কলকাতা, 22 জুন: অভিমান নিয়ে তৃণমূল ছেড়েছিলেন ৷ কিন্তু, এতদিনে 'অভিমানের সেই প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে' ! বিজেপি ছাড়ার পর কেউ কেউ তাঁর 'অবিচুয়ারি লিখেছিলেন' ! কিন্তু, তাঁদের লেখার সেই পরিশ্রম ব্যর্থ করেই আবার স্বমহিমায় রাজনীতিতে ফিরছেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায় (Sovan Chatterjee) ! বুধবার নবান্নের বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কার্যত এভাবেই শোভনের 'ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা' শোনালেন তাঁরই বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baishakhi Bandyopadhyay) !
এদিনই নবান্নে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শোভন-বৈশাখী ৷ সেই 'বৈঠক' যে তাঁদের মনের মতোই হয়েছে, তা শোভন-বৈশাখীর হাবেভাবেই ছিল স্পষ্ট ৷ ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, শোভনের তৃণমূলে ফেরা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা !
বুধবার বিকেলে নবান্ন থেকে বেরিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "2018 সালের 22 নভেম্বর আমি এখান থেকে চলে এসেছিলাম ৷ কিন্তু, এই নয় যে দিদির সঙ্গে আমাদের দেখা হয়নি ৷ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে ৷ আমাদের মধ্যে যে ভালবাসা, আবেগ রয়েছে, সেই অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছি ৷ ছোটবেলা থেকেই আমার রাজনৈতিক সমস্ত চিন্তাধারা 'মমতাময়' ৷ মমতাদির কথা, মমতাদির চিন্তাভাবনা বাস্তবায়িত করার কথাই সবসময় ভেবেছি ৷ সবটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেন্দ্রিক ৷ মমতাদির কাছে আসব, গল্প করব, চা খাব, সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, এটাই তো বাঞ্ছনীয় ৷ মমতাদির ইচ্ছা, চিন্তা, ভাবনা বাস্তবায়িত করাই আমার কর্তব্য ৷"
আরও পড়ুন: Sovan-Baishakhi at Nabanna: নবান্নে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ শোভন-বৈশাখীর, তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত
অন্যদিকে, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠক একইসঙ্গে রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত ৷ শোভন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে ৷ আমি দেখলাম ভাই আর দিদির রাজনৈতিক নানা আলোচনা ৷ মুগ্ধ হয়ে সেগুলি দেখলাম ৷ আমি চাই, দ্রুত শোভন ওঁর রাজনৈতিক জীবনে ফিরুক ৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে ৷ আবার পুরনো শোভনকে ফিরে পেলাম ৷"
তাহলে কি শোভনের তৃণমূলে ফেরা একপ্রকার নিশ্চিত ? জবাবে বৈশাখী বলেন, "দিদির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবে শোভন ৷ আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে ৷ ভাই দিদির আলোচনা হয়েছে ৷ আমি পুরোটা উপভোগ করেছি ৷"
এদিকে, বুধবার খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠে এসেছে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ ৷ যদিও সেই বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এই মুহূর্তে আমার এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে এই নামটার কোনও গুরুত্ব নেই ৷" অন্যদিকে, তৃণমূলে শোভনের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্য়ায়ও কোনও মন্তব্য করেননি ৷ তবে তাঁর বাবা অর্থাৎ শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের শ্বশুর দুলাল দাস বলেন, "ওঁর বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না ৷ এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ৷ তিনিই ঠিক করবেন, কাকে দলে নেবেন আর কাকে দলে নেবেন না ৷"