কলকাতা, 25 ফেব্রুয়ারি : অভিনব কায়দায় পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ বৃহস্পতিবার সকালে চারচাকা গাড়ির বদলে ইলেকট্রিক স্কুটারে চড়ে নবান্নে গেলেন তিনি ৷ চালকের আসনে ছিলেন রাজ্য়ের পৌর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম ৷
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রীর এই পদক্ষেপ নিয়ে যখন আলোচনা সবে শুরু হয়েছে, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বোঝা গেল, আসল খেলা তখনও বাকি ছিল ৷ মমতার সকালের স্কুটার সফর ছিল ট্রেলারমাত্র ৷ পুরো ছবি দেখা গেল বিকেলে ৷ নিজেই স্কুটার চালিয়ে নবান্ন থেকে কালীঘাটের বাড়িতে ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তবে স্কুটার চালানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় আগাগোড়াই নিরাপত্তারক্ষীদের সহযোগিতা নিতে হল তাঁকে ৷ মুখ্য়মন্ত্রীকে এমন রূপে দেখে তাজ্জব হয়ে যান পথচলতি মানুষও ৷ গাড়ি থামিয়ে, হাঁটা বন্ধ করে মুখ্যমন্ত্রীর স্কুটার চালানোর ছবি মোবাইলে ভিডিও ক্য়ামেরায় বন্দী করতে দেখা যায় তাঁদের ৷
‘স্কুটার অভিযান’ শেষে কালীঘাটের বাড়িতে ঢোকার মুখে ছোটোখাট একটি ভাষণও দেন মমতা ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, পেট্রোপণ্য়ের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতেই আমজনতার মতো এদিন স্কুটারে চড়ে অফিস যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷ পেট্রলে চলা দু’চাকার যানের বদলে বেছে নেন ইলেকট্রিক স্কুটারকে ৷
মমতার অভিযোগ, মোদি জমানায় পেট্রোপণ্য়ের দাম আকাশ ছুঁয়েছে ৷ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও ভারতের বাজারে বেড়েছে পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিনের দাম ৷ রান্নার গ্য়াসের দামও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ ৷ এর পিছনে রহস্য আছে, খেলা আছে বলে দাবি মুখ্য়মন্ত্রীর ৷ তাঁর সাফ কথা, হয় মোদি সরকার গ্য়াসের দাম কমিয়ে সিলিন্ডার পিছু 400 টাকা করুক ৷ আর না হলে গদি ছাড়ুক ৷
আরও পড়ুন: রাবণ-দানব মিলে দেশ চালাচ্ছে, হুগলি থেকে বাণ মমতার
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এবারের বাজেটে কেরোসিনের উপর থেকে 4 হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এর ফলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের গরিব মানুষ ৷ সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্য়ের প্রায় 2 কোটি বাসিন্দাও ৷
মমতার দাবি, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীর দলের প্রচারে রাজ্য়ে এলেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তাঁরা কোনও কথা বলেন না ৷ সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গরিব মানুষের বাড়িতে গিয়ে বিজেপি নেতারা খাওয়া-দাওয়া করেন, কারণ আসলে তাঁরা গরিববিরোধী ৷ মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত, গরিববিরোধী ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলতেই বিজেপির নেতারা দরিদ্রের বাড়িতে খান ৷ অথচ থাকেন এলাহি হোটেলে ৷ এমনকি এই প্রসঙ্গে মোতেরা স্টেডিয়ামের নামকরণ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী ৷
তবে রাজনীতির পাশাপাশি এদিনের অ্য়াডভেঞ্চার নিয়ে কিঞ্চিত রসিকতা করেছেন মমতা ৷ কালীঘাটে পৌঁছেই হাসিমুখে জানিয়ে দেন, একদিনেই অনেকটা স্কুটার চালাতে শিখে গিয়েছেন ৷ এবার যখনই ইচ্ছা হবে একা একা যেখানে সেখানে চলে যাবেন ৷ এভাবেই ৷