ETV Bharat / city

পরীক্ষায় আপত্তি, অবস্থান স্পষ্ট করে কেন্দ্রকে চিঠি রাজ্যের

পরীক্ষা ছাড়াই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের অ্যাডভাইজারি জারি করেছিল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর । এরপর পরীক্ষা আবিশ্যিক জানিয়ে গাইডলাইন পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৷ এবার নিজেদের অবস্থান জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন ৷

Objection on test in university
কেন্দ্রকে চিঠি রাজ্যের
author img

By

Published : Jul 9, 2020, 7:01 PM IST

কলকাতা, 9 জুলাই: গত 6 জুলাই পরীক্ষা ও শিক্ষাবর্ষ সংক্রান্ত সংশোধিত গাইডলাইনে পড়ুয়াদের পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন । অন্যদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়ায় সায় নেই রাজ্যের । অবস্থান স্পষ্ট করে আজ পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন চারপাতার চিঠি পাঠালেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব অমিত খারেকে । চিঠিতে কোন কোন কারণে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন সম্ভব নয়, তা বিস্তারিত জানিয়েছেন সচিব । এইসঙ্গে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনও জানানো হয়েছে ।

আগেই পরীক্ষা ছাড়াই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের অ্যাডভাইজারি জারি করেছিল রাজ্য শিক্ষা দপ্তর । যা মেনে রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়াদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় । এর মধ্যে গত 6 জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সংশোধিত গাইডলাইন পাঠায় ৷ যেখানে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধর হয় ৷ সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সেপ্টেম্বরের শেষের মধ্যে চূড়ান্ত সিমেস্টার ও চলতি বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে বলা হয় । বলা হয়, অফলাইন অর্থাৎ পেন-পেপারে, অনলাইন বা মিলিতভাবে অনলাইন-অফলাইন মোডে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে । এরপরই পরীক্ষা হবে কি না তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ছাত্র-ছাত্রীরা । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন ।

চলতি বছর 29 এপ্রিলের মঞ্জুরি কমিশনের জারি করা গাইডলাইন তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, ওই গাইডলাইনে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রয়োজনীয় ফ্লেক্সিবিলিটি দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, 6 জুলাইয়ে সংশোধিত গাইডলাইনে দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সেপ্টেম্বরের শেষের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে । যা আগের গাইডলাইনের বিরোধী । কোরোনা ভাইরাস, লকডাউন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, যেভাবে চলতি বছর এপ্রিল মাস থেকে উত্তরোত্তর কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অফলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে কি রাজ্য তথা দেশে, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই । দেশজুড়ে ডিজিটাল অ্যাক্সেসের সংখ্যতত্ত্ব দেখে বলা যেতে পারে, অনলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া উচিত হবে না । তাতে একটা বৃহত্তর ছাত্র সমাজ, বিশেষত আর্থিকভাবে দুর্বল ও প্রান্তিক অঞ্চলের পড়ুয়া, যাদের ইন্টারনেট বা কম্পিউটারের মতো সুবিধা নেই তাঁদের প্রতি বৈষম্য করা হবে । চিঠিতে রাজ্যের তরফ থেকে জারি করা অ্যাডভাইজারির কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজ্যের তরফ থেকে জারি করা অ্যাডভাইজারি 29 এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জারি করা গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে । ইতিমধ্যে যে রাজ্যের বহু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের অ্যাডভাইজারি মেনে মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছে, তাও জানানো হয়েছে । মাঝপথে প্রক্রিয়া থামানো কঠিন হবে । পড়ুয়া ও শিক্ষক উভয়ই যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরীক্ষা আবশ্যিক করার বিষষটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে ।

কোরোনা আবহে দেশ ও বিদেশে কোন কোন জায়গা অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটি বন্ধ রাখা ও পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাও জানানো হয়েছে । বলা হয়েছে, জাপান, ইংল্যান্ড ও কানাডায় কোরোনার কারণে অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে । পঞ্জাব, ওড়িশা, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, পণ্ডিচেরি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । IIT খড়গপুর, মুম্বই, কানপুর এবং রোয়ার্কের মতো প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা বাতিল করেছে । তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু পাবলিক হেলথে প্রভাব ফেলবে না, পড়ুয়াদের উপর অর্থনৈতিক প্রভাবও পড়বে । শিক্ষাক্ষেত্র যে কেন্দ্র-রাজ্য যুগ্মতালিকায় রয়েছে সে কথাও চিঠিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন মণীশ জৈন ৷ রাজ্যের আবেদন সত্ত্বেও কেন্দ্র যে একবারও রাজ্যের মতামত নেয়নি তাও জানানো হয়েছে । সবশেষে, আবশ্যিকভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আবেদন জানানো হয়েছে ।

চিঠিতে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন লিখেছেন, পড়ুয়াদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য এবং তাঁদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে গোটা বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের 6 জুলাইয়ের সংশোধিত গাইডলাইন রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক না করে পড়ুয়াদের স্বার্থরক্ষার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারকে নিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে দেওয়া হোক।

কলকাতা, 9 জুলাই: গত 6 জুলাই পরীক্ষা ও শিক্ষাবর্ষ সংক্রান্ত সংশোধিত গাইডলাইনে পড়ুয়াদের পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন । অন্যদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়ায় সায় নেই রাজ্যের । অবস্থান স্পষ্ট করে আজ পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন চারপাতার চিঠি পাঠালেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব অমিত খারেকে । চিঠিতে কোন কোন কারণে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন সম্ভব নয়, তা বিস্তারিত জানিয়েছেন সচিব । এইসঙ্গে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনও জানানো হয়েছে ।

আগেই পরীক্ষা ছাড়াই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের অ্যাডভাইজারি জারি করেছিল রাজ্য শিক্ষা দপ্তর । যা মেনে রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়াদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় । এর মধ্যে গত 6 জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সংশোধিত গাইডলাইন পাঠায় ৷ যেখানে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধর হয় ৷ সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সেপ্টেম্বরের শেষের মধ্যে চূড়ান্ত সিমেস্টার ও চলতি বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে বলা হয় । বলা হয়, অফলাইন অর্থাৎ পেন-পেপারে, অনলাইন বা মিলিতভাবে অনলাইন-অফলাইন মোডে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে । এরপরই পরীক্ষা হবে কি না তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ছাত্র-ছাত্রীরা । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন ।

চলতি বছর 29 এপ্রিলের মঞ্জুরি কমিশনের জারি করা গাইডলাইন তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, ওই গাইডলাইনে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রয়োজনীয় ফ্লেক্সিবিলিটি দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, 6 জুলাইয়ে সংশোধিত গাইডলাইনে দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সেপ্টেম্বরের শেষের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে । যা আগের গাইডলাইনের বিরোধী । কোরোনা ভাইরাস, লকডাউন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, যেভাবে চলতি বছর এপ্রিল মাস থেকে উত্তরোত্তর কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অফলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে কি রাজ্য তথা দেশে, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই । দেশজুড়ে ডিজিটাল অ্যাক্সেসের সংখ্যতত্ত্ব দেখে বলা যেতে পারে, অনলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া উচিত হবে না । তাতে একটা বৃহত্তর ছাত্র সমাজ, বিশেষত আর্থিকভাবে দুর্বল ও প্রান্তিক অঞ্চলের পড়ুয়া, যাদের ইন্টারনেট বা কম্পিউটারের মতো সুবিধা নেই তাঁদের প্রতি বৈষম্য করা হবে । চিঠিতে রাজ্যের তরফ থেকে জারি করা অ্যাডভাইজারির কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজ্যের তরফ থেকে জারি করা অ্যাডভাইজারি 29 এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জারি করা গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে । ইতিমধ্যে যে রাজ্যের বহু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের অ্যাডভাইজারি মেনে মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছে, তাও জানানো হয়েছে । মাঝপথে প্রক্রিয়া থামানো কঠিন হবে । পড়ুয়া ও শিক্ষক উভয়ই যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরীক্ষা আবশ্যিক করার বিষষটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে ।

কোরোনা আবহে দেশ ও বিদেশে কোন কোন জায়গা অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটি বন্ধ রাখা ও পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাও জানানো হয়েছে । বলা হয়েছে, জাপান, ইংল্যান্ড ও কানাডায় কোরোনার কারণে অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে । পঞ্জাব, ওড়িশা, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, পণ্ডিচেরি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । IIT খড়গপুর, মুম্বই, কানপুর এবং রোয়ার্কের মতো প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা বাতিল করেছে । তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু পাবলিক হেলথে প্রভাব ফেলবে না, পড়ুয়াদের উপর অর্থনৈতিক প্রভাবও পড়বে । শিক্ষাক্ষেত্র যে কেন্দ্র-রাজ্য যুগ্মতালিকায় রয়েছে সে কথাও চিঠিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন মণীশ জৈন ৷ রাজ্যের আবেদন সত্ত্বেও কেন্দ্র যে একবারও রাজ্যের মতামত নেয়নি তাও জানানো হয়েছে । সবশেষে, আবশ্যিকভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আবেদন জানানো হয়েছে ।

চিঠিতে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন লিখেছেন, পড়ুয়াদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য এবং তাঁদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে গোটা বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের 6 জুলাইয়ের সংশোধিত গাইডলাইন রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক না করে পড়ুয়াদের স্বার্থরক্ষার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারকে নিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে দেওয়া হোক।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.