কলকাতা, 1 জানুয়ারি : লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ৷ দোসর নয়া প্রজাতি ওমিক্রন ৷ মহামারির তৃতীয় ঢেউ রুখতে তাই বছরের শুরুতেই ফের আংশিক লকডাউনের সম্ভাবনা রাজ্যে (Partial Lockdown possibilty rises in West Bengal) ৷ যদি লকডাউন নাও হয়, সেক্ষেত্রে আবারও কঠোর করোনাবিধি চালু হতে চলেছে বাংলায় ৷ তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ব্লু-প্রিন্ট সাজাতে বছরের প্রথমদিন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রাজ্য সরকার ৷ ইতিমধ্যেই স্থগিত রাখা হয়েছে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের ক্যাম্প ৷ বাতিল করা হয়েছে স্টুডেন্টস উইকের অনুষ্ঠানও ৷ সবমিলিয়ে বলা যায়, দেরিতে হলেও সতর্ক হল রাজ্য সরকার।
বিগত কয়েকদিন ধরেই তৃতীয় ঢেউয়ের শৃঙ্খল ভাঙতে রাজ্যকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞেরা ৷ তাছাড়া যেভাবে রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া কোনও উপায়ও নেই রাজ্য সরকারের কাছে। দিনকয়েক আগে গঙ্গাসাগর থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যের পরিস্থিতি আদৌ ততটা উদ্বেগজনক নয়। সরকারের তরফ থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে ব্রিটেন থেকে আসা উড়ানকেও দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থায় প্রথম ধাপ হিসেবে সেই উড়ান বন্ধ করার জন্য সুপারিশ করে রাজ্য। একে একে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠকেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে 60 শতাংশ করোনা বেড বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেছিল রাজ্য। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছিল। তবুও মানুষ সচেতন না হওয়ায় কড়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বড়দিন ও বর্ষবরণের উৎসবে তৃতীয় ঢেউ আতঙ্ককে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে সাধারণ মানুষ ৷
আরও পড়ুন : Dhankhar Ask AG to Meet Him : হাওড়া পৌর বিল নিয়ে এবার অ্যাডভোকেট জেনারেলকে তলব রাজ্যপালের
তাই ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে আগামী 3 জানুয়ারি থেকে আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য। এই নিয়েই নবান্নে চলছে পর্যালোচনা বৈঠক। বৈঠকে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। বৈঠকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই 3 জানুয়ারি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ একইসঙ্গে রবিবার থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলায় দুয়ারে সরকার প্রকল্পের যে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল, তাও স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কারণ, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে প্রত্যেকবারই বিশাল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। সেই ভিড়ের মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়াতে আপাতত এই কর্মসূচিকে স্থগিত করা হয়েছে। এখন দেখার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ রুখতে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বা আংশিক লকডাউনের মত কড়া পদক্ষেপ নেয় কিনা রাজ্য সরকার।