কলকাতা, 11 নভেম্বর : সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে কাছাকাছি আনতেই শুরু হয়েছিল ‘মানব গ্রন্থাগার’ ৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাবনা তেমন নবীন না হলেও শহর কলকাতায় তা আনকোরা বলেই দাবি আয়োজকদের ৷ যদিও গোদা বাংলায় বলতে গেলে বলতে হয়, এই মানব গ্রন্থাগার আদতে নির্ভেজাল আড্ডার আয়োজন ৷ কিন্তু, করোনা আবহে মানব গ্রন্থাগারের ভবিষ্যৎ নিয়েই উঠছে প্রশ্ন ৷ উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, শারীরিক দূরত্ববিধির গেরোয় বন্ধ হয়ে যাবে এই আড্ডাখানা ৷
আরও পড়ুন : Metro Rail : সোমবার থেকে শহরে বাড়ছে মেট্রোর সংখ্যা
দিনটা ছিল 2019 সালের 13 জানুয়ারি ৷ সেদিন কলকাতায় বসেছিল এই অভিনব গল্পের আসর। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তাঁদের জীবনের কথা শোনাতে এবং অন্যদের কথা শুনতে হাজির হয়েছিলেন এই আসরে ৷ জীবনের কঠিন লড়াইগুলিকে জয় করে যাঁরা এগিয়ে চলেন, সেই মানুষরাই এই আসরের গল্পকার ৷ চেনা, অচেনা মানুষকে পরস্পরের কাছে আনাই ছিল এই আয়োজনের প্রধান কারণ ৷ কোভিডকালে যা একেবারেই অসম্ভব ৷ সংক্রমণের আশঙ্কায় দূরত্ববিধি মেনে চলাটা এখন বাধ্যতামূলক ৷ তাই আগামী দিনে আদৌ বসবে কিনা মানব গ্রন্থাগারের আসর, তা জানা নেই উদ্যোক্তাদের ৷
আয়োজকদের তরফে দেবলিনা সাহা জানান, 2019 সালে শেষবারের মতো আয়োজিত হয় ‘মানব গ্রন্থাগার’ ৷ তারপর করোনার জেরে বন্ধ এই আয়োজন ৷ যদিও ইতিমধ্যেই কিছু মানুষের অনুরোধে দু‘-একটি অনলাইন সেশনের আয়োজন করা হয়েছে ৷ তবে টেবিলের চারপাশে বসে মুখোমুখি গল্প শুনতে ও আড্ডা মারতে যে যেরকম অনুভূতি হয়, তা অনলাইনে সম্ভব নয় ৷ দেবলিনা বলেন, ‘‘প্রথমবারেই আমরা খুব ভাল সাড়া পেয়েছিলাম ৷ তিনশোরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন এই আসরে ৷ কারণ, এখানে কোনও বৈষম্য নেই ৷ এখানে সবাই সমান ৷ একজন যৌনকর্মীও এখানে তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা গল্পের মাধ্যমে সবার সামনে তুলে ধরেন ৷ আবার একজন সুপ্রতিষ্ঠিত মানুষও তাঁর জীবনের নানা ঝড়-ঝাপটার কথা এখানে সকলের সামনে তুলে ধরতে পারেন ৷’’
আরও পড়ুন : Anupam Roy : দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও বিচ্ছেদের পথে অনুপম রায়, টুইটে ঘোষণা শিল্পীর
প্রায় 20 বছর আগে কোপেনহেগেন শহরে প্রথমবার আয়োজন করা হয় মানব গ্রন্থাগারের ৷ তারপর ধীরে ধীরে এই ভাবনা ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৷ ভারতে মানব গ্রন্থাগার প্রথমবার আয়োজিত হয়েছিল ইন্দোরে ৷ তারপর হায়দ্রাবাদ, দিল্লি, গুড়গাঁও, মুম্বই, পুণে, ভুবনেশ্বর, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড়, সুরাট ও অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে এই ভাবনা ৷ ইতিমধ্যেই কর্মসূত্রে শহর ছাড়তে হয়েছে দেবলিনাকে ৷ তবে তিনি জানিয়েছেন, আবার আগের মতো একটি সেশন আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর ৷ পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে নিশ্চয়ই আবার বসবে গল্পের আসর ৷ আবার জমবে আড্ডা ৷