কলকাতা, 29 নভেম্বর : কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক (Twitter Account Hack) করে রাজনৈতিক পোস্ট করার অভিযোগ উঠল ৷ ঘটনায় ইতিমধ্যেই সাইবার বিভাগে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ চলছে তদন্ত ৷ ঘটনা প্রসঙ্গে সাইবার বিশেষজ্ঞ মহম্মদ রেজা আহমেদের সঙ্গে কথা বললেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি ৷ তাঁর মতে, এমন ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ৷
আরও পড়ুন : রাস্তাঘাটে চার্জ দেন? হ্যাক হতে পারে ফোন
কলকাতা পুলিশের ডিসি ইএসডি প্রিয়ব্রত রায় ৷ সম্প্রতি তাঁর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে ত্রিপুরা নির্বাচন (Tripura Municipal Election 2021) সংক্রান্ত বেশ কিছু খবর পোস্ট করা হয় ৷ অথচ একজন সরকারি আধিকারিকের প্রোফাইল থেকে এই ধরনের পোস্ট করার কথা নয় ৷ পুলিশের দাবি, প্রিয়ব্রতর অ্য়াকাউন্ট হ্যাক করে হ্যাকাররাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ ইটিভি ভারতের পক্ষ থেকে প্রিয়ব্রত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও একই কথা বলেন ৷
অন্যদিকে সাইবার বিশেষজ্ঞ মহম্মদ রেজা আহমেদ জানাচ্ছেন, সাধারণ মানুষের পক্ষে এভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ একজনের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা সম্ভব নয় ৷ সেক্ষেত্রে, যদি এমন কেউ থাকে, যিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (যাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে) পরিচিত, তাঁর স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ তাদের নাগালের মধ্য়ে রয়েছে, একমাত্র তবেই এদের পক্ষে অন্যের অ্য়াকাউন্ট হ্যাক করা সম্ভব ৷ কিন্তু, যারা প্রশিক্ষিত হ্যাকার তাদের এসবের দরকার পড়ে না ৷ তারা দূরে বসেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রোফাইল হ্যাক করতে পারে ৷ আবার কখনও কখনও আসল অ্যাকাউন্টের ক্লোন তৈরি করেও সেখানে নানা ধরনের আপত্তিকর পোস্ট করে হ্যাকাররা ৷ এটাও একধরনের হ্যাকিং ৷
চিন্তার বিষয় হল, এমন ঘটনার প্রভাব খুবই মারাত্মক হতে পারে ৷ যাঁর অ্য়াকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে, তিনি যদি প্রভাবশালী ব্যক্তি হন, বা গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদে থাকেন, তাহলে তাঁর অ্যাকাউন্টে করা হ্য়াকারদের পোস্ট যাচাই না করেই নিজেদের মতো করে তার ব্যাখ্যা তৈরি করতে পারেন বহু মানুষ ৷ পুলিশের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তার সোশ্য়াল অ্যাকাউন্ট হ্য়াক হলে তা নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে ৷
আরও পড়ুন : সাইবার হ্যাকিং : অ্যাকাউন্ট থেকে 30 লাখ টাকা গায়েব, কীভাবে ?
প্রিয়ব্রত রায়ের অ্যাকাউন্ট হ্যাকের যে অভিযোগ উঠেছে, ইতিমধ্যেই তার তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ ৷ কে বা কারা এর পিছনে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ কী কারণে এই সাইবার হামলা, তারও কারণ খুঁজছেন গোয়েন্দারা ৷ তবে প্রশ্ন উঠছে, একজন পুলিশকর্তার সঙ্গেই যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে ? যদিও সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছে, টুইটারের মতো মাইক্রোব্লগিং সাইটগুলির নিজস্ব বহু ত্রুটি রয়েছে ৷ সেকথা তারা নিজেরাই স্বীকার করে নিয়েছে ৷ তাই যে কোনও সময়েই এমন ঘটনা ঘটতে পারে ৷