কলকাতা, 7 জুন: কলকাতার স্কুলে-স্কুলে অপ্রয়োজনীয় ফি নিয়ে অব্যাহত অভিভাবকদের অসন্তোষ। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এবার একজোট হয়ে অপ্রয়োজনীয় ফি-র বিরুদ্ধে সুর চড়াতে চলেছেন প্রায় 85টি বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে আগামী 11 জুন ধর্মতলায় সমাবেশ ও বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, স্কুলগুলিকে অপ্রয়োজনীয় ফি মুকুব করতে হবে। শুধুমাত্র টিউশন ফি নিতে হবে।
85টি বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, "সারা দেশজুড়ে মার্চ মাস থেকে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে স্কুল । এই সময় দেশের আর্থিক পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছে। সারা দেশের মতো আমাদের রাজ্যের অভিভাবকরাও প্রবল আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কলকাতা সহ সারা পশ্চিমবঙ্গের 85টি বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চ, ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই, শুধুমাত্র স্কুলের ফি বৃদ্ধিই নয়, এই পর্বে বহু স্কুল রি-অ্যাডমিশনের নামে বাস ফেয়ার, ল্যাব ফি, ডেভলপমেন্ট ফি, ইলেক্ট্রিসিটি ফি, এই রকম নানান খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা অভিভাবকদের কাছ থেকে রোজগার করছে। যে ফি-গুলি এই পর্বে নেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারণ, স্কুল বন্ধ। কবে স্কুল খুলবে, খোলার পর কতদিন চলবে, আদৌ এই বছর স্কুল কী রকমভাবে চলবে এই সবটাই এখন ধোঁয়াশা । তাই আমরা ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের তরফে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি ও আবেদন জানাই এই ফি-গুলো যাতে স্কুল মুকুব করে। এই লকডাউন পর্বে অভিভাবকদের থেকে শুধুমাত্র টিউশন ফি-টা নেয়।"
ইতিমধ্যেই এই দাবির সপক্ষে অনলাইন সাক্ষর ক্যাম্পেইন করা হয়েছে অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে। সেখানে হাজারের বেশি সাক্ষর সংগ্রহ করে তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা কোনও সাড়া পাইনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে। আমরা তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসে একটা সমাধান চাই। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর আমরা পাইনি।" সেই কারণেই এবার নিজেদের দাবি রাজ্য প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে 11 জুন ধর্মতলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।
এ বিষয়ে যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক বলেন, "আমরা এই পর্বে আমাদের আন্দোলনকে আরও তীব্র করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দাবি যদি মানা না হয়, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের কোনও প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় না বসেন তাহলে আমাদের সামনে দুটো পথ খোলা রয়েছে। একটা আমাদের আন্দোলনকে আরও বৃহৎ করা। দ্বিতীয়, আইনি পথে গিয়ে আমাদের এই সমস্যার সমাধান করা। আমরা হাইকোর্টের কাছে যাব, তাঁদের মতামত জানতে চাইব। পাশাপাশি, আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আবেদন জানাচ্ছি। ''