কলকাতা, 25 অক্টোবর : দীর্ঘ 20 মাস বন্ধ থাকার পর নভেম্বরের 16 তারিখ থেকে খুলছে রাজ্যের স্কুলগুলি ৷ তবে এখনই খোলা হচ্ছে না ছোটদের জন্য স্কুল। শুধুমাত্র নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শুরু হচ্ছে স্কুল। সোমবার শিলিগুড়ির এক প্রশাসনিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী 16 নভেম্বর স্কুল খোলার নির্দেশ দেন তিনি। এই বিষয় সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুজোর আগেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে কালীপুজোর ছুটির পরেই স্কুল খোলা হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন মুখমন্ত্রী। প্রস্তুতির জন্য স্কুলগুলিকে সময় দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের দিয়ে রাজ্যে স্কুল চালু করার প্রয়াস করা হতে চলেছে বলে জানাচ্ছে শিক্ষকমহল।
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, "দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর করোনা মহামারির জন্য বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আগামী মাস থেকে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি ৷ তৃতীয় ধাক্কা যেহেতু আমাদের রাজ্যে প্রভাব বিস্তার করে উঠতে পারেনি, তাই আমরা এই দাবি শিক্ষা দফতর ও মাননীয়ার কাছে রেখেছিলাম। যে সকল বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা খোলার জন্য অনুদান পাচ্ছে, তাদের অবিলম্বে স্যানিটাইজার, মাস্ক, পরিষ্কার পরিছন্নতা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের আসবাবপত্র-সহ পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ টাকা দ্রুত পৌঁছে দিতে শিক্ষা দফতরের কাছে আমাদের আবেদন থাকছে।"
জানা গিয়েছে, স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা দফতর জেলা স্কুল পরিদর্শকদের সঙ্গে একটি ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছে ৷ মোট 14টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কনফারেন্সে ৷ স্কুলগুলিতে 27 অক্টোবরের মধ্যে স্যানিটাইজেশন পর্ব শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডেকে স্কুলের স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে হবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির যে সব পড়ুয়াদের আধার কার্ড এখনও বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড হয়নি, সেই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "যখন সবকিছুই খুলে যাচ্ছে, তখন আর স্কুল বন্ধ রেখে লাভ কী ? অন্তত উঁচু শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে স্কুল চালু হলে বোঝা যাবে যে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে ৷ এই প্রয়াসটাই প্রয়োজন। তাই স্কুল খোলার এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি ৷"
আরও পড়ুন : খুলছে স্কুল, বিস্তারিত গাইডলাইন দিল স্কুল শিক্ষা দফতর
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেন, "সত্যিই যদি সংক্রমণকে রুখতে হয় তবে বন্ধ রাখতে হবে সব কিছুই। যেখানে সবকিছুই খুলে যাচ্ছে। শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাচ্ছে, পুজোর কেনাকাটা করতে যাচ্ছে, পুজোতে ঠাকুর দেখতে বের হচ্ছে ৷ সেখানে শুধুমাত্র স্কুল বন্ধ রাখাটা কোনও কাজের কথা নয়। মানতে হলে আগাগোড়াই মানতে হবে, শুধু স্কুল বন্ধ রেখে কোন লাভ হবে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পর্যন্ত পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুল চালু করে দেখা যেতেই পারে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে ৷ পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আবার সেই মত পদক্ষেপ করা যেতে পারে ৷"