ETV Bharat / city

নারদ মামলা : ই-মেল আবেদনে আদালতের নিয়ম ভেঙেছে সিবিআই, দাবি সিংভির

নারদ মামলা অন্য রাজ্যে সরাতে ই-মেলে আবেদন করেছে সিবিআই ৷ সেই আবেদন পাঠানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে ৷ এতে আদালতের নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে বলে দাবি অভিযুক্তদের আইনজীবীর ৷

narada case : CBI violets the rules of court
নারদ মামলা : ইমেইল আবেদনে আদালতের নিয়ম ভেঙেছে সিবিআই, দাবি সিংভির
author img

By

Published : Jun 9, 2021, 7:48 PM IST

কলকাতা, 9 জুন : নারদ মামলা এই রাজ্য থেকে সরানোর জন্য সিবিআই যে আবেদন জানিয়েছিল, তার ওপর শুনানি চলছে ৷ শুনানি হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ৷ বুধবার শুনানির শুরুতেই নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইন মন্ত্রীর হয়ে হলফনামা দাখিল করতে যাব প্রবীণ আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী ৷ সঙ্গে সঙ্গে তার বিরোধিতা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা ৷

আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর বক্তব্য, ‘‘সিবিআই 2 জুন অতিরিক্ত হলফনামা দাখিল করেছে ৷ তাহলে আমরা কেন হলফনামা দিতে পারব না ?’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির রাজেশ বিন্দোল তখন জানান, ‘‘আদালত হলফনামা দাখিল করার অনুমোদন দিচ্ছে না ৷ সিবিআইয়ের বক্তব্য ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷ তাই আমরা এই হলফনামা গ্রহণ করছি না ৷’’

এর পাশাপাশি বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্য়ায়ও বলেন, ‘‘আগে জানলে সলিসিটর জেনারেল সেইভাবে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারতেন ৷’’ তখন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয় ৷’’

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা তখন বলেন, ‘‘আমার বক্তব্য পেশ করার সময় আমি বলেছিলাম যে প্রতিবাদী নেতাদের পার্টি করা হলেও কেউ হলফনামা পেশ করেননি ৷ এখন তাঁরা নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা করছেন ৷’’

রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘নতুনভাবে যাঁরা মামলায় পার্টি হয়েছেন, তাঁদের হলফনামা জমা দেওয়ার সময় দিতে হবে ৷ আমরা মাত্র সাতদিনের মধ্যে হলফনামা পেশ করেছি ৷ প্রয়োজন হলে সিবিআইকে আরও সওয়াল করার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক ৷’’

আরও পড়ুন : নারদ কাণ্ডে নয়া মামলা রুজু কলকাতা হাইকোর্টে

তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিনদাল বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই মামলা এক সপ্তাহ ধরে শুনছি ৷ আপনি কি চান আমরা আবার একই বিষয়ে শুনি ?’’ তখন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, ‘‘আদালত পরিচালনার একটা নিয়ম আছে, মর্যাদা আছে ৷ যা হচ্ছে তা অভূতপূর্ব ৷ আদালত অবিলম্বে পদক্ষেপ করে একটা উদাহরণ তৈরি করুক ৷’’

এরপরই সিবিআইয়ের কাছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ চায় আদালত ৷ রাজ্যের তরফে অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত তখন বলেন, ‘‘হ্যাঁ সত্যিই অভূতপূর্ব! সিবিআই একটা চিঠি দিয়ে মামলা স্থানান্তরের আবেদন করেছে আদালতে ৷’’ সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয় তারা আদালতকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে তৈরি ৷

ঘটনায় অভিযুক্তদের তরফে এরপর অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘‘সিবিআই যেভাবে ই-মেল করে মামলা স্থানান্তর করার আবেদন জানিয়েছে, যদি এই পদ্ধতিতে আদালতে আসা শুরু করেন মামলাকারীরা, তাহলে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের জামিন মঞ্জুর করার সময় বিচারক সব দিক বিচার করেই জামিন মঞ্জুর করেছিলেন ৷ তিনি তাঁর নির্দেশে সমস্ত কিছুর উল্লেখ করেছেন ৷ এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক বছর পরে এই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সেটাও এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ৷ একটা সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত ৷’’

সিংভি বলেন, সব পক্ষের সমস্ত বক্তব্য নথিবদ্ধ করার পরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক তার রায়দান করেছেন ৷ শুধুমাত্র বিক্ষোভের কারণে তাঁর নির্দেশকে ত্রুটিপূর্ণ বলা যায় না ৷ সাত পৃষ্ঠার নির্দেশনামায় সিবিআই আদালতের বিচারক কোথাও বলেননি যে তাঁকে ভয় দেখানো হয়েছে ৷ মামলা স্থানান্তর করা হলে অভিযুক্তদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই সিবিআইকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে তারা মারাত্মক চাপের কারণেই মামলা স্থানান্তর করতে চাইছে ৷

আদালতের দ্বিতীয়ার্ধে ফের বলতে শুরু করেন অভিষেক মনু সিংভি ৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে মূল যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে মবোক্রেসি ৷ এটার জন্য সিবিআইকে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে ৷’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের একটা নিয়ম আছে মামলা দাখিল করার ক্ষেত্রে ৷ সিবিআই নারদা মামলা এ রাজ্য থেকে সরানোর যে আবেদন জানিয়েছিল, তার জন্য সেই আইন ভঙ্গ করা যায় না ৷’’

আরও পড়ুন : Narada Case : নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী-সহ মলয় ও কল্যাণের নাম জড়ানোর সিবিআইয়ের নিন্দায় বার কাউন্সিল

নারদ মামলা স্থানান্তর করার যে মামলা, সেটির কোনও সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ৷ সংবিধানের 226 নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনও মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ অপর পক্ষকে মামলার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল না করে দেওয়া যায় না ৷ সিবিআই যেভাবে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে ইমেইল করেছিল সেটা একমাত্র জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রেই হতে পারে ৷ এখানে আদালতের আইন ভঙ্গ করা হয়েছে ৷ অভিষেক মনু সিংভির এই বক্তব্যের পরই এদিনের মতো শুনানি শেষ হয়ে যায় ৷

কলকাতা, 9 জুন : নারদ মামলা এই রাজ্য থেকে সরানোর জন্য সিবিআই যে আবেদন জানিয়েছিল, তার ওপর শুনানি চলছে ৷ শুনানি হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ৷ বুধবার শুনানির শুরুতেই নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইন মন্ত্রীর হয়ে হলফনামা দাখিল করতে যাব প্রবীণ আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী ৷ সঙ্গে সঙ্গে তার বিরোধিতা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা ৷

আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর বক্তব্য, ‘‘সিবিআই 2 জুন অতিরিক্ত হলফনামা দাখিল করেছে ৷ তাহলে আমরা কেন হলফনামা দিতে পারব না ?’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির রাজেশ বিন্দোল তখন জানান, ‘‘আদালত হলফনামা দাখিল করার অনুমোদন দিচ্ছে না ৷ সিবিআইয়ের বক্তব্য ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷ তাই আমরা এই হলফনামা গ্রহণ করছি না ৷’’

এর পাশাপাশি বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্য়ায়ও বলেন, ‘‘আগে জানলে সলিসিটর জেনারেল সেইভাবে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারতেন ৷’’ তখন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয় ৷’’

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা তখন বলেন, ‘‘আমার বক্তব্য পেশ করার সময় আমি বলেছিলাম যে প্রতিবাদী নেতাদের পার্টি করা হলেও কেউ হলফনামা পেশ করেননি ৷ এখন তাঁরা নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা করছেন ৷’’

রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘নতুনভাবে যাঁরা মামলায় পার্টি হয়েছেন, তাঁদের হলফনামা জমা দেওয়ার সময় দিতে হবে ৷ আমরা মাত্র সাতদিনের মধ্যে হলফনামা পেশ করেছি ৷ প্রয়োজন হলে সিবিআইকে আরও সওয়াল করার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক ৷’’

আরও পড়ুন : নারদ কাণ্ডে নয়া মামলা রুজু কলকাতা হাইকোর্টে

তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিনদাল বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই মামলা এক সপ্তাহ ধরে শুনছি ৷ আপনি কি চান আমরা আবার একই বিষয়ে শুনি ?’’ তখন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, ‘‘আদালত পরিচালনার একটা নিয়ম আছে, মর্যাদা আছে ৷ যা হচ্ছে তা অভূতপূর্ব ৷ আদালত অবিলম্বে পদক্ষেপ করে একটা উদাহরণ তৈরি করুক ৷’’

এরপরই সিবিআইয়ের কাছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ চায় আদালত ৷ রাজ্যের তরফে অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত তখন বলেন, ‘‘হ্যাঁ সত্যিই অভূতপূর্ব! সিবিআই একটা চিঠি দিয়ে মামলা স্থানান্তরের আবেদন করেছে আদালতে ৷’’ সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয় তারা আদালতকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে তৈরি ৷

ঘটনায় অভিযুক্তদের তরফে এরপর অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘‘সিবিআই যেভাবে ই-মেল করে মামলা স্থানান্তর করার আবেদন জানিয়েছে, যদি এই পদ্ধতিতে আদালতে আসা শুরু করেন মামলাকারীরা, তাহলে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের জামিন মঞ্জুর করার সময় বিচারক সব দিক বিচার করেই জামিন মঞ্জুর করেছিলেন ৷ তিনি তাঁর নির্দেশে সমস্ত কিছুর উল্লেখ করেছেন ৷ এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক বছর পরে এই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সেটাও এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ৷ একটা সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত ৷’’

সিংভি বলেন, সব পক্ষের সমস্ত বক্তব্য নথিবদ্ধ করার পরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক তার রায়দান করেছেন ৷ শুধুমাত্র বিক্ষোভের কারণে তাঁর নির্দেশকে ত্রুটিপূর্ণ বলা যায় না ৷ সাত পৃষ্ঠার নির্দেশনামায় সিবিআই আদালতের বিচারক কোথাও বলেননি যে তাঁকে ভয় দেখানো হয়েছে ৷ মামলা স্থানান্তর করা হলে অভিযুক্তদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই সিবিআইকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে তারা মারাত্মক চাপের কারণেই মামলা স্থানান্তর করতে চাইছে ৷

আদালতের দ্বিতীয়ার্ধে ফের বলতে শুরু করেন অভিষেক মনু সিংভি ৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে মূল যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে মবোক্রেসি ৷ এটার জন্য সিবিআইকে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে ৷’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের একটা নিয়ম আছে মামলা দাখিল করার ক্ষেত্রে ৷ সিবিআই নারদা মামলা এ রাজ্য থেকে সরানোর যে আবেদন জানিয়েছিল, তার জন্য সেই আইন ভঙ্গ করা যায় না ৷’’

আরও পড়ুন : Narada Case : নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী-সহ মলয় ও কল্যাণের নাম জড়ানোর সিবিআইয়ের নিন্দায় বার কাউন্সিল

নারদ মামলা স্থানান্তর করার যে মামলা, সেটির কোনও সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ৷ সংবিধানের 226 নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনও মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ অপর পক্ষকে মামলার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল না করে দেওয়া যায় না ৷ সিবিআই যেভাবে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে ইমেইল করেছিল সেটা একমাত্র জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রেই হতে পারে ৷ এখানে আদালতের আইন ভঙ্গ করা হয়েছে ৷ অভিষেক মনু সিংভির এই বক্তব্যের পরই এদিনের মতো শুনানি শেষ হয়ে যায় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.