কলকাতা, 12 মার্চ : একুশের বিধানসভা ভোট নিয়ে এবার বিস্ফোরক বিজেপি ত্যাগী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জয়প্রকাশ মজুমদার । শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, নন্দীগ্রামের ভোটে কারচুপি হয়েছিল । আর এই কারচুপি যিনি করেছেন, তাঁর নাম শুভেন্দু অধিকারী (Rajib-Jayprakash Attack Suvendu Adhikari on Nandigram Poll Result) ।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে থাকাকালীন এই দুই নেতা এ প্রসঙ্গে টু-শব্দটি না করলেও তৃণমূলে যোগদানের পর তা নিয়ে সরব হয়েছেন । এদিন ক্যামাক স্ট্রিটের পার্টি অফিসে বসে দুই রাজনৈতিক নেতা তোপ দেগেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে ।
এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Leader of Opposition Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে তোপ দেগে এই মুহূর্তে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Tripura Incharge Rajib Banerjee) বলেন, ‘‘আমি আজ দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি নন্দীগ্রামের কথা উনি (শুভেন্দু অধিকারী) বার বার বলেন । আমিও সেই সময় ভারতীয় জনতা পার্টিতে ছিলাম । বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, নন্দীগ্রামের ভোট কতটা স্বচ্ছ হয়েছে ! বাংলার মানুষ জানে, নন্দীগ্রামের ভোট কীভাবে হয়েছে । নন্দীগ্রামের ভোট স্বচ্ছ হয়নি । যেদিন ফলাফল ঘোষণা হয়, তিনি নিজে আমায় বিকেলে ফোন করে বলেছিলেন, নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন । তারপর কোন জাদুবলে আবার নন্দীগ্রামে তিনি জিতলেন ? হাইকোর্টে যে মামলা হয়েছে, আমরা চাই এর বিচার হোক, হয় পুনরায় নির্বাচন হোক, না হলে পুনরায় ভোট গণনা হোক । তাহলেই কী আছে, তা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে যাবে ।’’
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে হেভিওয়েট কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম (Nandigram Assembly Election Result) । এই কেন্দ্রে একদিকে প্রার্থী ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) । অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী । ওই আসনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জিতে শুধু বিধায়ক হননি শুভেন্দু অধিকারী, এই জয় তাঁকে দিয়েছে বিরোধী দলনেতার পদও । তবে এই ফলাফল এখনও আদালতের বিচারাধীন । এর মধ্যেই এই বিধানসভা ভোটের ফল নিয়ে তোপ দাগলেন রাজীব ।
এদিন বিরোধী দলনেতার নন্দীগ্রাম জয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশ মজুমদারও । তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে ফলপ্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠক করে আমি জানিয়েছিলাম, নন্দীগ্রামে মাননীয়া জিতেছেন তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি । পরে সেই ফল বদলে যায় । তখন শুভেন্দুকে ফোনে এই বিষয়ে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম । উনি রহস্যময় হাসি হেসে জানান, ‘জয়প্রকাশদা অনেক কায়দা করতে হয়েছে’ । সেই কায়দা আগে থেকেই শুরু হয়েছিল ।’’
শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি যোগদানের পিছনে যে মূল লক্ষ্য সিবিআই তদন্ত থেকে বাঁচা, সেই দাবিও করেছেন জয়প্রকাশ ৷ তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দুর যোগদানে দিলীপের অনীহা ছিল । নারদাকাণ্ডে এফআইআরে নাম ছিল শুভেন্দুর । কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখেই শুনেছিলাম তদন্ত থেকে বাঁচতেই বিজেপিতে আসছেন উনি । এরপর কেন্দ্রের তরফেও ওর বিরুদ্ধে চলা মামলা ধামাচাপা দেওয়া শুরু হয় ।’’
এদিন সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর নিন্দা করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় । শুভেন্দুকে তোপ দেগে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রসঙ্গ তুলে রাজীব আরও বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা এবং রাজ্যপাল গড়াপেটা করে রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চেয়েছিলেন । বাইরে বেরিয়ে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা । বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কুত্সা করে চলেছেন । বাংলার মানুষ মেনে নেবেন না । আর কিছুদিন পর বিজেপিকে বাংলায় দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।’’
আরও পড়ুন : Firhad Hakim Attacks Narendra Modi : কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে ভয় দেখানো, মোদীকে একহাত ফিরহাদের