কলকাতা, 11 মে : একই পরিবারের 3 জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে । নদিয়ার পলাশীপাড়ায় এই ঘটনায় বিজেপির পক্ষ থেকে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে আগামিকাল ৷ কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, এর সঠিক তদন্তের আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত । পাশপাশি হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্তের আবেদনও জানানো হয়েছে আদালতে (Petition filed in HC for CBI investigation over Palashipara Nadia Death) ।
গত 2 মে মধ্যরাতে পলাশীপাড়ার দমন রাজওয়ার (55), তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা (51) এবং কন্যা মালাকে রক্তাক্ত অবস্থায় খুঁজে পায় প্রতিবেশীরা ৷ যদিও মালার তিনটি বাচ্চা বেঁচে গিয়েছে ৷ পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত 12.10 মিনিট নাগাদ প্রতিবেশী নগর মণ্ডল পাশের বাড়ি থেকে অদ্ভুত চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ৷ তিনি রাজওয়ারের বাড়ির ভিতর উঁকি মেরে দেখেন ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে ৷ তিনি বলেন, "সাংঘাতিক দৃশ্য ৷ আমি মালাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ৷ ওর গলা থেকে অনবরত রক্ত বেরিয়ে যাচ্ছিল ৷ তিনি মরণাপন্ন ৷"
আরও পড়ুন : Nadia Murder : নদিয়ায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে গলার নলি কেটে খুন
সঙ্গে সঙ্গে মণ্ডল এবং অন্য প্রতিবেশীরা পলাশীপাড়া পুলিশকে খবর দেয় ৷ তিনজনকেই তেহট্ট সাব-ডিভিশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ চিকিৎসক জানান, তাঁরা মারা গিয়েছেন ৷ রাজওয়ার, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে । স্বতঃপ্রণোদিত তদন্তে নামে পলাশীপাড়া পুলিশ ৷ সিআইডিও এই ঘটনার তদন্ত করছে । পুলিশ-কুকুরকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত এই খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ ।
কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত এসপি (গ্রামীন) কৃষাণু রায় বলেন, "এর পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে ৷" সেদিন তিনি কিছু বলতে চাননি ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমন রাজওয়ার ও তাঁর স্ত্রী রানিনগর গ্রামে মেয়ে মালার কাছে থাকতেন ৷ মালার স্বামী গুজরাতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন ৷ তাঁর সঙ্গে মালার ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে ৷
মামলাকারী আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, "পুলিশ এখনও পর্যন্ত যথাযথ তদন্ত করছে না । ঘটনাস্থলকে চিহ্নিত করে সিল করা হয়নি । সাক্ষীর জবানবন্দি দেরিতে নেওয়া হয়েছে ।আমরা সেখানে গিয়ে দেখেছি, পাড়ার লোকজন অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে আছে । সেই কারণেই আদালতের কাছে সিবিআই অথবা হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্তের আর্জি জানিয়েছি ।"