কলকাতা, 2 জুলাই : রোজ বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম ৷ তাই সরকারি ছাড় পাওয়া সত্ত্বেও করোনাকালে অধিকাংশ বাসই রাস্তায় নামেনি ৷ বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছেন মালিকরা ৷ এই পরিস্থিতিতে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠল বেসরকারি বাসের মালিকের বিরুদ্ধে ৷ যা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে পরিবহণ কর্মীদের মধ্যে ৷
গত বছর করোনা পরিস্থিতি সামনে আসার পর বহু বাসেই বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ পরিবহণকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসার ঘটনাও সামনে এসছে ৷ তাই প্রশ্ন উঠছে যে এক্ষেত্রে এত হইচই হচ্ছে কেন ? জানা গিয়েছে যে, হাওড়ার সলপ মোড় থেকে উত্তর 24 পরগনার ব্যারাকপুর কোর্ট পর্যন্ত রুটের ওই বেসরকারি বাস বেশি ভাড়া নেওয়ার জন্য একেবারে ভুয়ো তালিকাও বানিয়ে ফেলেছিল ৷ আর সেটা দেখিয়েই চলছিল বেশি ভাড়া নেওয়া ৷
আরও পড়ুন : Price Hike : জ্বালানির দামের ছ্যাঁকায় রুজি বাঁচানোই দায় অ্য়াপ ক্যাব চালক ও ডেলিভারি বয়দের
করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জেরে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে রাজ্যে বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল ৷ কিন্তু গতকাল, বৃহস্পতিবার থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ তবে বাসে 50 শতাংশের বেশি যাত্রী নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ৷ তার পর অল্প হলেও কিছু বাস রাস্তায় নেমেছে ৷ তার মধ্যে একটি এই বেসরকারি বাস ৷
জানা গিয়েছে যে শুক্রবার সকালে ওই বাসে যাচ্ছিলেন অন্য একটি রুটের বেসরকারি বাসের এক কর্মী ৷ তাঁর কাছে বেশি ভাড়া চাওয়া হয় ৷ তিনি বেশি ভাড়া কেন নেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চান ৷ বাসের কন্ডাক্টর তখন একটি ফেয়ার চার্ট দেখান । পরিবহণকর্মী হওয়ায় ওই ব্যক্তি বুঝে যান যে তালিকাটি ভুয়ো ৷ তার পরই বিষয়টি জানাজানি হয় ৷
আরও পড়ুন : বাসে বাদুড়ঝোলা ভিড়ে উধাও করোনা বিধি, মুখ্যমন্ত্রী শুনছেন...
ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস অনার্স অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ ঘোষ বলেন, "সলপ-ব্যারাকপুর কোর্ট রুটে একটি বেসরকারি বাস অসাধু পন্থায় যাত্রীদের থেকে বেশি ভাড়া নিয়েছিল । সেই ভাড়ার তালিকায় নোটিফিকেশন নম্বর 47/2018 লেখা রয়েছে । কিন্তু এই ভাড়া লাগু করার তারিখ লেখা রয়েছে 2020 সালের 1 জুন । অর্থাৎ এই তালিকা অনুসারে, যে ভাড়ার নোটিফিকেশন হয়েছে 2018 সালে, তা কার্যকরী হচ্ছে 2020 সালে । বাসের ভাড়া শেষ বৃদ্ধি পেয়েছিল 2018 সালের 8 জুন । আর সেই বছরেই বর্ধিত ভাড়া লাগু হয়েছিল । তাছাড়া এই জাল ফেয়ার চার্টে কোনও সরকারি অধিকারিকের সই বা স্ট্যাম্প, কিছুই নেই ।"
একই সঙ্গে তিনি বলেন, "আগেরবারও লকডাউন উঠে যাওয়া পর কোভিড অতিমারি পরিস্থিতির অজুহাতে জাল পোস্টার লাগিয়ে দু-একটি রুটে এভাবেই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল । আমার মনে হয় শুধু এই রুটেই নয়, হয়তো আরও রুটে মালিকরা এভাবেই যাত্রীদের ঠকাবার চেষ্টা করছেন । তাই যাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলব । পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ যে এই ধরনের ভুয়ো ভাড়ার তালিকা দেখিয়ে যে মালিকরা বা বাসকর্মীরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হোক ।"
আরও পড়ুন : ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট