কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর : কবে জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন শহরবাসী ? আশার কথা শোনাতে পারল না কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ৷ হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, রবিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত লাগাতার বৃষ্টি হবে ৷ এর মধ্যে আগামী মঙ্গলবার এবং বুধবার কলকাতায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ৷ এদিকে, দক্ষিণ কলকাতার নয়াবাদ, পূর্ব যাদবপুর, সার্ভে পার্ক, আনন্দপুর, মুকুন্দপুর-সহ রাজারহাট-নিউটাউনের বিভিন্ন এলাকা এখনও জলমগ্ন ৷ এই পরিস্থিতিতে ফের দুর্যোগের পূর্বাভাসে দুশ্চিন্তায় কলকাতা পৌরনিগমের কর্তাব্যক্তিরা ৷
আরও পড়ুন : Kolkata Police : আসন্ন দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ
পৌর প্রশাসনের আশঙ্কা, আসন্ন দুর্যোগের ফলে ফের জলমগ্ন হয়ে যাবে গোটা শহর ৷ তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার জরুরি বৈঠক করেন মুখ্য পৌর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ৷ এদিন তিনি জানান, শহর লাগোয়া খালগুলির সংস্কার না করা হলে জল-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে না ৷ ভোগান্তির শিকার হতে হবে সাধারণ মানুষকে ৷ কারণ, খাল পরিষ্কার করা হবে শীতকালে ৷ তাই তার আগে পর্যন্ত যদি বৃষ্টির এমনই দাপট থাকে, তাহলে তার কবল থেকে মুক্তির কোনও উপায় নেই ৷
এর পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শহরের পুরনো বাড়িগুলির দিকে বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে ৷ লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরে শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে কলকাতা পৌরনিগমের স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হবে বাসিন্দাদের আশ্রয়ের জন্য ৷ সেখানে অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হবে ৷ সেই শিবিরের জন্য ইতিমধ্যেই শুকনো খাবার মজুত করে রাখা হয়েছে ৷ কলকাতা শহরে প্রায় তিন হাজার বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে ৷ আর 100টি এমন বাড়ি রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত বেশি বিপজ্জনক ৷ ফিরহাদ জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানানো হবে, তাঁরা যেন বিপজ্জনক বাড়ি ছেড়ে কলকাতা পৌরনিগমের অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেন ৷
এদিন পৌরনিগমের স্পেশাল কমিশনার তাপস চৌধুরীর নেতৃত্বে আসন্ন বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় পৌর ভবনে ৷ এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দুর্যোগে কোথাও গাছ ভেঙে পড়লে বা উপড়ে গেলে, তা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে ৷ জলমগ্ন এলাকা থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জল নামানোর ব্যবস্থা করতে হবে ৷ এই বিষয়ে কলকাতার 76টি পাম্পিং স্টেশনকে আগেই সতর্ক করা হয়েছে ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তিন হাজার অতিরিক্ত পাম্প ভাড়া করা হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি, শহরে নিচু এলাকাগুলিতে, যেখানে জল জমার প্রবণতা বেশি, সেইসব এলাকায় ভ্রাম্যমান গাড়িতে অতিরিক্ত পাম্প ব্যবহার করা হবে ৷
আরও পড়ুন : Weather Forecast : রবিবার থেকে তিনদিন ভারী বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় হলুদ সতর্কতা
আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য কলকাতা পৌরনিগমের নিজস্ব চিকিৎসকদের দল প্রস্তুত থাকবে ৷ সেইসঙ্গে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, কলকাতা পুলিশ ও সিইএসসির সঙ্গে সর্বক্ষণ সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে ৷ কোথাও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে দ্রুত তা মেরামত করা হবে ৷ সর্বোপরি, এই দুর্যোগের সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য পৌর প্রশাসক ৷
সেইসঙ্গে, কলকাতা পৌরনিগমের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদেরও সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ ৷ রবিবার থেকে কলকাতা পৌরনিগমের সদর দফতরে একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হচ্ছে ৷ কোনও নাগরিক সমস্যায় পড়লে কন্ট্রোল রুমে ফোন (033 22861212) করে সাহায্য নিতে পারবেন ৷