কলকাতা, 18 অগস্ট : ঠিক যেন সিনেমার চিত্রনাট্য ! বিপথগামী হয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে অংশ নেওয়া ৷ সেই জঙ্গি কার্যকলাপের মাঝেই প্রেম ৷ প্রেমের পরণতি থেকে সন্তানের আগমন ৷ শেষে মূলস্রোতে ফিরতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ ৷
বৃহস্পতিবার এই চিত্রনাট্যের বাস্তবরূপ দেখতে পাওয়া গেল ভবানীভবনে ৷ রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে যখন আত্মসমর্পণ করলেন দুই কেএলও জঙ্গি কৈলাস কোচ (Kailash Koch) ও তাঁর স্ত্রী যুগলী কোচ ৷ ডিজি মনোজ মালব্য যখন তাঁদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে নিলেন, তখন যুগলীর কোলে হাসছেন ছোট্ট শিশুটিও ৷
কথায় কথায় সামনে এল তাঁদের প্রেম কাহিনি ৷ যুগলী ওরফে স্বপ্না বর্মন লেখাপড়ায় মেধাবী ছিলেন ৷ কিন্তু আর্থিক অনটনে মাঝপথেই স্কুল ছাড়তে হয় ৷ তার পর তিনি যোগদেন কেএলও-তে ৷ সংগঠনের কাজ করতে করতেই নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা করেন ৷ তার পর সহযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সাহায্য করাই ছিল তাঁর কাজ ৷
এভাবেই আহত কৈলাসের সঙ্গে পরিচয় যুগলীর ৷ চিকিৎসা করতে করতেই প্রেমের শুরু ৷ তার পর এগোতে থাকে সম্পর্ক ৷ কিন্তু সেই সম্পর্কে হঠাৎই পাঁচিল তুলে দেয় অসম রাইফেলস ৷ 2013 সালে তারা গ্রেফতার করে যুগলীকে ৷ মণিপুরের একটি ক্যাম্পে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল ৷
সিনেমায় যেমন হয়, ঠিক তেমন ভাবেই 2014 সালে ওই ক্যাম্প থেকে যুগলীকে অপহরণ করে জঙ্গিরা ৷ যে অপারেশেনর নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং কৈলাস ৷ কারণ, প্রেয়সীকে ফিরে পেতেই পুরো অপারেশনের ছক কষেছিলেন তিনি ৷ ওই বছরের মে মাসেই তাঁরা বিয়ে করেন ৷ তার পর থেকে তাঁরা একসঙ্গেই ছিলেন ৷ কিন্তু সেই কারণে তাঁদের কখনও বাংলাদেশে, কখনও নেপালে, কখনও মায়ানমারে আত্মগোপন করে থেকেছেন তাঁরা ৷
বৃহস্পতিবার তাঁদের সেই আত্মগোপনের পর্ব শেষ হল ৷ আত্মসমর্পণ করে এবার তাঁরা ফিরলেন মূলস্রোতে (KLO general secretary Kailash Koch surrenders) ৷ এবার তাঁদের জীবনও বদলাবে ৷ ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে যুগলীর কোলে থাকা ওই একরত্তিরও ৷
আরও পড়ুন : আত্মসমর্পণ করলেন কেএলও সম্পাদক কৈলাস কোচ