কলকাতা, 11 অগস্ট : কলকাতা শহরের জনসংখ্যা সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণের মাত্রা । প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে তিলোত্তমা । তা প্রতিরোধ করতে নতুন করে তৎপর হয়েছে কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) । পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎচালিত বাস ও সিএনজি চালিত বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে তৎপর হয়েছেন । পৌরনিগমের তরফে নিয়মিত বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে । তবে শুধু বৃক্ষরোপণের উপরই ভরসা না রেখে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবহণ দফতর এবং পৌরনিগম ৷ সেই তালিকাতেই রয়েছে পরিবেশবিদ নিয়োগের পরিকল্পানাও ৷
কলকাতা পৌরনিগমের পরিবেশ বিভাগ, উদ্যান বিভাগ, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট একত্রে পদক্ষেপ করছে । কী কী কারণে শহরের দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবার থেকে তার একটি রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতে হবে মুখ্য প্রশাসকের কাছে । সেই সঙ্গে কলকাতা পৌরনিগমের যে বিভিন্ন গাড়িগুলি চলে তার থেকে কতটা দূষণ হচ্ছে তারও একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ ৷ সেই সঙ্গেই একজন অভিজ্ঞ পরিবেশবিদ নিয়োগ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে । পরিবেশবিদের পরামর্শ অনুযায়ী আগামীতে কেএমসি দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করবে । শহরে কোথায় আরও বেশি করে গাছ লাগাতে হবে, শহরে জলাভূমিগুলি কীভাবে সংরক্ষণ করা উচিৎ- সেই পরামর্শ দেবেন পরিবেশবিদ ।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় দূষণের মাত্রা বিভিন্ন রকম । মূলত বাজার ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে দূষণের মাত্রা বেশি । ধর্মতলা, শিয়ালদা, বালিগঞ্জ, বড়বাজার, বালিগঞ্জ, চেতলা এলাকায় দূষণের মাত্রা বেশি । এলাকা ভিত্তিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়েছে পৌরনিগম ।
কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, দেশের প্রথম সারির শহরগুলির মধ্যে কলকাতায় দূষণের মাত্রা সবথেকে কম । রাজধানী দিল্লি ও বাণিজ্যনগরি মুম্বইয়ে দূষণের মাত্রা সবথেকে বেশি । দেশের প্রথম সারির শহরগুলিতে বাড়তে থাকা দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সুপ্রিম কোর্ট ন্যাশানাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (National Green Tribunal Act) নির্দেশ দেয় । শহরে বাতাসে ধূলিকণা কমাতে নিয়মিত রাস্তা ধোওয়া হয় । শহরের গাছগুলিতে নিয়মিত জল দেওয়া হয় । যেখানে নির্মাণ কাজ চলছে সেখানেই ত্রিপল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে ।
পরিবেশবিদ সৌমেন ঘোষ জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর থেকে শহরে বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায় । ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সেই মাত্রা বেশিই থাকে । কলকাতা পৌরনিগম শহরে বায়ুদূষণ কমাতে ক্যানন মিস্ট মেশিন কিনেছিল কিন্তু সেই মেশিনগুলি এখন কাজ করছে না । জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে । বৃক্ষরোপণ আরও বেশি হওয়া উচিত ৷ যেখানে সেখানে ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকে ৷ সেগুলি ঠিকভাবে ঢাকা দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে ৷ না হলে সেগুলি থেকেও বায়ুতে অবাঞ্ছিত ধূলিকণা মিশবে ৷ পাশাপাশি বিদ্যুৎচালিত ও গ্যাসচালিত যানবাহনের সংখ্যা শহরে বাড়াতে হবে । শহরে কয়লার উনুনে রান্না হয় ৷ তাও দ্রুত বন্ধ না করতে পারলে শহরে দূষণের মাত্রা কমবে না ।
আরও পড়ুন : অরণ্য সপ্তাহ পালনে কলকাতা শহরে ৭০ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা