কলকাতা, 25 জুলাই : অবশেষে পাওয়া গেল খোঁজ । নদিয়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হল কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনে কর্মরত কনস্টেবলকে । তবে অভিযুক্ত গতবছরের অক্টোবর থেকে ডিউটিতে অনুপস্থিত ছিলেন ৷ গতরাতে তাঁকে বীজপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । ধৃতকে আজ শিয়ালদা আদালতে তোলা হবে ।
আরও পড়ুন : রক্ষকই ভক্ষক ! ডাকাতিতে জড়িত পুলিশ
ঘটনায় "কেঁচো খুঁড়তে কেউটে"-র সন্ধান পাওয়া যায় । সেই সূত্রে মামলার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা । তদন্তে উঠে আসে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল উৎপল করের নাম । বাড়ি উত্তর 24 পরগনার বামনগাছিতে । বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন । ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ওই কনস্টেবলই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড । কিন্তু শেষ রক্ষা হল না । লালবাজারের দাবি, ইতিমধ্যেই জেরায় তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন ।
আরও পড়ুন : অপহরণ ও ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড এক কনস্টেবল ? জটিল হচ্ছে রহস্য
চলতি মাসের 4 তারিখ নদিয়ার জুয়েলারি ব্যবসায়ী বাবলু নাথ লাখ খানেক টাকা আর গয়না নিয়ে বউবাজারে এসেছিলেন । অভিযোগ, ওই দিন হঠাৎই তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় একটি চারচাকা গাড়ি । বলা হয় পুলিশের রেড । বাবলুবাবুকে গাড়িতে উঠতে হবে তখনই । ভয় পেয়ে বাবলুবাবু অবশ্য ওই গাড়িতে উঠে পড়েন । তাঁর দাবি, তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় এয়ারপোর্ট চত্বরে । তিনি এরপর মুচিপাড়া থানায় গিয়ে পুলিশকে লিখিত অভিযোগ জানান ।
আরও পড়ুন : ব্যবসায়ী অপহরণে এখনও ফেরার মাস্টারমাইন্ড কনস্টেবল, গ্রেপ্তার টিপার
তদন্তে নামে পুলিশ । CCTV ক্যামেরার সূত্র ধরে প্রথমেই পাকড়াও করা হয় গাড়ির চালক নেপাল ধরকে । তাঁকে জেরা করেই জানা যায়, গাড়িটি ভাড়া করেছিল কলকাতা পুলিশের ASI আশিস চন্দ্র । সঙ্গে ছিল বাদল সরকার সহ তিনজন । পুলিশ বাদল, নেপাল এবং আশিসকে গ্রেপ্তার করে গত সপ্তাহে । এই মুহূর্তে তাঁরা রয়েছেন পুলিশি হেপাজতে ৷ গোটা ঘটনার তদন্তে মুচিপাড়া থানাকে সাহায্য করছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ।
তবে লালবাজারের গোয়েন্দারা কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না ঘটনায় টিপার কে? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাদলবাবুকে কড়া ভাবে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে সেই তথ্য । টিপার বাদলেরই পরিচিত মিঠুন নাথ ওরফে হোড় । তিনি শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা । নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বানপুর এলাকাতেও তাঁর বাড়ি আছে । তিনি বাবলু নাথের এলাকারই বাসিন্দা । ফলে বাবলুর অনেক কিছুই তিনি জানতেন ৷ মিঠুনবাবু নকল ফুলের ব্যবসা করেন । সেই সূত্রে তিনি দমদমে যাতায়াত করতেন ৷ সেখানেই বাদলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় । ঘটনার দিন মিঠুন বাবলুকে মাজদিয়া স্টেশন থেকেই ফলো করতে শুরু করেন । একই ট্রেনে আসেন শিয়ালদা । তারপর শিকারকে চিনিয়ে দেন আশিসবাবুদের । সেই সূত্রে মিঠুনকে এর আগে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ।