ETV Bharat / city

School Librarian Recruitment: 2013 থেকে হয়নি স্কুল লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ, বন্ধ হওয়ার পথে বহু লাইব্রেরি - All Bengal School Library Association

প্রায় 10 বছর ধরে রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে বন্ধ লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া (School Librarian Recruitment Process Stop from 2013 in West Bengal) ৷ ফলে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একাধিক স্কুলের লাইব্রেরি ৷ এমনই অভিযোগ করল অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন (All Bengal School Library Association) ৷

School Librarian Recruitment Process Stop from 2013 in West Bengal
School Librarian Recruitment Process Stop from 2013 in West Bengal
author img

By

Published : Jul 5, 2022, 11:44 AM IST

কলকাতা, 5 জুলাই: রাজ্যের স্কুলগুলিতে 2013 সাল থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া (School Librarian Recruitment Process Stop from 2013 in West Bengal) ৷ এমনই অভিযোগ করা হল অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ৷ ফলে দীর্ঘদিন লাইব্রেরিয়ানের অভাবে অধিকাংশ স্কুলের লাইব্রেরিতে তালাবন্ধ অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে অসংখ্য বই ৷ এমনকী বহু স্কুলে লাইব্রেরি উঠে গিয়েছে স্থায়ী লাইব্রেরিয়ান না থাকায় ৷

এই চিত্র শুধু একটি বা দু’টি জেলার নয় ৷ একাধিক জেলার সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির এক অবস্থা ৷ শহরের স্কুলগুলির ক্ষেত্রেও অবস্থাটা খুব একটা আলাদা নয় ৷ এ ক্ষেত্রে কোথাও লাইব্রেরিয়ানের অভাব হলে স্কুলের কোনও একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা সেই অভাব পূরণ করছেন ৷ তবে, উৎসশ্রী পরিষেবা চালু যাওয়ার পর থেকে প্রান্তিক স্কুলগুলি থেকে শিক্ষকরা নিজেদের বাড়ির কাছে বদলি হয়ে গিয়েছেন ৷ ফলে প্রান্তিক এলাকার বহু স্কুলেই শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীও নেই, যাঁরা লাইব্রেরির দায়িত্ব সামলাবেন ৷

যদিও এগুলি বিকল্প ৷ মূল সমস্যা লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ না হওয়া ৷ 2013 সাল থেকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ প্রায় 10 বছর হয়ে গেল কোনও নিয়োগই হয়নি স্কুল লাইব্রেরিয়ান পদে ৷ স্বাভাবিক ভাবেই স্কুলগুলিতে একাধিক শূন্যপদ পড়ে রয়েছে ৷

এ নিয়ে অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের (All Bengal School Library Association) সভাপতি ড. অরূপ রতন দাস বলেন, ‘‘2013 সাল থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ অনেক স্কুলের লাইব্রেরিয়ান অবসর নেওয়ার পর সেই সব শূন্যপদ আজও খালি পড়ে রয়েছে ৷ তাই স্বাভাবিক ভাবেই বহু স্কুলে কর্মীর অভাবে কার্যত শিকেয় উঠেছে লাইব্রেরিগুলি ৷ এছাড়াও এমন বহু স্কুল আছে যেখানে কোনওরকমে স্কুলের শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী দিয়েই চলছে কাজ ৷ তাই শুধুমাত্র লাইব্রেরির বইগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ রাজ্য শিক্ষা দফতর এবং বিদ্যালয়ের পরিচালন বিভাগের সচেতনতার অভাবে বহু লাইব্রেরিয়ানের ইচ্ছে থাকলেও স্কুলের লাইব্রেরিতে পরিষেবা দিতে পারছেন না ৷ তাঁদের দিয়ে স্কুলের অন্যান্য কাজ করানো হচ্ছে ৷’’ তিনি অভিযোগ করেছেন, সংগঠনের তরফে শিক্ষা দফতরে একাধিকবার ডেপুটেশন জমা দেওয়া সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি ৷

এ বিষয়ে সংগঠনের অ্যাসিসট্যান্ট যুগ্ম সম্পাদক বৈদ্যনাথ দাস বলেন, ‘‘একাধিক স্কুলে লাইব্রেরিয়ান অবসর নেওয়ার পরে সেই পদগুলি আর পূরণ করা হয়নি ৷ এর ফলে বহু স্কুলে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরি ৷ বন্ধ লাইব্রেরিতে বইয়ের যত্নও হয় না ৷ ভালো ভালো বই পোকায় কেটে নষ্ট করছে ৷ এছাড়াও যে লাইব্রেরিগুলি চালু রয়েছে, সেগুলি নিয়মিত লাইব্রেরি গ্রান্ট পায় না ৷ এমনও হয়েছে লাইব্রেরি নেই এমন স্কুল লাইব্রেরি গ্রান্টের টাকা পেয়েছে ৷ আর যেই স্কুলে লাইব্রেরি রয়েছে, সেই স্কুলগুলি লাইব্রেরি গ্রান্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৷ এছাড়া মোবাইলের যুগে ছেলেমেয়েরা লাইব্রেরি ক্লাস থাকা সত্ত্বেও, বই পড়ার বিষয়ে কোনও উৎসাহ দেখায় না ৷ এছাড়াও করোনা এবং লকডাউনের পর থেকে লাইব্রেরিগুলি অবস্থা একেবারে বেহাল ৷’’

আরও পড়ুন: Kumar Shibapada Rural Library : সরকারি উদাসীনতায় ধুঁকছে রাজ লাইব্রেরি, নষ্ট হচ্ছে বহু দুর্মূল্য পুঁথি

সরকারি তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় 6 হাজার 500 ৷ যেখানে হয় লাইব্রেরি নেই ৷ আর তা না হলে লাইব্রেরি থাকলেও নেই লাইব্রেরিয়ান ৷ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রেই লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয় ৷ তবে, বর্তমানে এতগুলি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল থাকলেও লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগের ছাড়পত্র মিলেছে মোটে আড়াই হাজার ৷ এই সংখ্যার মধ্যে বর্তমানে 1 হাজার 300টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন ৷ অর্থাৎ 1200টি স্কুলে লাইব্রেরিয়ানের পদ শূন্য ৷

আরও পড়ুন: Malda Government Libraries : মালদার সরকারি লাইব্রেরিতে কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী

সম্প্রতি এসএসসি’র মাধ্যমে স্কুলের বিভিন্ন পদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হলেও, লাইব্রেরিয়ানের জন্য এখনও নিয়োগের কোনও বিজ্ঞপ্তি বেরোয়নি ৷ 2019 সালে একটি সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছিল ৷ সেই নির্দেশিকায় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লাইব্রেরি পিরিয়ড রাখার কথা বলা হয়েছে ৷ তবে, বহু স্কুল সেই নির্দেশিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ করেছে অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন ৷

কলকাতা, 5 জুলাই: রাজ্যের স্কুলগুলিতে 2013 সাল থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া (School Librarian Recruitment Process Stop from 2013 in West Bengal) ৷ এমনই অভিযোগ করা হল অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ৷ ফলে দীর্ঘদিন লাইব্রেরিয়ানের অভাবে অধিকাংশ স্কুলের লাইব্রেরিতে তালাবন্ধ অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে অসংখ্য বই ৷ এমনকী বহু স্কুলে লাইব্রেরি উঠে গিয়েছে স্থায়ী লাইব্রেরিয়ান না থাকায় ৷

এই চিত্র শুধু একটি বা দু’টি জেলার নয় ৷ একাধিক জেলার সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির এক অবস্থা ৷ শহরের স্কুলগুলির ক্ষেত্রেও অবস্থাটা খুব একটা আলাদা নয় ৷ এ ক্ষেত্রে কোথাও লাইব্রেরিয়ানের অভাব হলে স্কুলের কোনও একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা সেই অভাব পূরণ করছেন ৷ তবে, উৎসশ্রী পরিষেবা চালু যাওয়ার পর থেকে প্রান্তিক স্কুলগুলি থেকে শিক্ষকরা নিজেদের বাড়ির কাছে বদলি হয়ে গিয়েছেন ৷ ফলে প্রান্তিক এলাকার বহু স্কুলেই শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীও নেই, যাঁরা লাইব্রেরির দায়িত্ব সামলাবেন ৷

যদিও এগুলি বিকল্প ৷ মূল সমস্যা লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ না হওয়া ৷ 2013 সাল থেকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ প্রায় 10 বছর হয়ে গেল কোনও নিয়োগই হয়নি স্কুল লাইব্রেরিয়ান পদে ৷ স্বাভাবিক ভাবেই স্কুলগুলিতে একাধিক শূন্যপদ পড়ে রয়েছে ৷

এ নিয়ে অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের (All Bengal School Library Association) সভাপতি ড. অরূপ রতন দাস বলেন, ‘‘2013 সাল থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ অনেক স্কুলের লাইব্রেরিয়ান অবসর নেওয়ার পর সেই সব শূন্যপদ আজও খালি পড়ে রয়েছে ৷ তাই স্বাভাবিক ভাবেই বহু স্কুলে কর্মীর অভাবে কার্যত শিকেয় উঠেছে লাইব্রেরিগুলি ৷ এছাড়াও এমন বহু স্কুল আছে যেখানে কোনওরকমে স্কুলের শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী দিয়েই চলছে কাজ ৷ তাই শুধুমাত্র লাইব্রেরির বইগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ রাজ্য শিক্ষা দফতর এবং বিদ্যালয়ের পরিচালন বিভাগের সচেতনতার অভাবে বহু লাইব্রেরিয়ানের ইচ্ছে থাকলেও স্কুলের লাইব্রেরিতে পরিষেবা দিতে পারছেন না ৷ তাঁদের দিয়ে স্কুলের অন্যান্য কাজ করানো হচ্ছে ৷’’ তিনি অভিযোগ করেছেন, সংগঠনের তরফে শিক্ষা দফতরে একাধিকবার ডেপুটেশন জমা দেওয়া সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি ৷

এ বিষয়ে সংগঠনের অ্যাসিসট্যান্ট যুগ্ম সম্পাদক বৈদ্যনাথ দাস বলেন, ‘‘একাধিক স্কুলে লাইব্রেরিয়ান অবসর নেওয়ার পরে সেই পদগুলি আর পূরণ করা হয়নি ৷ এর ফলে বহু স্কুলে বন্ধ হয়ে রয়েছে লাইব্রেরি ৷ বন্ধ লাইব্রেরিতে বইয়ের যত্নও হয় না ৷ ভালো ভালো বই পোকায় কেটে নষ্ট করছে ৷ এছাড়াও যে লাইব্রেরিগুলি চালু রয়েছে, সেগুলি নিয়মিত লাইব্রেরি গ্রান্ট পায় না ৷ এমনও হয়েছে লাইব্রেরি নেই এমন স্কুল লাইব্রেরি গ্রান্টের টাকা পেয়েছে ৷ আর যেই স্কুলে লাইব্রেরি রয়েছে, সেই স্কুলগুলি লাইব্রেরি গ্রান্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৷ এছাড়া মোবাইলের যুগে ছেলেমেয়েরা লাইব্রেরি ক্লাস থাকা সত্ত্বেও, বই পড়ার বিষয়ে কোনও উৎসাহ দেখায় না ৷ এছাড়াও করোনা এবং লকডাউনের পর থেকে লাইব্রেরিগুলি অবস্থা একেবারে বেহাল ৷’’

আরও পড়ুন: Kumar Shibapada Rural Library : সরকারি উদাসীনতায় ধুঁকছে রাজ লাইব্রেরি, নষ্ট হচ্ছে বহু দুর্মূল্য পুঁথি

সরকারি তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় 6 হাজার 500 ৷ যেখানে হয় লাইব্রেরি নেই ৷ আর তা না হলে লাইব্রেরি থাকলেও নেই লাইব্রেরিয়ান ৷ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রেই লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয় ৷ তবে, বর্তমানে এতগুলি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল থাকলেও লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগের ছাড়পত্র মিলেছে মোটে আড়াই হাজার ৷ এই সংখ্যার মধ্যে বর্তমানে 1 হাজার 300টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন ৷ অর্থাৎ 1200টি স্কুলে লাইব্রেরিয়ানের পদ শূন্য ৷

আরও পড়ুন: Malda Government Libraries : মালদার সরকারি লাইব্রেরিতে কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী

সম্প্রতি এসএসসি’র মাধ্যমে স্কুলের বিভিন্ন পদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হলেও, লাইব্রেরিয়ানের জন্য এখনও নিয়োগের কোনও বিজ্ঞপ্তি বেরোয়নি ৷ 2019 সালে একটি সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছিল ৷ সেই নির্দেশিকায় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লাইব্রেরি পিরিয়ড রাখার কথা বলা হয়েছে ৷ তবে, বহু স্কুল সেই নির্দেশিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ করেছে অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.