কলকাতা, 27 জুলাই: বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের 38 জন বিধায়কের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে ! বুধবার কলকাতায় দলের রাজ্য সদর কার্যালয়ে বসে এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি-র তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) ৷ এদিন সকালে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তিনি ৷ তারপরই হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মিঠুন ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, তাঁর কাছে একটি 'ব্রেকিং নিউজ' আছে ! মিঠুন দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের 38 জন বিধায়ক নিয়মিতভাবে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন ! এমনকী, তাঁদের মধ্যে 21 জন সরাসরি মিঠুনের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছেন !
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একাধিকবার রাজ্যে এসেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী ৷ বিজেপি-র হয়ে সেই সময় প্রচারও করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, তারপর সেভাবে আর রাজ্য রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় পাওয়া যায়নি 'মহাগুরু'কে ৷ সেক্ষেত্রে বুধবার হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে মিঠুনের এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷ তবে কি বিজেপি নেতা হিসাবে আবারও সক্রিয়তা বাড়াবেন মিঠুন ? নাকি পুরোটাই ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ ? এমন প্রশ্নের উত্তরে মিঠুন জানান, তাঁর এদিনের কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত ছিল ৷ দলীয় বিধায়কদের মনোবল বাড়াতেই তিনি এই বৈঠক করেন ৷
আরও পড়ুন: Mamata Dares Centre: মহারাষ্ট্রের মতোই বাংলাতেও সরকার ফেলতে চাইছে বিজেপি: মমতা
অন্যদিকে, এদিনই হুগলির উত্তরপাড়ায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) দাবি করেন, 2024-এর সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি আর ক্ষমতায় ফিরবে না ৷ সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মিঠুন বলেন, চব্বিশে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরুক বা না ফিরুক, তাঁদের দল লড়াই থেকে সরবে না ৷ একইসঙ্গে, রাজ্যের প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পরস্থিতি তুলে ধরেন মিঠুন ৷ তিনি বলেন, "একদিন সকালে উঠে দেখলাম, বিজেপি-শিবসেনার সরকার গঠিত হয়ে গিয়েছে !" মিঠুনের প্রশ্ন, মহারাষ্ট্রে যদি এমনটা ঘটতে পারে, তাহলে বাংলায় ঘটবে না কেন ?
এরপরই সাংবাদিকদের 'ব্রেকিং নিউজ' দেন মিঠুন ৷ জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের 38 জন বিধায়ক নিয়মিত বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ৷ তাহলে কি আগামিদিনে মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাতেও বিদ্রোহী হয়ে উঠবেন শাসকদলের বিধায়করা ? আর তার জেরেই কি ঘটবে 'পরিবর্তনের পরিবর্তন' ? এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাননি মিঠুন ৷ তবে, তাঁর বার্তা স্পষ্ট ৷ সাম্প্রতিক নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে শাসকদলের অন্দরে যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে, কার্যত সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বিজেপি-র এই তারকা নেতা ৷
খুব স্বাভাবিকভাবেই এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের গ্রেফতার হওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে ৷ মিঠুন বলেন, তিনি কারও সম্পর্কে ব্যক্তিগত কোনও মন্তব্য করবেন না ৷ তবে, কারও বিরুদ্ধে যদি কোনও নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ না থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন ৷ কিন্তু, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ থাকলে তাঁকে বাঁচানোর ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতিরও নেই ! এদিন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন মিঠুন ৷ তাঁর মতে, ইদানীং এমন সব ঘটনা ঘটছে, তাতে নেতাদের প্রতি আমজনতার বিশ্বাস ও ভরসা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷