কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি : বুধবার দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের মঞ্চ থেকে আরও একবার রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে (Bengal Governor Jagdeep Dhankhar) আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নাম না-করে তাঁকে ঘোড়ার পাল বলেও কটাক্ষ করলেন তিনি (Mamata Attacks Dhankhar) ।
জাতীয় ভোটার দিবসে বিধানসভায় গিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যের পর থেকেই রাজ্য সরকার ও রাজভবনের সংঘাত চরমে উঠেছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক করে দিয়েছেন (Mamata Blocks Dhankhar in Twitter) । এরপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দিল্লিতে এবং কলকাতায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব । এই অবস্থায় বুধবার নাম না-করে রাজ্যপালকে 'ঘোড়ার পাল' বলে কটাক্ষ করলেন মমতা ।
বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন ছিল (TMC Organisational Election) । আরও একবার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত (Mamata Re Elected as TMC Chairperson) হওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘এক ঘোড়ার পালকে পাঠিয়েছে রাজ্য শাসন করার জন্য । 26 জানুয়ারি প্যারেডের সময় এক ঘোড়ার পালকে দেখছিলাম । আমাদের মাউন্টেড পুলিশ রয়েছে । তাঁরাও জানতে পেরেছেন রাজ্যে এক ঘোড়ার পাল আছে । তাই ওরা রেগে গিয়েছে ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চোখা চোখা বাক্যবাণ যে রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করেই, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের । কারণ, সাধারণতন্ত্র দিবসে মুখ্যমন্ত্রী কোনও কথা বলেননি রাজ্যপালের সঙ্গে । সেই ছবি সবাই দেখেছে । কাজেই নাম না-করলেও এই আক্রমণের গতিমুখ কোন দিকে ছিল, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত কারও ।
রাজ্যপাল প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘সকাল নেই, সন্ধে নেই আমাকে গালাগাল দিচ্ছে । কখনও আবার টুইট করছে । কখনও আমারই টুইট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিচ্ছে । খালি কৈফিয়ত চাইছে, কী করতে হবে । মা ক্যান্টিন চলছে । গরিব মানুষ 5 টাকায় খেতে পাচ্ছে । তা নিয়েও প্রশ্ন হচ্ছে । কেন হচ্ছে ? কোথা থেকে হচ্ছে ? আর খালি বলছে দেখ লেঙ্গে । তুমি কে ভাই ? একবারও তো কাউন্সিলর হওনি । দশবার দলবদল করেছো । তুমি কী জানো ?’’
এদিন বারবার প্রশাসনিক কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘ঘরে বসে দূরবীন দিয়ে উনি শুধু বাংলায় খুন, হিংসা দেখছেন । দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে কী হয়েছে দেখেছেন ? গুজরাতে কী হচ্ছে দেখছেন ? ওঁকে সব কিছুর কৈফিয়ত দিতে হবে বলছে । বলছে আমার নির্দেশ মানতে হবে । মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি আধিকারিককে ডাকা যায় না । কিন্তু যখন তখন মুখ্যসচিবকে, পুলিশ সুপার ডিজিকে ডাকছে ডাকছেন । দিস ইজ কলড ডেমোক্রেসি ?’’
এদিন রাজ্যপালকে যেভাবে বিঁধেছেন মমতা, তা কার্যত নজিরবিহীন । অত্যন্ত কৌতুকের ভঙ্গিতে হালকা চালে একের পর এক তোপ দেগেছেন তিনি । রাজ্যপালের তলব প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী । কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত…পুলিশ কমিশনারকে বলছে সকাল 10 টায় এসে দেখা করো । চিফ সেক্রেটারিকে বলছে 11 টায় এসে দেখা করো । হোম সেক্রেটারিকে বলছে 12 টায় এসে দেখা করো ।’’