কলকাতা, 30 মে: রাজ্যের আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান দ্বারস্থ হলেন রাজ্যপালের ৷ আজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে জানান আবদুল মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ৷
আবদুল মান্নানের চিঠিটি টুইটে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ দুর্গত সাধারণ মানুষের কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও সহানুভূতির অভাব দেখা গেছে ৷ তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, গড়ফা পুলিশ স্টেশন ও গতরাতের বিধাননগর সশস্ত্রবাহিনীর 4 নম্বর ব্যাটেলিয়নের বিক্ষোভ নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন ৷’’
বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দেন, যেখানে বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকের ব্যর্থতাকে তুলে ধরা হয়েছে ৷ রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি আতঙ্ক ও অস্থির মনে আপনার সামনে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি যা রাজ্যে লকডাউনের পর থেকে হয়ে চলেছে ৷ দেশে কোরোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি করা হয়েছিল ৷ লকডাউনের প্রাথমিক শর্তই ছিল বাড়িতে থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকতে বলে নিজেই বিভিন্ন ভিড় এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়ালেন এক ডজন পুলিশকর্মী ও ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনকে বিপন্ন করে ৷ এই প্যানডেমিকের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী যে দায়িত্বহীনের মতো ব্যবহার করেছেন, তার জন্য রাজ্যবাসী তাঁকে ক্ষমা করবে না ৷’’
-
" The whole administration lacked the kind of sympathy and humanity required at such critical moment of dealing with the affected common people" asserted Abdul Mannan on post cyclone scenario. pic.twitter.com/cIEddPTard
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 30, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">" The whole administration lacked the kind of sympathy and humanity required at such critical moment of dealing with the affected common people" asserted Abdul Mannan on post cyclone scenario. pic.twitter.com/cIEddPTard
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 30, 2020" The whole administration lacked the kind of sympathy and humanity required at such critical moment of dealing with the affected common people" asserted Abdul Mannan on post cyclone scenario. pic.twitter.com/cIEddPTard
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 30, 2020
তিনি রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘‘এই বিষয়ে যত কম বলা যায়, ততই ভালো ৷ আপনি নিজেও সচেতন রাজ্যের অব্যবস্থা সম্পর্কে এবং সেই বিষয়টিকে বিভিন্ন সময়ে বারংবার তুলেও ধরেছেন ৷ কোরোনা আক্রান্ত ও সন্দেহে যেসব ব্যক্তি কোয়ারানটিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা এখনও পর্যাপ্ত নয় ৷ কোরোনা আক্রান্ত ছাড়া সাধারণ রোগীদের ভগবান বা আল্লার ভরসাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ সাধারণ রোগীদের জন্য কোনও হাসপাতাল বা ডিসপেনসারি নেই ৷ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে আগেই জমা দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা ৷ হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ও ক্যানসার রোগীদের নির্দয়ভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ৷’’
রেশনে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে আবদুল মান্নান লেখেন, ‘‘ এমনকি গরীব মানুষদের সামান্য খাবারের ব্যবস্থাপনা যেখানে চাল-ডাল দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই কাজটিও সঠিকভাবে পরিচালন করতে পারছে না রাজ্য সরকার ৷ দুর্নীতি গ্রাস করেছে রাজ্যকে ৷ কিছু রেশন ডিলার TMC-র নেতাদের সাহায্যে দুর্নীতি করছে আর গরীব মানুষদের কষ্ট থেকেই যাচ্ছে ৷
এইসব অব্যবস্থা ও ব্যর্থতার প্রধান কারণ হল মুখ্যমন্ত্রীর সরকার চালনার পদ্ধতি ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই পরিচালিত হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকজন মন্ত্রী ও কিছু পুলিশকর্মীদের দ্বারা ৷ দক্ষ কোনও আমলাকে কাজে করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ উলটে তাদের কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রীদের বাঁচাতে তাদের বলির পাঠা করা হচ্ছে ৷ দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঔদ্ধত্য মিলিত হয়েই প্রশাসনের কর্মদক্ষতাকে প্রভাবিত করেছে ৷’’
প্রশাসনের খামতিগুলিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আমফান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও এই গাফিলতি দেখা গেছে, যেখানে প্রশাসনের দ্রুত ও সম্মীলিতভাবে কাজ করার প্রয়োজন ছিল৷ রাজ্যবাসী কিই বা আশা করবে যদি মুখ্যমন্ত্রী ভাবেন যে CESC-র অফিসে একবার গেলেই সমস্ত কাজ হয়ে যাবে? মনে হয় প্রশাসনের কাউকেই CESC-র সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এমনকি বিদ্যুৎ মন্ত্রীকেও তেমন একটা দেখা যায়নি ৷ ঔদ্ধত্য ও পরস্পরকে সম্মানের অভাবেই এই চরম অব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ৷ খোদ কলকাতাতেই বিভিন্ন জায়গায় আমফানের নয়দিন পর জল ও বিদ্যুৎ এসেছে ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই ব্যর্থ হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলায় ৷ আমি নিজের এলাকার ঘটনা উল্লেখ করেই এর উদাহরণ দিতে পারি ৷ এলাকায় বিদ্যুৎ না আসায় CESCকে যোগাযোগ করলে জুটেছিল দুর্ব্যবহার ৷ থানার IC-ও একইভাবে দুর্ব্যবহার করে ৷ পথ অবরোধ করতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়, 15 মিনিটেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ৷ তবে আমায় শিক্ষা দিতেই IC কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করে এবং জামিন অযোগ্য ধারায় কেস দাখিল করে ৷’’
চিঠির শেষে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপেরও অনুরোধ করেন ৷