কলকাতা, 29 জুলাই : অনেকটাই "সুস্থ" NRS-র আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখার্জি । তবে, আজও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারল না পুলিশ । পাশাপাশি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী চার জুনিয়র ডাক্তারকে 160 CRPC-তে দু'বার নোটিশ পাঠিয়েও সাড়া পাননি তদন্তকারীরা । NRS-র জুনিয়র ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে আক্রান্ত পরিবহ-র সঙ্গে কথা বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে পুলিশ । সঙ্গেই ওই চার চিকিৎসকদের সাক্ষ্যও এই মামলায় জরুরি । তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে না পারায় তদন্তের কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে । ফলে প্রশ্ন উঠছে, তদন্তের কাজে পুলিশকে সহযোগিতা না করে চিকিৎসকদের একাংশের আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে ।
চলতি বছর জুন মাসের 11 তারিখ NRS হাসপাতালে রোগীর পরিবারের সঙ্গে বচসার জেরে আক্রান্ত হন জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখার্জিসহ দু'জন জুনিয়র ডাক্তার । গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই পরিবহকে নিয়ে যাওয়া হয় ইন্সটিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে । সেখানে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর । চিকিৎসকরা জানান, প্রচণ্ড জোরে আঘাত লাগায় কপালের উপরে করোটির সামনের একটা অংশ তুবড়ে ভিতরে ঢুকে গেছে । এরপর প্রতিবাদে ফেটে পড়েন জুনিয়র ও সিনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ । প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও । ঘটনার জেরে প্রথমে কলকাতা পুলিশ আদিল হারুন, শেখ আনোয়ার, শেখ ইমতিয়াজ, শেখ বাদল, মহম্মদ শাহনওয়াজকে গ্রেপ্তার করে ৷ কিন্তু তাতেও ক্ষোভ কমেনি বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের । নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্যজুড়ে চলতে থাকে আন্দোলন । পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হস্তক্ষেপে উঠে যায় আন্দোলন । নবান্নের সেই বৈঠকে চিকিৎসকদের সুরক্ষায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকেও চিকিৎসকদের সুরক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয় । কলকাতার সবক'টি বড় হাসপাতালে বাড়ানো হয় সুরক্ষা । মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ কর্মী । DC কমব্যাটকে দেওয়া হয় হাসপাতালগুলি সুরক্ষার নোডাল অফিসারের দায়িত্ব । পাঁচটি করে বড় হাসপাতালের সুরক্ষার দায়িত্বে রাখা হয়েছে একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ । প্রয়োজনে দেওয়া হয় টোল-ফ্রি নম্বর 18003458246 । এখানে ফোন করলে সরাসরি লালবাজারে জানানো যাচ্ছে হাসপাতালের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অভিযোগ ।
লালবাজার সূত্রের খবর, এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে ৷ এখনও পর্যন্ত ওই টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন এসেছে মাত্র 11 টি । প্রতিটি ক্ষেত্রেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ । এই 11 টি ফোনের একটিও কোনও গুরুতর বিষয়ে ছিল না । পাশাপাশি লালবাজারের তরফে স্বাস্থ্য ভবনকে দেওয়া হয়েছে দু'টি চিঠি । সেখানে হাসপাতালের সুরক্ষায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সেগুলোও বলা হয়েছে ।