কলকাতা, 17 জানুয়ারি : এবার কি তবে ঘোষ বনাম ঘোষ ? সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনেই রণংদেহি তৃণমূল নেতা তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ৷ নিশানায় আর এক ঘোষবাবু, বিজেপি জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ৷ এদিন সকালে সরাসরি দিলীপের নাম উল্লেখ করে একটি টুইট করেন কুণাল (Kunal Ghosh attacks Dilip Ghosh on Twitter) ৷ তাঁর অভিযোগ, ‘কৌশলে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন’ দিলীপ ৷ ‘বিজেপির ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত’ করাই দিলীপের আসল উদ্দেশ্য ৷ আর সেই কারণেই দলীয় ‘বিদ্রোহে মদত’ দিচ্ছেন তিনি ৷ দলের ‘শাসক গোষ্ঠী’ যেভাবে ‘বিপাকে’ পড়ছেন, তা তিনি (দিলীপ ঘোষ) ‘উপভোগ’ করছেন ৷ কিন্তু, পাছে তাঁর উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে চলে আসে, তাই সেটা আড়াল করতেই ‘কৌশলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বলছেন’ ৷ এসব ‘ওঁর মনের কথা (মন কি বাত) নয়’ ৷ বরং ‘বিজেপির ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত করাটাই ওঁর মনের ইচ্ছা (মন কি চাহত)’ ৷ এখন দেখার, কুণাল ঘোষের এই টুইট আক্রমণের জবাব দিলীপও দেন কিনা !
আরও পড়ুন : Amit-Kunal Tweet Fight : কল্যাণের ভাইরাল ভিডিয়ো টুইট অমিত মালব্যের, ইটের বদলে পাটকেল কুণালের
গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রম লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, দুই তরফের অন্দরেই ক্রমে মাথাচাড়া দিচ্ছে অস্বস্তি ৷ সেসব ঢাকতে দু’পক্ষের নেতারাই প্রতিপক্ষের ঘরের কোন্দলকে হাতিয়ার করছেন ৷ শাসক তৃণমূলে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ই (Mamata Banerjee) যে শেষ কথা, এ আর নতুন করে বলার কিছু নেই ৷ কিন্তু, তাঁর ‘ডেপুটি’ কে ? এই বিষয়ে খাতা-কলম কী বলছে, তাতে কিছু যায় আসে না ৷ তবে দলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী, সবাই যেভাবে প্রত্যেকটি বক্তব্যের শেষে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) গুণগান করার পরই অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বর কথা বলছেন, তাতে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে চিনে নিতে খুব অসুবিধা হয় কী ? তার উপর সম্প্রতি তৃণমূলের সংবিধান বদল করে নেতৃত্বে নতুন পদ তৈরি নিয়েও একটা কানাঘুষো চলছে ৷ শোনা যাচ্ছে, মমতার পর অভিষেকের নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দিতেই নাকি এত আয়োজন !
নিন্দুকেরা বলছেন, অভিষেকের এই উত্থান দলের একাংশের নাকি ভাল ঠেকছে না ৷ শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Kalyan Banerjee) ‘বিদ্রোহ’ তারই বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করছেন কেউ কেউ ৷ আর কল্যাণের এই ‘বিদ্রোহ’কে হাতিয়ার করেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির ৷ রবিবার বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya) একটি টুইট করেন ৷ তাতে তাঁর ইঙ্গিত, মমতার ইচ্ছেতেই কল্যাণের এই অভিষেক-বিরোধিতা ! প্রধান প্রতিপক্ষের মুখ্য দুই নেতাকে (মমতা-অভিষেক) পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিতেই অমিতের এই প্রচেষ্টা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
-
দিলীপ ঘোষের 'কঁহি পে নিগাহে, কঁহি পে নিশানা।'
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) January 17, 2022 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
উনি রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহে মদত দিচ্ছেন, শাসক গোষ্ঠীর বিপাকে পড়া উপভোগ করছেন। আর নজর ঘুরিয়ে বিভ্রান্তি রাখতে কৌশলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বলছেন। এসব ওঁর 'মন কি বাত' নয়। বিজেপির ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত করাটাই ওঁর ' মন কি চাহত।'
😎
">দিলীপ ঘোষের 'কঁহি পে নিগাহে, কঁহি পে নিশানা।'
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) January 17, 2022
উনি রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহে মদত দিচ্ছেন, শাসক গোষ্ঠীর বিপাকে পড়া উপভোগ করছেন। আর নজর ঘুরিয়ে বিভ্রান্তি রাখতে কৌশলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বলছেন। এসব ওঁর 'মন কি বাত' নয়। বিজেপির ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত করাটাই ওঁর ' মন কি চাহত।'
😎দিলীপ ঘোষের 'কঁহি পে নিগাহে, কঁহি পে নিশানা।'
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) January 17, 2022
উনি রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহে মদত দিচ্ছেন, শাসক গোষ্ঠীর বিপাকে পড়া উপভোগ করছেন। আর নজর ঘুরিয়ে বিভ্রান্তি রাখতে কৌশলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বলছেন। এসব ওঁর 'মন কি বাত' নয়। বিজেপির ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত করাটাই ওঁর ' মন কি চাহত।'
😎
আরও পড়ুন : Meeting with Matua Leaders : জরুরি ভিত্তিতে ঠাকুরবাড়িতে মহাসংঘের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে শান্তনু ঠাকুর
স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল অমিতের এই ঢিল চুপচাপ হজম করার পথে হাঁটেনি ৷ তাঁকে পাল্টা পাটকেল ছুড়তে টুইটারেই জবাব দিয়েছেন কুণাল ৷ এর 24 ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দিলীপকে নিশানা করলেন তিনি ৷ প্রসঙ্গত, ইদানীং রাজ্য বিজেপির সময়টাও বড় একটা ভাল যাচ্ছে না ৷ দলের মতুয়া বিধায়কদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া দিয়ে যা প্রকাশ্যে এসেছিল ৷ আর এখন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা বনগাঁর সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ‘বিক্ষুব্ধ‘দের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন ৷ তাতে রাজ্য নেতৃত্বের চাপ বাড়লেও দিলীপের বক্তব্য, বিক্ষুব্ধদের কথা রাজ্য নেতৃত্বের শোনা উচিত !
দিলীপের এই অবস্থানকেই হাতিয়ার করেছেন কুণাল ৷ একদিন আগে অমিত মালব্য যেমন মমতা বনাম অভিষেকের বিরোধ বাধানোর চেষ্টা করেছেন, তারই পাল্টা এদিন দিলীপের সঙ্গে বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিবাদ বাধিয়ে দেওয়া বন্দোবস্ত করেন কুণাল ৷