কলকাতা, 14 জুলাই : দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কলকাতা ও শহরতলীর সর্বজনীন পুজো কমিটিগুলি ৷ আর তাই করোনা আবহের মধ্যে পুজোর সঙ্গে যুক্ত সকলকে, অর্থাৎ, মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা শিল্পী, আলোকসজ্জার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, পুজো কমিটির সদস্য, ভলান্টিয়ার এবং পুরোহিত সহ সকলকে ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পূর্ণ করানোর আশ্বাস দিল কলকাতার সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটিগুলির সংগঠন দুর্গোৎসব ফোরাম ৷ ওই ফোরামের সদস্য় পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনে যাওয়া দর্শণার্থীদের মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে দুর্গোৎসব কমিটিগুলিকে ৷
তবে, ঢাকিদের ভ্যাকসিনেশনের বিষয়টি দুর্গোৎসব ফোরামকে ভাবাচ্ছে ৷ কারণ তাঁরা পুজো শুরুর দুই থেকে তিনদিন আগে রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহের আসেন ৷ এ নিয়ে ফোরামে সদস্য তথা দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় পুজো শিবমন্দির দুর্গাপুজো কমিটির সদস্য পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের সদস্য থেকে শুরু করে, মণ্ডপ শিল্পী, পুরোহিত, আলোকশিল্পী সবাই আগামী 3 মাসের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন ৷’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা আশা করছি সবাই এই তিন মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনের দু’টো ডোজ পেয়ে যাবেন ৷ কিন্তু, ঢাকিরা পুজোর দুই থেকে তিনদিন আগে গ্রাম থেকে আসেন ৷ আমরা এটা নিশ্চিক করব, যাতে তাঁদের ভ্যাকসিনের অন্তত একটা ডোজ দেওয়া যায় ৷’’
দুর্গোৎসব ফোরাম কলকাতা ও শহরতলীর মোট 550টি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কিমিটিকে নিয়ে তৈরি একটি সংগঠন ৷ যে সংগঠনের নির্দেশিকা পালন করে পুজো কমিটিগুলি তাঁদের পুজোর সব আয়োজন করে ৷ আর এই দুর্গোৎসব ফোরাম একটি নির্দেশিকা জারি করেছে ৷ যেখানে করোনা পরিস্থিতিতে কোন কোন সুরক্ষাবিধি মেনে উৎসবের আয়োজন করতে হবে, তা উল্লেখ করতে হবে ৷ সেই নির্দেশিকায় পুজো কমিটিগুলির উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, মণ্ডপ এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে দর্শণার্থীরা দূর থেকে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন ৷ কাছে যাওয়ার প্রয়োজন না হয় ৷ এমনকি পুষ্পাঞ্জলি এবং কাটা ফল প্রসাদ হিসেবে দেওয়া যাবে না ৷ আর প্রত্যেকটি আচার-অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৷
আরও পড়ুন : করোনার তৃতীয় ঢেউ দুশ্চিন্তায় ফেলেছে চন্দননগর কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পীদের
এই নির্দেশিকা দুর্গোৎসব ফোরামের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করা হবে ৷ গত বছর করোনা আবহে দুর্গোৎসব পালনের ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট একই রকম নির্দেশিকা জারি করেছিল ৷ যেখানে দর্শণার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল ৷ দুর্গোৎসব ফোরামের সদস্য পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো কমিটিগুলি আশা করছে করোনার তৃতীয় ঢেউ এর সতর্কতা থাকায়, গতবারের মতো এবারেও মণ্ডপগুলিতে ভীড় হবে না ৷ তবে, তিনি এও জানিয়েছেন, ভীড় টানে এমন দুর্গাপুজো কমিটিগুলি এবার একটু চিন্তায় পড়েছে ৷ কারণ নন্দনিকতা বজায় রেখে এমনভাবে মণ্ডপ তৈরি করতে হবে যাতে দূর থেকে দর্শণার্থীরা প্রতিমা দর্শন করতে পারেন ৷ দুইয়ের সমন্বয় রেখে মণ্ডপ তৈরি করাটাই এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তাদের কাছে ৷ পাশাপাশি সংক্রমণের আশঙ্কায় এ-বছর কলকাতার বড় পুজো কমিটিগুলি ডিজিটাল পরিবেশনায় মনোনিবেশ করছে ৷ যেখানে মানুষজন বাড়ি থেকে বসে নিরাপদে প্রতিমা এবং মণ্ডপের শিল্পকলাগুলি প্রত্যক্ষ করতে পারবে ৷