কলকাতা, 12 মে : দাবানলের মতো রাজ্যজুড়ে ছড়াচ্ছে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন CPI(M)-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। লকডাউন পরবর্তী অবস্থায় রাজ্যের অর্থনীতি কীভাবে ফের চাঙা হবে তা নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বলে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা অভিযোগ তোলেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারকে সর্বতোভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছিল বামেরা। কিন্তু রাজ্য সরকার বামেদের আবেদন বা পরামর্শ কিছুই গ্রহণ করেনি বলে মনে করে সম্পাদকমণ্ডলী।
সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "অসহায় কৃষকের ঋণ মকুব হয়নি। ফসলের দাম নেই। শ্রমিকদের কাজ নেই। ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের আশ্রয় নেই। খাদ্য নেই। বাড়ি ফিরতে ট্রেন নেই। কোরোনা ভাইরাস টেস্টের কিট নেই। নরেন্দ্র মোদির রাজত্বে সেই বেশি পায়, আছে যার ভূরি ভূরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি। একাধিক শিল্পপতি এবং কর্পোরেট সংস্থার মালিকের ঋণ মকুব করেছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবকটি রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত অনুদান দেওয়ার কথা। কেবলমাত্র ভাষণ দিলে চলবে না। বাস্তবে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত রাজ্যগুলির পাশে দাঁড়ানো। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির জন্য কিছুই করতে পারেনি।"
এই সংকটকালে দলমত নির্বিশেষে বামপন্থী চিকিৎসক সংগঠন, ছাত্র-যুব, বিজ্ঞান শাখার কর্মীরা, মহিলা সমিতির কর্মীরা কোরোনা ভাইরাস রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন বলে জানিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের সমস্ত জেলায় ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের ফেরার ক্ষেত্রে বামপন্থী কর্মীরা যথাযথ সাহায্য করবে বলেও আলোচনা হয়েছে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে।
গরিব মানুষকে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের সক্রিয় ভূমিকার বদলে এখানেও চৌর্যবৃত্তি দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন হাওড়া জেলা থেকে মনোনীত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য। রেশনের চাল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। টাস্কফোর্স নিষ্ক্রিয় হয়েছে বলেও অভিযোগ জানানো হয়েছে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেই রাজ্যের মানুষের পাশে আরও বেশি মানবিকভাবে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়।