ETV Bharat / city

KMC Fire Audit : ফায়ার অডিটকে ঢাল করেই কি নথি নষ্টের পরিকল্পনা কলকাতা পৌরনিগমের - Kolkata Municipal Corporation

ফায়ার অডিট হবে কলকাতা পৌরনিগমে (Kolkata Municipal Corporation) ৷ তাই নথি বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ ৷ আর অপ্রোয়জনীয় নথি নষ্ট করে দিতে বলা হয়েছে ৷ কিন্তু কোন নথি অপ্রয়োজনীয়, তা ঠিক করবে কে ? তাহলে কি ফায়ার অডিটকে ঢাল করে নথি নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation Fire Audit Controversy) ?

kolkata municipal corporation fire audit controversy
KMC Fire Audit : ফায়ার অডিটকে ঢাল করেই কি নথি নষ্টের পরিকল্পনা কলকাতা পৌরনিগমের
author img

By

Published : Apr 11, 2022, 9:25 PM IST

কলকাতা, 11 এপ্রিল : ফায়ার অডিট করতে চাইছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ৷ তাই পৌরনিগমের বিভিন্ন বিভাগে থাকা নথিগুলিকে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ কলকাতা পৌরনিগমের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের তরফে এক নির্দেশিকার মাধ্যমে একথা জানানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু সঙ্গে একটি মৌখিক নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷ সেখানে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত ক্ষেত্রে নথি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা সম্ভব হচ্ছে না, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে সেগুলি নষ্ট করে ফেলতে হবে ৷

আর এই নির্দেশ নিয়েই তোলপাড় পৌরমহল । আধিকারিকদের অনেকেই এই নির্দেশ মানতে নারাজ । পৌরনিগমের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ফায়ার অডিটকে ঢাল করেই কি বিভিন্ন বিভাগের নথি নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation Fire Audit Controversy) ?

বর্তমানে একে একে নানা বিষয়ে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়ছে বা নানা ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়ছে, তখন এই নির্দেশ নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । তাঁদের কথায়, যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হলে বহু এমন নথির হদিস মিলবে না, যেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।

kolkata municipal corporation fire audit controversy
কলকাতা পৌরনিগমের নথি

যেমন উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে, 2013 সালে 435 ডায়মন্ড হারবার রোড ঠিকানার একটি ঘরে কলকাতা পৌরনিগম সারদা চিটফান্ড সংস্থাকে একই ঠিকানায় 16টি লাইসেন্স দেয় । এছাড়াও বহু এমন ঘটনা যার সঙ্গে এই সমস্ত নথি থাকা গুরুত্বপূর্ণ । আবার কেউ কোনও বিষয় আরটিআই করলে, তিনি কোনও তথ্য পাবেন না ।

পাশাপাশি বহু পুলিশ কেস বা মামলা সংক্রান্ত নথি লাগতেই পারে, প্রয়োজন সেক্ষেত্রে নথি মিলবে কী করে ? ত্রিফলা অনিয়ম থেকে শুরু করে আরও নানা ধরনের অনিয়মের যে অভিযোগগুলি উঠেছিল, সেই সংক্রান্ত নথিগুলি কী হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ এছাড়া একাধিক ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে । আর সেই আবহে এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন ।

কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, লাইসেন্স, কর মূল্যায়ন, বাজার, বস্তির মতো একাধিক একাধিক বিভাগকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যত নথি আছে সব এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে । সেটা করা না-গেলে নথিগুলো নষ্ট করে দিতে হবে । নিয়ম বলছে, গ্রেট এ ক্যাটাগরিতে থাকা নথি চিরকাল (60 বছর) সংরক্ষণ করে রাখতে হয় । বি ক্যাটাগরির নথি 20 বছর পর্যন্ত । সি ক্যাটাগরি ক্ষেত্রে 2 বছর । প্রশ্ন উঠছে, গুরুত্বপূর্ণ কোনটা বা কোনটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটা কে খতিয়ে দেখবেন ?

kolkata municipal corporation fire audit controversy
কলকাতা পৌরনিগমের নথি

প্রসঙ্গত, 2013 সারদাকে লাইসেন্স দিয়েছিল কলকাতা পৌরনিগম । তা 8-9 বছর পুরনো । রোজভ্যালি-সহ একাধিক ভুয়ো সংস্থার তদন্তে এই নথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এমন অনেক নথি যা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ।

তবে পৌরনিগমের কোনও কর্তা এবিষয় প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি । একাংশের আধিকারিকরা বলছেন, এটা করা মানে নথি ধ্বংস । ক্যাটাগরি অনুসারে সব নথি এখন ভাগ সম্ভব নয় । তাই মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মাত্র পাঁচ বছর পুরনো নথি রেখে বাকি সব নষ্ট করে দেওয়া হয় ।

তাঁদের প্রশ্ন, বেআইনিভাবে কেন নথি নষ্ট করা হবে ? বহু আরটিআই কেস হতে পারে । পুলিশ কেস থাকতে পারে । এছাড়াও অন্য কোন কাজে সেই নথি লাগতে পারে । নথি সংরক্ষণ একটা প্রয়োজনীয় বিষয় ।

তবে এত জটিল করে বিষয়টি দেখছে না পৌর কর্তৃপক্ষ । তাঁদের দাবি, বিপুল পরিমাণ নথি ঘরের পর ঘর জুড়ে । এদিকে জায়গার অভাব। আবার আগুন লাগলে বিধ্বংসী হতে পারে । তাই এমন পরিকল্পনা। তবে কর্তৃপক্ষের যুক্তির পাল্টা আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, যে সমস্ত নথি ডিজিটাল রেকর্ড তোলা হচ্ছে সেগুলোই নষ্ট করা যায় কি না দেখতে হবে । আবার যেগুলো বহু পুরোনো সেগুলো তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডিজিটাল রেকর্ড করুক । তবে যাই করুক এত বিপুল নথি ডিজিটাল করতে কয়েক বছর কেটে যাবে । তাই আসল গুলি সংরক্ষণে বিকল্প ভাবুক ।

আরও পড়ুন : KMC Expenditure : খরচে রাশ টানতে কমিটি গড়ল কলকাতা পৌরনিগম, মেয়র পারিষদরা পাবেন ট্যাবের টাকা

কলকাতা, 11 এপ্রিল : ফায়ার অডিট করতে চাইছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ৷ তাই পৌরনিগমের বিভিন্ন বিভাগে থাকা নথিগুলিকে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ কলকাতা পৌরনিগমের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের তরফে এক নির্দেশিকার মাধ্যমে একথা জানানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু সঙ্গে একটি মৌখিক নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷ সেখানে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত ক্ষেত্রে নথি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা সম্ভব হচ্ছে না, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে সেগুলি নষ্ট করে ফেলতে হবে ৷

আর এই নির্দেশ নিয়েই তোলপাড় পৌরমহল । আধিকারিকদের অনেকেই এই নির্দেশ মানতে নারাজ । পৌরনিগমের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ফায়ার অডিটকে ঢাল করেই কি বিভিন্ন বিভাগের নথি নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation Fire Audit Controversy) ?

বর্তমানে একে একে নানা বিষয়ে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়ছে বা নানা ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়ছে, তখন এই নির্দেশ নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । তাঁদের কথায়, যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হলে বহু এমন নথির হদিস মিলবে না, যেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।

kolkata municipal corporation fire audit controversy
কলকাতা পৌরনিগমের নথি

যেমন উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে, 2013 সালে 435 ডায়মন্ড হারবার রোড ঠিকানার একটি ঘরে কলকাতা পৌরনিগম সারদা চিটফান্ড সংস্থাকে একই ঠিকানায় 16টি লাইসেন্স দেয় । এছাড়াও বহু এমন ঘটনা যার সঙ্গে এই সমস্ত নথি থাকা গুরুত্বপূর্ণ । আবার কেউ কোনও বিষয় আরটিআই করলে, তিনি কোনও তথ্য পাবেন না ।

পাশাপাশি বহু পুলিশ কেস বা মামলা সংক্রান্ত নথি লাগতেই পারে, প্রয়োজন সেক্ষেত্রে নথি মিলবে কী করে ? ত্রিফলা অনিয়ম থেকে শুরু করে আরও নানা ধরনের অনিয়মের যে অভিযোগগুলি উঠেছিল, সেই সংক্রান্ত নথিগুলি কী হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ এছাড়া একাধিক ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে । আর সেই আবহে এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন ।

কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, লাইসেন্স, কর মূল্যায়ন, বাজার, বস্তির মতো একাধিক একাধিক বিভাগকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যত নথি আছে সব এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে । সেটা করা না-গেলে নথিগুলো নষ্ট করে দিতে হবে । নিয়ম বলছে, গ্রেট এ ক্যাটাগরিতে থাকা নথি চিরকাল (60 বছর) সংরক্ষণ করে রাখতে হয় । বি ক্যাটাগরির নথি 20 বছর পর্যন্ত । সি ক্যাটাগরি ক্ষেত্রে 2 বছর । প্রশ্ন উঠছে, গুরুত্বপূর্ণ কোনটা বা কোনটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটা কে খতিয়ে দেখবেন ?

kolkata municipal corporation fire audit controversy
কলকাতা পৌরনিগমের নথি

প্রসঙ্গত, 2013 সারদাকে লাইসেন্স দিয়েছিল কলকাতা পৌরনিগম । তা 8-9 বছর পুরনো । রোজভ্যালি-সহ একাধিক ভুয়ো সংস্থার তদন্তে এই নথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এমন অনেক নথি যা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ।

তবে পৌরনিগমের কোনও কর্তা এবিষয় প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি । একাংশের আধিকারিকরা বলছেন, এটা করা মানে নথি ধ্বংস । ক্যাটাগরি অনুসারে সব নথি এখন ভাগ সম্ভব নয় । তাই মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মাত্র পাঁচ বছর পুরনো নথি রেখে বাকি সব নষ্ট করে দেওয়া হয় ।

তাঁদের প্রশ্ন, বেআইনিভাবে কেন নথি নষ্ট করা হবে ? বহু আরটিআই কেস হতে পারে । পুলিশ কেস থাকতে পারে । এছাড়াও অন্য কোন কাজে সেই নথি লাগতে পারে । নথি সংরক্ষণ একটা প্রয়োজনীয় বিষয় ।

তবে এত জটিল করে বিষয়টি দেখছে না পৌর কর্তৃপক্ষ । তাঁদের দাবি, বিপুল পরিমাণ নথি ঘরের পর ঘর জুড়ে । এদিকে জায়গার অভাব। আবার আগুন লাগলে বিধ্বংসী হতে পারে । তাই এমন পরিকল্পনা। তবে কর্তৃপক্ষের যুক্তির পাল্টা আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, যে সমস্ত নথি ডিজিটাল রেকর্ড তোলা হচ্ছে সেগুলোই নষ্ট করা যায় কি না দেখতে হবে । আবার যেগুলো বহু পুরোনো সেগুলো তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডিজিটাল রেকর্ড করুক । তবে যাই করুক এত বিপুল নথি ডিজিটাল করতে কয়েক বছর কেটে যাবে । তাই আসল গুলি সংরক্ষণে বিকল্প ভাবুক ।

আরও পড়ুন : KMC Expenditure : খরচে রাশ টানতে কমিটি গড়ল কলকাতা পৌরনিগম, মেয়র পারিষদরা পাবেন ট্যাবের টাকা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.