কলকাতা, 1 জুলাই : এ এক জটিল পরিস্থিতি । শাসকদলে যোগ দিয়েও সরকারিভাবে তিনি বিরোধী । আবার বিরোধী হয়েও তিনি বিরোধী দলে নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে কৃষ্ণনগরের উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়কে নিয়ে বিজেপির অস্বস্তির শেষ নেই ৷ আপাতত পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে তাঁর নির্বাচন আটকাতে সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি ৷ পাশাপাশি তাঁর বিধায়ক পদ যাতে খারিজ হয়, সেই নিয়েও কম দৌড়ঝাঁপ করছে না গেরুয়া শিবির ৷
আর এর মধ্যে নতুন সংযোজন বিধানসভায় মুকুল রায়ের (Mukul Roy) উপস্থিতি ৷ তিনি যেহেতু এখনও খাতায়-কলমে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) বিধায়ক, তাই তিনি বিরোধীদের সঙ্গেই বসবেন বলে খবর ৷ কিন্তু কোথায় তাঁর জায়গা হবে ? এই প্রশ্নই আপাতত ঘুরছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে ৷
আরও পড়ুন : নয়াদিল্লিতে শুভেন্দু-অমিত বৈঠক ঘিরে জল্পনা
বিধানসভা সূত্রে খবর, মুকুল রায় বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Biman Banerjee) তাঁর আসন নির্ধারণের জন্য কোনও অনুরোধ করেননি । তবে এটা নিশ্চিত যে, আপাতত তাঁকে বিরোধী দলের বিধায়কদের সঙ্গেই বসতে হবে । কিন্তু মুকুল রায়ের মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক কি বিরোধী বেঞ্চের একবারে শেষ দিকে বসবেন ? তাতে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব হ্রাস পাবে না তো ! এই জল্পনা যখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন বিধানসভার (West Bengal Assembly) সূত্রে জানা যাচ্ছে যে মুকুল রায়কে সামনের সারির আসন দেওয়া হতে পারে ।
সাধারণত রাজ্যের বিরোধী দলের আসন হয় অধ্যক্ষের বাঁদিকে । অধ্যক্ষের বাঁদিকে বিধায়ক গ্যালারির প্রথম সারিতে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা-সহ অন্যরা । স্বাভাবিকভাবেই মুকুল রায়কে কোনওভাবেই ওই সারিতে বসতে দিতে চাইবেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । এই অবস্থায় মুকুল রায়ের জায়গা হতে পারে বাঁদিকের দ্বিতীয় সারির প্রথম বেঞ্চে । অর্থাৎ যেখানে এতদিন বাম পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে সুজন চক্রবর্তী বসতেন ।
আরও পড়ুন : লোকাল ট্রেন-মেট্রো না চালানো খামখেয়ালি, চালু করতে রেলমন্ত্রীকে চিঠি স্বপনের
অপর সূত্রের খবর বলছে, তাঁকে আনিসুর রহমানের আসনে বসতে দেওয়া হতে পারে । সাধারণত সাংবিধানিক রীতি অনুসারে বিধানসভার তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জোট বা দলের সদস্যদের এই অংশে বসতে দেওয়া হয় । যেহেতু তৃতীয় শক্তি হিসেবে কোনও দল বা জোট এবার বিধানসভায় নেই, তাই মুকুল রায় এবং সংযুক্ত মোর্চার বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে এই সামনের সারিতে দেওয়া হতে পারে । এর অর্থ মুকুল রায় এবং নওশাদ সিদ্দিকির আসন হবে এক বেঞ্চে ।
যদি এই বেঞ্চের অবস্থানটা এমন যে, মুকুল রায় এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আলাদা আলাদা সারিতে বসলেও থাকবেন একে অপরের পাশাপাশি । যা রাজ্যের বিরোধী দলনেতার জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির হতে চলেছে । যেহেতু কে কোথায় বসবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন অধ্যক্ষ ৷ তাই এক্ষেত্রে আপত্তি থাকলেও অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না শুভেন্দু অধিকারীর ।
আরও পড়ুন : সব জায়গাতেই রাজনীতি, সংযত হওয়ার বার্তা রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের
এখন দেখার শুক্রবার যখন বিধানসভার অধিবেশন চালু হবে, তখন এই বিষয়টি নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
