ETV Bharat / city

করোনা আবহে বাজার মন্দা, নিউ নর্ম্যালে স্ট্র্যাটেজি বদল প্রকাশকদের

করোনা আবহে বদলে গিয়েছে জীবন যাপন ৷ স্কুল-কলেজ, পরীক্ষা সব বন্ধ ৷ পড়াশোনা মানেই এখন অনলাইন ৷ নিউ নর্ম্যাল পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে নিজেদের বদলেছে প্রকাশনা সংস্থাগুলিও ৷

publishers changing strategy as market down amid corona pandemic
করোনা আবহে বাজার মন্দা, নিউ নর্ম্যালে স্ট্র্যাটেজি বদল প্রকাশকদের
author img

By

Published : Jul 4, 2021, 5:25 PM IST

কলকাতা, 4 জুলাই : "আমি মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছি ৷ আর আমার সাফল্যের পেছনে রয়েছে... ৷" বাংলার ঘরে ঘরে খুবই পরিচিত এই বিজ্ঞাপন ৷ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীদের দিয়েই নিজেদের মুদ্রণের প্রচার চালাতে অভ্যস্ত বাংলার নামী প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷ তবে করোনা আবহে পরিস্থিতি বদলেছে ৷ বাতিল মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ৷ বই বিক্রির বাজার মন্দা প্রকাশনী সংস্থাগুলির ৷ তাই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদের স্ট্র্যাটেজিও বদলেছে তারা ৷

করোনা আবহে দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ প্রায় বন্ধ ৷ নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানা বিধিনিষেধ মেনে স্কুল খোলা হলেও তা বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি ৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ফের বন্ধ হয়েছে স্কুল ও কলেজ ৷ একে একে বাতিল হয়েছে বোর্ডের পরীক্ষা ৷ এই অবস্থায় প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷ কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানোর নীতিতেও বাধ সেধেছে বর্তমান পরিস্থিতি ৷ পারুল প্রকাশনীর প্রধান গৌড়দাস সাহা জানালেন, ব্যবসার পরিকাঠামোই পুরো ভেঙে পড়েছে ৷ তাঁর কথায়, "ব্যবসা একেবারেই নেই ৷ স্কুল-কলেজ খোলা না-থাকায় খুব মুশকিল হয়েছে ৷ বিজ্ঞাপন তো দূর, ছাপার কাজই বন্ধ রয়েছে ৷ গত জানুয়ারিতে কিছু বই ছাপা হয়েছিল ৷ কিন্তু নির্বাচনের মাস দেড়েক আগে থেকে সব বন্ধ রয়েছে ৷ বই কেনারই লোক নেই, ছেপে আর কী করব ৷ যতদিন না স্কুল-কলেজ খুলছে, ততদিন বেচাকেনাই শুরু হবে না ৷"

publishers changing strategy as market down amid corona pandemic
করোনা আবহে বাজার মন্দা, নিউ নর্ম্যালে স্ট্র্যাটেজি বদল প্রকাশকদের

আরও পড়ুন: করোনার তৃতীয় ঢেউ শিখরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা অক্টোবর-নভেম্বরে

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁরা স্ট্র্যাটেজিগত কিছু পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন বলে জানালেন পারুল প্রকাশনীর কর্ণধার ৷ তিনি বলেন, "এখন ছাত্রছাত্রীরা বেরোতে পারছে না, বইও কিনছে না ৷ তাদের কথা ভেবেই আমরা একটা ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম আনছি ৷ সেখানে আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পড়ানো হবে ৷ ডিজিটাল বোর্ড ব্যবহার করে লাইভ ক্লাস চলবে ৷ দেওয়া হবে স্টাডি মেটিরিয়াল ৷" এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে পড়ার খরচও খুবই কম রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌড়দাস সাহা ৷

আরও পড়ুন: কোভিডের নিত্যনতুন সংস্করণ চিনতে ভাইরাসের ডিএনএর চরিত্র বোঝায় জোর ভেঙ্কাইয়ার

স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ায় ব্যবসা কিছুটা মার খেলেও সেই লোকসান অন্যভাবে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ছায়া প্রকাশনী ৷ তারা বর্তমানে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানোর পথে আর হাঁটছে না ৷ তারা এখন বিজ্ঞাপনের মুখ করেছে বাংলার মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে ৷ ছায়া প্রকাশনী হল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা এস চাঁদের ব্র্যান্ড ৷ সেই কারণে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে তাদের কাছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছিল সেরা পছন্দ ৷

আরও পড়ুন: কোভিডে 77.8 শতাংশ কার্যকরী কোভ্যাক্সিন, রুখতে পারে ডেল্টা প্রজাতিও

এ ছাড়াও কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানো থেকে সরে আসার আরও একটি কারণ জানিয়েছেন ছায়া প্রকাশনীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস পাঠক ৷ তাঁর কথায়, "গত দু বছরে ছায়া প্রকাশনীর প্রতিযোগিতামূলক বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ৷ সেই কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করিয়ে লাভ হবে না ৷ তাই ভবিষ্যতেও আর আমরা এটা করার কথা ভাবছি না ৷" তিনি আরও বলেন, "ব্যবসার উপর অতিমারির প্রভাব কিছুটা পড়েছে ৷ তা সত্ত্বেও বাংলার বাজারে বইয়ের বাজার হারিয়ে যায়নি ৷ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বই বিক্রি অনেক মার খেয়েছে ৷ তবে সেই লোকসান অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছে প্রতিযোগিতামূলক বইয়ের বিক্রি ৷" ছাত্রছাত্রীরা যাতে অ্যাপ ব্যবহার করে পড়াশোনা করতে পারে, তারও ব্যবস্থা করেছে ছায়া প্রকাশনী ৷ তারা এনেছে লার্নফিক্স অ্যাপ ৷

আরও পড়ুন: ভারত বায়োটেকের ফেজ-3 ট্রায়ালের তথ্য জমা পড়ল

মানুষ বুঝে গিয়েছে করোনাকে সঙ্গে নিয়েই আপাতত করতে হবে জীবনযাপন ৷ তাই কালের নিয়মে নিজেদের জীবনযাত্রাতেও বিবর্তন ঘটাতে হয়েছে ৷ একই রকম ভাবে নিউ নর্ম্যাল পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েই সামনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷

কলকাতা, 4 জুলাই : "আমি মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছি ৷ আর আমার সাফল্যের পেছনে রয়েছে... ৷" বাংলার ঘরে ঘরে খুবই পরিচিত এই বিজ্ঞাপন ৷ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীদের দিয়েই নিজেদের মুদ্রণের প্রচার চালাতে অভ্যস্ত বাংলার নামী প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷ তবে করোনা আবহে পরিস্থিতি বদলেছে ৷ বাতিল মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ৷ বই বিক্রির বাজার মন্দা প্রকাশনী সংস্থাগুলির ৷ তাই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদের স্ট্র্যাটেজিও বদলেছে তারা ৷

করোনা আবহে দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ প্রায় বন্ধ ৷ নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানা বিধিনিষেধ মেনে স্কুল খোলা হলেও তা বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি ৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ফের বন্ধ হয়েছে স্কুল ও কলেজ ৷ একে একে বাতিল হয়েছে বোর্ডের পরীক্ষা ৷ এই অবস্থায় প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷ কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানোর নীতিতেও বাধ সেধেছে বর্তমান পরিস্থিতি ৷ পারুল প্রকাশনীর প্রধান গৌড়দাস সাহা জানালেন, ব্যবসার পরিকাঠামোই পুরো ভেঙে পড়েছে ৷ তাঁর কথায়, "ব্যবসা একেবারেই নেই ৷ স্কুল-কলেজ খোলা না-থাকায় খুব মুশকিল হয়েছে ৷ বিজ্ঞাপন তো দূর, ছাপার কাজই বন্ধ রয়েছে ৷ গত জানুয়ারিতে কিছু বই ছাপা হয়েছিল ৷ কিন্তু নির্বাচনের মাস দেড়েক আগে থেকে সব বন্ধ রয়েছে ৷ বই কেনারই লোক নেই, ছেপে আর কী করব ৷ যতদিন না স্কুল-কলেজ খুলছে, ততদিন বেচাকেনাই শুরু হবে না ৷"

publishers changing strategy as market down amid corona pandemic
করোনা আবহে বাজার মন্দা, নিউ নর্ম্যালে স্ট্র্যাটেজি বদল প্রকাশকদের

আরও পড়ুন: করোনার তৃতীয় ঢেউ শিখরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা অক্টোবর-নভেম্বরে

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁরা স্ট্র্যাটেজিগত কিছু পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন বলে জানালেন পারুল প্রকাশনীর কর্ণধার ৷ তিনি বলেন, "এখন ছাত্রছাত্রীরা বেরোতে পারছে না, বইও কিনছে না ৷ তাদের কথা ভেবেই আমরা একটা ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম আনছি ৷ সেখানে আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পড়ানো হবে ৷ ডিজিটাল বোর্ড ব্যবহার করে লাইভ ক্লাস চলবে ৷ দেওয়া হবে স্টাডি মেটিরিয়াল ৷" এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে পড়ার খরচও খুবই কম রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌড়দাস সাহা ৷

আরও পড়ুন: কোভিডের নিত্যনতুন সংস্করণ চিনতে ভাইরাসের ডিএনএর চরিত্র বোঝায় জোর ভেঙ্কাইয়ার

স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ায় ব্যবসা কিছুটা মার খেলেও সেই লোকসান অন্যভাবে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ছায়া প্রকাশনী ৷ তারা বর্তমানে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানোর পথে আর হাঁটছে না ৷ তারা এখন বিজ্ঞাপনের মুখ করেছে বাংলার মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে ৷ ছায়া প্রকাশনী হল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা এস চাঁদের ব্র্যান্ড ৷ সেই কারণে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে তাদের কাছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছিল সেরা পছন্দ ৷

আরও পড়ুন: কোভিডে 77.8 শতাংশ কার্যকরী কোভ্যাক্সিন, রুখতে পারে ডেল্টা প্রজাতিও

এ ছাড়াও কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করানো থেকে সরে আসার আরও একটি কারণ জানিয়েছেন ছায়া প্রকাশনীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস পাঠক ৷ তাঁর কথায়, "গত দু বছরে ছায়া প্রকাশনীর প্রতিযোগিতামূলক বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ৷ সেই কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করিয়ে লাভ হবে না ৷ তাই ভবিষ্যতেও আর আমরা এটা করার কথা ভাবছি না ৷" তিনি আরও বলেন, "ব্যবসার উপর অতিমারির প্রভাব কিছুটা পড়েছে ৷ তা সত্ত্বেও বাংলার বাজারে বইয়ের বাজার হারিয়ে যায়নি ৷ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বই বিক্রি অনেক মার খেয়েছে ৷ তবে সেই লোকসান অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছে প্রতিযোগিতামূলক বইয়ের বিক্রি ৷" ছাত্রছাত্রীরা যাতে অ্যাপ ব্যবহার করে পড়াশোনা করতে পারে, তারও ব্যবস্থা করেছে ছায়া প্রকাশনী ৷ তারা এনেছে লার্নফিক্স অ্যাপ ৷

আরও পড়ুন: ভারত বায়োটেকের ফেজ-3 ট্রায়ালের তথ্য জমা পড়ল

মানুষ বুঝে গিয়েছে করোনাকে সঙ্গে নিয়েই আপাতত করতে হবে জীবনযাপন ৷ তাই কালের নিয়মে নিজেদের জীবনযাত্রাতেও বিবর্তন ঘটাতে হয়েছে ৷ একই রকম ভাবে নিউ নর্ম্যাল পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েই সামনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.