কলকাতা, 16 নভেম্বর : গত বছরও "দিদি"-র কাছে ভাইফোঁটা নিয়েছিলেন ভাই কানন ৷ কিন্তু এবছর আর দিদির কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেওয়ার আমন্ত্রণ আসেনি তাঁর কাছে ৷ "দিদি" মমতার কাছ থেকে এবারে ভাইফোঁটার কোনও উপহারও জুটল না শোভনের ৷ এবারে আর শোভন চট্টোপাধ্যায়ও আগ বাড়িয়ে দিদি মমতার কাছে ভাইফোঁটা নিতে যাননি ৷ শোভনের মতো বৈশাখিও কালীঘাটমুখী হননি ৷
গত বছরে রাজনৈতিক সমীকরণ আলাদা ছিল ৷ 2019-এর 14 অগাস্ট দিল্লিতে পদ্ম শিবিরে যোগ দেন শোভন-বৈশাখি ৷ কিন্তু যোগ দেওয়ার পর পরই নানা বিষয়ে BJP নেতৃত্বের সঙ্গে মনান্তর তৈরি হয় তাঁদের ৷ এরপর এই নিয়ে জল অনেক দূর গড়ায় ৷ নতুন দলে এসে কিছুটা ধৈর্য রাখতে শোভন -বৈশাখিকে উপদেশ দেন মুকুল রায়ও ৷ কিন্তু কোনও কিছুতেই শোভন-বৈশাখির সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের দূরত্ব কমার লক্ষণ দেখা যায়নি ৷ শুরুর সেই সময়ে অক্টোবরে ভাইফোঁটার সময় হঠাৎ-ই শোভন হাজির হন আগের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বাড়িতে ৷ মমতার কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেন শোভন ৷ BJP ছেড়ে তাঁর ও বৈশাখির আবার তৃমমূলে ফেরা তখন যেন ঘড়ির কাঁটার মতোই দুলছিল ৷ কিন্তু শেষমেশ নানা কারণে শোভন-বৈশাখির তৃণমূলে ফেরা হয়নি ৷ এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে রাজ্য সফরে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা BJP নেতা অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেন শোভন ৷ এর পরই রাজনৈতিক সমীকরণের বদল হয়। শোভন-বৈশাখি যে গেরুয়া শিবিরেই থাকবেন তা নিয়ে আর রাজনৈতিক মহলে কোনও বিতর্ক নেই ৷ সেই কারণেই হয়ত এবারে মমতার কাছ থেকে দুর্গাপুজোর উপহার জুটলেও, জোটেনি ভাইফোঁটার উপহার।
প্রতিবছর নিয়ম করে শোভন-বৈশাখিকে পুজো ও ভাইফোঁটার উপহার পাঠিয়ে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারে পুজাতে শোভনের জন্য দামি ব্রান্ডের পাঞ্জাবি এবং বৈশাখির জন্য শাড়ি পাঠিয়েছিলেন তিনি। যা পেয়ে আপ্লুত হয়েছিলেন দুজনই। উপহার প্রাপ্তির কথা নিজেই বেশ ঘটা করে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্য়ায়। খুব গুরুত্বপূর্ণ উপহার বলে এটিকে আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। গতবছরও একইভাবে মিলেছিল পুজো ও ভাইফোঁটার উপহার। এমনকী গতবছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিতে ফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এবারেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, ভেবেই মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু আজ ভাইফোঁটার দিন কালীঘাট চত্বরে যেতে দেখা গেল না শোভন- বৈশাখি কাউকেও। সূত্রের খবর, এবার আর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ভাইফোঁটার আমন্ত্রণ যায়নি শোভন-বৈশাখির গোলপার্কের ফ্ল্যাটে। অমিত শাহর সঙ্গে শোভন- বৈশাখির বৈঠক করাকে কি তাহলে ভালোভাবে নেননি তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো ? রাজ্য রাজনীতিতে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। অমিত শাহর বৈঠকের পর শোভন-বৈশাখি রাজ্য BJP-র হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন ভেবেই কি মমতা অবস্থান পরিবর্তন করেছেন ? যদিও এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি শোভন বৈশাখি।