েছে ৷ তবে এদিন শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত ৷