কলকাতা, 14 অক্টোবর: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বউবাজার এলাকার মদন দত্ত লেনে কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে ৷ প্রায় 14টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে খবর ৷ মেট্রোর সুড়ঙ্গের কাজের জন্য বউবাজারে ফের ফাটল দেখা দেওয়ায় শুক্রবার ভোর থেকে ফের আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় (Bowbazar Metro Crisis) ৷ মেট্রোর কাজের জন্য এই নিয়ে তিন বার এই ধরণের বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল বউবাজারে ৷ বিষয়টি নিয়ে এদিন সাফাই দিল এই মেট্রো প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিঅএল (KMRCL)।
এলাকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয়রা, সকলের অভিযোগ কেএমআরসিএল-এর বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, এরআগে বিপত্তি ঘটে যাওয়ার পর কেএমআরসিএল-এর পক্ষ থেকে তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল, যে গ্রাউটিংয়ের কাজ করা হয়েছে তাতে আর কোনও সমস্যা হবে না । কিন্তু তার পরেও আজকের এই ঘটনা ঘটে গেল । তবে কেন এই বিপত্তি ঘটলো আবার ? কেএমআরসিএল এই নিয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়েছে (KMRCL speaks on Bowbazar Metro Crisis) ৷
আরও পড়ুন: 15 দিনে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস, মেট্রোর আধিকারিকদের ঘিরে বউবাজারে বিক্ষোভ স্থানীয়দের
বর্তমানে এই অংশের কাজ চলছে প্রজেক্ট ডিরেক্টর এনসি কার্মালির তত্ত্বাবধানে । তিনি শুক্রবার জানান, মাটির নীচের জলস্তরই মাটির উপরের ফাটলের জন্য দায়ী । আপাতত দশটি বাড়ি খালি করা হয়েছে । 136 জনকে সরিয়ে আশে পাশের পাঁচটি হোটেলে রাখা হয়েছে । প্রাথমিক পরীক্ষায় 35টি বাড়ি বিপজ্জনক বলে চিন্হিত হয়েছে । শনিবার থেকে সেগুলি খালি করার কাজ শুরু হবে । কাজের জন্য এলাকা খালি করতে হবে বলেও কেএমআরসিএল-পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
তবে নতুন করে এই বিপর্যয়ের পর যে ওই অংশের মেট্রোর কাজ আবারও একটা বড়সড় ধাক্কা খেল তা শিকার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ (Bowbazar Metro Disaster) । তবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বা কত দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আবার কাজ শুরু করা যাবে সেই বিষয় আপাতত কোনও উত্তর নেই কেএমআরসিএল-এর কাছে । সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিত্তরঞ্জন জানিয়েছেন, যে জল বের হচ্ছে তা গ্রাউটিং-এর সাহায্যে বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ অনেকটাই বন্ধ করা গিয়েছে ৷ তবে মেট্রোর বাকি অংশের কাজ যেমন চলছিল তেমনই চলবে । তবে সুরঙ্গের ভিতরে যে ক্রস প্যাসেজগুলি তৈরি করা হয়েছে সেই অংশের কাজ যথেষ্ট জটিল তাই সমস্ত সতর্কতা মেনেই ওই অংশগুলির কাজ শেষ করতে হবে ।
আরও পড়ুন: আর কতদিন মানুষকে আতঙ্কে কাটাতে হবে ? প্রশ্ন বিধায়ক নয়নার
জানা গিয়েছে, বর্তমানে গ্রাউটিং বিশেষজ্ঞ মিলন মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে গ্রাউটিংয়ের কাজ চলছে । এনসি কর্মালি বলেন, "গ্রুাউটিংয়ের কাজ ঠিকঠাক এগোচ্ছিল । তবে যেহেতু ওই অংশের মাটি বেশ নরম তাই খনন কাজের সময় মাটির ওই স্তর থেকেই আবার জল প্রবেশ করতে শুরু করে ।" শুক্রবার ভোর রাতে বউবাজারের 14টি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয় ৷ প্রথমে ছোট চিড় তারপর তা বাড়তে বাড়তে বড় বড় ফাটলে পরিণত হয় । মে মাসের দুর্ঘটনার পর আবারও এদিন ভোর রাত 3টে থেকে জল প্রবেশ করতে শুরু হয়ে যায় ৷ ফলে উপরের বাড়ি এবং রাস্তায় বড় বড় ফাটল দেখা যায় । শুধু তাই নয় ফাটলগুলি থেকে তীব্র বেগে জলও ঢুকতে থাকে । সেই জলের বেগ কিছুটা ঠেকানো গেলেও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি ।