ETV Bharat / city

রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন আবদুল মান্নান

রাজ্যের বর্তমান কোরোনা ও আমফান পরিস্থিতি নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করলেন বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান ৷ তিনি এই নিয়ে আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন ও তাঁকে একটি চিঠিও দেন ৷

Jagdeep Dhankhar & Abdul Mannan
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও আবদুল মান্নান
author img

By

Published : May 30, 2020, 6:25 PM IST

কলকাতা, 30 মে: রাজ্যের আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান দ্বারস্থ হলেন রাজ্যপালের ৷ আজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে জানান আবদুল মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ৷

আবদুল মান্নানের চিঠিটি টুইটে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ দুর্গত সাধারণ মানুষের কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও সহানুভূতির অভাব দেখা গেছে ৷ তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, গড়ফা পুলিশ স্টেশন ও গতরাতের বিধাননগর সশস্ত্রবাহিনীর 4 নম্বর ব্যাটেলিয়নের বিক্ষোভ নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন ৷’’

বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দেন, যেখানে বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকের ব্যর্থতাকে তুলে ধরা হয়েছে ৷ রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি আতঙ্ক ও অস্থির মনে আপনার সামনে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি যা রাজ্যে লকডাউনের পর থেকে হয়ে চলেছে ৷ দেশে কোরোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি করা হয়েছিল ৷ লকডাউনের প্রাথমিক শর্তই ছিল বাড়িতে থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকতে বলে নিজেই বিভিন্ন ভিড় এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়ালেন এক ডজন পুলিশকর্মী ও ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনকে বিপন্ন করে ৷ এই প্যানডেমিকের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী যে দায়িত্বহীনের মতো ব্যবহার করেছেন, তার জন্য রাজ্যবাসী তাঁকে ক্ষমা করবে না ৷’’

  • " The whole administration lacked the kind of sympathy and humanity required at such critical moment of dealing with the affected common people" asserted Abdul Mannan on post cyclone scenario. pic.twitter.com/cIEddPTard

    — Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 30, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

তিনি রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘‘এই বিষয়ে যত কম বলা যায়, ততই ভালো ৷ আপনি নিজেও সচেতন রাজ্যের অব্যবস্থা সম্পর্কে এবং সেই বিষয়টিকে বিভিন্ন সময়ে বারংবার তুলেও ধরেছেন ৷ কোরোনা আক্রান্ত ও সন্দেহে যেসব ব্যক্তি কোয়ারানটিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা এখনও পর্যাপ্ত নয় ৷ কোরোনা আক্রান্ত ছাড়া সাধারণ রোগীদের ভগবান বা আল্লার ভরসাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ সাধারণ রোগীদের জন্য কোনও হাসপাতাল বা ডিসপেনসারি নেই ৷ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে আগেই জমা দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা ৷ হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ও ক্যানসার রোগীদের নির্দয়ভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ৷’’

রেশনে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে আবদুল মান্নান লেখেন, ‘‘ এমনকি গরীব মানুষদের সামান্য খাবারের ব্যবস্থাপনা যেখানে চাল-ডাল দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই কাজটিও সঠিকভাবে পরিচালন করতে পারছে না রাজ্য সরকার ৷ দুর্নীতি গ্রাস করেছে রাজ্যকে ৷ কিছু রেশন ডিলার TMC-র নেতাদের সাহায্যে দুর্নীতি করছে আর গরীব মানুষদের কষ্ট থেকেই যাচ্ছে ৷

এইসব অব্যবস্থা ও ব্যর্থতার প্রধান কারণ হল মুখ্যমন্ত্রীর সরকার চালনার পদ্ধতি ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই পরিচালিত হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকজন মন্ত্রী ও কিছু পুলিশকর্মীদের দ্বারা ৷ দক্ষ কোনও আমলাকে কাজে করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ উলটে তাদের কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রীদের বাঁচাতে তাদের বলির পাঠা করা হচ্ছে ৷ দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঔদ্ধত্য মিলিত হয়েই প্রশাসনের কর্মদক্ষতাকে প্রভাবিত করেছে ৷’’

প্রশাসনের খামতিগুলিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আমফান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও এই গাফিলতি দেখা গেছে, যেখানে প্রশাসনের দ্রুত ও সম্মীলিতভাবে কাজ করার প্রয়োজন ছিল৷ রাজ্যবাসী কিই বা আশা করবে যদি মুখ্যমন্ত্রী ভাবেন যে CESC-র অফিসে একবার গেলেই সমস্ত কাজ হয়ে যাবে? মনে হয় প্রশাসনের কাউকেই CESC-র সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এমনকি বিদ্যুৎ মন্ত্রীকেও তেমন একটা দেখা যায়নি ৷ ঔদ্ধত্য ও পরস্পরকে সম্মানের অভাবেই এই চরম অব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ৷ খোদ কলকাতাতেই বিভিন্ন জায়গায় আমফানের নয়দিন পর জল ও বিদ্যুৎ এসেছে ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই ব্যর্থ হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলায় ৷ আমি নিজের এলাকার ঘটনা উল্লেখ করেই এর উদাহরণ দিতে পারি ৷ এলাকায় বিদ্যুৎ না আসায় CESCকে যোগাযোগ করলে জুটেছিল দুর্ব্যবহার ৷ থানার IC-ও একইভাবে দুর্ব্যবহার করে ৷ পথ অবরোধ করতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়, 15 মিনিটেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ৷ তবে আমায় শিক্ষা দিতেই IC কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করে এবং জামিন অযোগ্য ধারায় কেস দাখিল করে ৷’’

চিঠির শেষে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপেরও অনুরোধ করেন ৷

কলকাতা, 30 মে: রাজ্যের আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান দ্বারস্থ হলেন রাজ্যপালের ৷ আজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে জানান আবদুল মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ৷

আবদুল মান্নানের চিঠিটি টুইটে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ দুর্গত সাধারণ মানুষের কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও সহানুভূতির অভাব দেখা গেছে ৷ তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, গড়ফা পুলিশ স্টেশন ও গতরাতের বিধাননগর সশস্ত্রবাহিনীর 4 নম্বর ব্যাটেলিয়নের বিক্ষোভ নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন ৷’’

বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দেন, যেখানে বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকের ব্যর্থতাকে তুলে ধরা হয়েছে ৷ রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি আতঙ্ক ও অস্থির মনে আপনার সামনে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি যা রাজ্যে লকডাউনের পর থেকে হয়ে চলেছে ৷ দেশে কোরোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন জারি করা হয়েছিল ৷ লকডাউনের প্রাথমিক শর্তই ছিল বাড়িতে থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকতে বলে নিজেই বিভিন্ন ভিড় এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়ালেন এক ডজন পুলিশকর্মী ও ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনকে বিপন্ন করে ৷ এই প্যানডেমিকের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী যে দায়িত্বহীনের মতো ব্যবহার করেছেন, তার জন্য রাজ্যবাসী তাঁকে ক্ষমা করবে না ৷’’

  • " The whole administration lacked the kind of sympathy and humanity required at such critical moment of dealing with the affected common people" asserted Abdul Mannan on post cyclone scenario. pic.twitter.com/cIEddPTard

    — Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 30, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

তিনি রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘‘এই বিষয়ে যত কম বলা যায়, ততই ভালো ৷ আপনি নিজেও সচেতন রাজ্যের অব্যবস্থা সম্পর্কে এবং সেই বিষয়টিকে বিভিন্ন সময়ে বারংবার তুলেও ধরেছেন ৷ কোরোনা আক্রান্ত ও সন্দেহে যেসব ব্যক্তি কোয়ারানটিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা এখনও পর্যাপ্ত নয় ৷ কোরোনা আক্রান্ত ছাড়া সাধারণ রোগীদের ভগবান বা আল্লার ভরসাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ সাধারণ রোগীদের জন্য কোনও হাসপাতাল বা ডিসপেনসারি নেই ৷ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে আগেই জমা দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা ৷ হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ও ক্যানসার রোগীদের নির্দয়ভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ৷’’

রেশনে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে আবদুল মান্নান লেখেন, ‘‘ এমনকি গরীব মানুষদের সামান্য খাবারের ব্যবস্থাপনা যেখানে চাল-ডাল দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই কাজটিও সঠিকভাবে পরিচালন করতে পারছে না রাজ্য সরকার ৷ দুর্নীতি গ্রাস করেছে রাজ্যকে ৷ কিছু রেশন ডিলার TMC-র নেতাদের সাহায্যে দুর্নীতি করছে আর গরীব মানুষদের কষ্ট থেকেই যাচ্ছে ৷

এইসব অব্যবস্থা ও ব্যর্থতার প্রধান কারণ হল মুখ্যমন্ত্রীর সরকার চালনার পদ্ধতি ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই পরিচালিত হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকজন মন্ত্রী ও কিছু পুলিশকর্মীদের দ্বারা ৷ দক্ষ কোনও আমলাকে কাজে করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ উলটে তাদের কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রীদের বাঁচাতে তাদের বলির পাঠা করা হচ্ছে ৷ দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঔদ্ধত্য মিলিত হয়েই প্রশাসনের কর্মদক্ষতাকে প্রভাবিত করেছে ৷’’

প্রশাসনের খামতিগুলিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আমফান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও এই গাফিলতি দেখা গেছে, যেখানে প্রশাসনের দ্রুত ও সম্মীলিতভাবে কাজ করার প্রয়োজন ছিল৷ রাজ্যবাসী কিই বা আশা করবে যদি মুখ্যমন্ত্রী ভাবেন যে CESC-র অফিসে একবার গেলেই সমস্ত কাজ হয়ে যাবে? মনে হয় প্রশাসনের কাউকেই CESC-র সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এমনকি বিদ্যুৎ মন্ত্রীকেও তেমন একটা দেখা যায়নি ৷ ঔদ্ধত্য ও পরস্পরকে সম্মানের অভাবেই এই চরম অব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ৷ খোদ কলকাতাতেই বিভিন্ন জায়গায় আমফানের নয়দিন পর জল ও বিদ্যুৎ এসেছে ৷ সম্পূর্ণ প্রশাসনই ব্যর্থ হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলায় ৷ আমি নিজের এলাকার ঘটনা উল্লেখ করেই এর উদাহরণ দিতে পারি ৷ এলাকায় বিদ্যুৎ না আসায় CESCকে যোগাযোগ করলে জুটেছিল দুর্ব্যবহার ৷ থানার IC-ও একইভাবে দুর্ব্যবহার করে ৷ পথ অবরোধ করতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়, 15 মিনিটেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ৷ তবে আমায় শিক্ষা দিতেই IC কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করে এবং জামিন অযোগ্য ধারায় কেস দাখিল করে ৷’’

চিঠির শেষে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপেরও অনুরোধ করেন ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.