কলকাতা, 26 নভেম্বর: এ বার কলকাতা পুলিশের ন'টি ডিভিশনে পৃথক পৃথক ইন্টারপ্রেটার (Kolkata Police Interpreter) রাখার পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুলিশ । আলাদা আলাদা ইন্টারপ্রিটার থাকলে যদি শহরের কোনও থানায় কোনও মূক ও বধির মহিলা নির্যাতনের (Deaf and dumb rape victim) কথা জানাতে আসেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর অভিযোগ গ্রহণ করতে অনেকটাই সুবিধা হবে পুলিশের (Kolkata Police news)। সময়ও নষ্ট হবে না ।
এন্টালি এলাকায় এক মূক ও বধির মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল । সেই ঘটনায় প্রায় চার মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও পুলিশের তরফ থেকে কোনও ইন্টারপ্রেটারের ব্যবস্থা করা যায়নি । ফলে সে ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে স্তব্ধ হয়ে থাকে তাঁর অভিযোগ বা বয়ান রেকর্ডের ব্যবস্থা । এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের একজন আধিকারিক জানান, যদি থানায় ধর্ষণের (Kolkata crime news) অভিযোগ আসে, তাহলে সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় পুলিশকে । পাশাপাশি সেই নির্যাতিতা যদি মূক ও বধির হন, তাহলে সে ক্ষেত্রে আরও কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় তদন্তকারীদের । একজন ইন্টারপ্রেটর থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে । কিন্তু এন্টালির সেই ঘটনায় দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও কোনও ইন্টারপ্রেটারের ব্যবস্থা করতে পারেননি তদন্তকারীরা । এ বার এই ঘটনাকে মাথায় রেখেই প্রত্যেকটি ডিভিশনে পৃথক পৃথক ইন্টারপ্রেটার রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে লালবাজার ।
এই বিষয়ে আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা (Criminal lawyer Anirban Guha Thakurta) ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয় বলেন, "কলকাতা পুলিশের এই উদ্যোগকে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হয় । যদি সত্যিই প্রত্যেকটি ডিভিশনে একজন করে ইন্টারপ্রেটার রাখার ব্যবস্থা করে লালবাজার, তাহলে সে ক্ষেত্রে তদন্তে অনেকটা অগ্রগতি হতে পারে ৷ পাশাপাশি এই বিশেষ বিশেষ অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে সময়টা একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে আমাদের কাছে ।"
আরও পড়ুন: Alipurduar Student Murder: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কিশোরীকে খুন, ধৃত প্রতিবেশী যুবক
পাশাপাশি আইনজীবী মহলের দাবি, এই সব ঘটনার ক্ষেত্রে নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে । সে ক্ষেত্রে দোষীদের চিহ্নিত করা এমনকী তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি মেনে যথাযোগ্য আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া নির্ভর করে নির্যাতিতার সেই বক্তব্যের উপর ।
এই একই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত (Criminal lawyer Kaushik Gupta) ইটিভি ভারতকে বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে মহিলারা যাঁরা যৌন অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন, তাঁরা যে ভাষায় অভিযোগটা করতে চান, সেটা পুলিশ অফিসাররা নিচ্ছেন না । অভিযোগ, একাধিক সময়ে পুলিশ এমন ধরনের প্রশ্ন করছে যাতে হয়তো নিগৃহীতারা অস্বস্তি বোধ করছেন ।’’
আরও পড়ুন: Model Rape: বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাত, হবু স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় গেলেন মডেল
অনেক সময় এমন হয় যে, এমন একজন মহিলা, হতে পারে তিনি মূক ও বধির, তিনি যা বলতে চাইছেন সেটা পরিষ্কার করতে পারছেন না । সেইজন্য প্রত্যেক জেলার থেকেও প্রত্যেক এলাকায় ইন্টারপ্রেটার রাখাটা খুব জরুরি এবং এইটা শুধু কলকাতা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নয়, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রত্যেকটি এলাকায় এই ধরনের ইন্টারপ্রেটার থাকা উচিত বলে মনে করছেন কৌশিক । অনেক সময় দেখা যায়, কোনও মহিলা ধর্ষণ কিংবা অন্যান্য অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অনেক সময়ে তাঁদের অভিযোগ গ্রাহ্য করে না । সে ক্ষেত্রে আইনে বলা হয়েছে, যদি এ ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও গাফিলতি ধরা পড়ে বা প্রমাণিত হয় তাহলে সেই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা শুরু করা হবে ৷
আরও পড়ুন: In-laws abuse : কালো বউকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হল শ্বশুরবাড়িতে